জহিরুল ইসলাম, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)

  ২৩ জুন, ২০২২

পদ্মা সেতু

খুলবে পর্যটনের নতুন দ্বার

১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রসৈকত সাগরকন্যা কুয়াকাটায় রয়েছে নৈসর্গিক প্রকৃতির সৌন্দর্য। সারি সারি নারিকেল গাছ, ঝাউবন আর হাজার হাজার লাল কাঁকড়া এই সৈকতকে পর্যটকদের কাছে আরো মোহনীয় করে তোলে। এই সৈকতের বিশেষত্ব হলো ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে সৈকতের সাদা বালির তীর থেকে বঙ্গোপসাগরের সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়, যা পৃথিবীতে বিরল। শীত মৌসুমে অসীম সৌন্দর্য ভরা সমুদ্র জলরাশি আর বর্ষা মৌসুমের উত্তাল হাওয়ায় সমুদ্র স্নান করতে ভিড় করে দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক। এতদিন কুয়াকাটায় যেতে পর্যটকদের প্রধান যে প্রতিবন্ধকতা ছিল যোগাযোগ ব্যবস্থা; তারই অবসান হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে। ফলে কুয়াকাটায় পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে কয়েকগুণ- আশা সংশ্লিষ্টদের। এতে কুয়াকাটাকে ঘিরে তৈরি হচ্ছে নতুন সম্ভাবনা।

স্থানীয় পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক সময় সাগরকন্যা কুয়াকাটায় আসতে পর্যটকদের সড়ক পথে ১২টি ফেরি পার হতে হতো। পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে সড়ক পথের এই ভোগান্তির অবসান ঘটতে যাচ্ছে। তারা আশা করছেন, ২৫ জুনের পর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকদের ঢল নামবে। যার মধ্য দিয়ে কুয়াকাটাসহ পুরো জেলার অর্থনীতিতে বিপ্লব ঘটবে।

পদ¥া সেতু চালুর পর ঢাকা থেকে কুয়াকাটা আসতে সময় কমবে তিন থেকে চার ঘণ্টা। থাকবে না ফেরিতে উঠতে যানজটের ভোগান্তি। তখন পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ায় আয়-রোজগার বাড়বে সাগরপাড়ের বোট ব্যবসায়ী, ফটোগ্রাফারসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।

কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কে এম বাচ্চু প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে পর্যটকদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি। আশা করি আগের চেয়ে পর্যটকের সংখ্যা অনেক বাড়বে। সেবার মান বাড়ানোর জন্য আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। ট্যুর গাইডদের বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।’

কুয়াকাটার পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর মাধ্যমে পর্যটন খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে। পিছিয়ে পড়া উপকূলীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক অবস্থা ঘুরে দাঁড়াবে। পর্যটন ব্যবসায়ীরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে।’

মেয়র আরো বলেন, পর্যটকরা যাতে নির্বিঘেœ ভ্রমণ করতে পারেন সেজন্য পৌরসভা থেকে সাগরপাড় পর্যন্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ চলমান।’

এদিকে, আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে ২৫ তারিখ থেকে ১৫ দিনের জন্য সব আবাসিক হোটেলে ৫০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির পক্ষ থেকেও ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ এম এ খায়ের প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘কুয়াকাটা পর্যটন এলাকায় আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি নেই। তারপরও মহিপুর থানা ও কুয়াকাটা টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের যে কোনো আইনি সেবা দানে আমরা সবসমই প্রস্তুত।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close