আল-আমিন মিয়া, পলাশ (নরসিংদী)

  ২২ জুন, ২০২২

এক জোড়া মুরগির দাম ৩০ হাজার টাকা!

আমেরিকার বিখ্যাত ব্রাহমা জাতের মুরগি পালন করে সফলতা পেয়েছেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাশেম মিয়া নামে এক উদ্যোক্তা। বিদেশি এ জাতের মুরগি দেখতে বেশ সুন্দর; সাধারণ মুরগির চেয়ে ওজনও কয়েকগুণ বেশি। প্রাপ্তবয়স্ক একটি মুরগির ওজন হয় ৭ থেকে ৮ কেজি। এক জোড়া ব্রাহমা মুরগি কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।

এই জাতের মুরগি পালন করে কাশেম মিয়া এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আলাপকালে কাশেম মিয়া জানান, ২০১৭ সালে শখের বসে প্রবাসী এক বন্ধুর সহায়তায় ২ লাখ ১৩ হাজার টাকা দিয়ে রোমানিয়া থেকে ৫ জোড়া ব্রাহমা জাতের মুরগি কিনে আনেন তিনি। এরপর মুরগি থেকে ডিম পেয়ে পরিকল্পনা করেন খামারের। ইনকিউবেটর মেশিনে ডিম থেকে বাচ্চা তৈরি করে একে একে বাড়াতে থাকেন মুরগির সংখ্যা। বর্তমানে কাশেম মিয়ার খামারে সাদা ও সোনালি রঙের ৫০ জোড়া ব্রাহমা জাতের মুরগি রয়েছে। গত ৫ বছরে এই খামার থেকে ২০ লাখ টাকার এই মুরগি বিক্রি করেছেন তিনি। এক জোড়া মুরগি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

কাশেম মিয়া আরো বলেন, প্রথম টার্কি মুরগি পালন করতাম। হঠাৎ করে ইউটিউবে এ জাতের মুরগি দেখে শখ জাগে এটি পালনে। প্রথম প্রথম ভাবতাম বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এই মুরগি পালন করা সম্ভব হবে কি না। পরে দেখি সাধারণ মুরগির মতোই এগুলো পালন করা যায়। ৬ মাসেই এ জাতের মুরগির পরিপূর্ণ ওজন হয়। ইন্টারনেটে এসব মুরগির ছবি ছেড়ে বিক্রি করি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শৌখিন মানুষ এ জাতের মুরগি কিনে নিয়ে যায়। এই মুরগির মাংস ও ডিমের চাহিদা অনেক। এক জোড়া মুরগি (আকারভেদে) ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়। এছাড়া এক জোড়া ডিম বিক্রি হয় ১ হাজার ২০০ টাকায়।

এদিকে দৃষ্টিনন্দন এসব মুরগি দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসছেন কাশেম মিয়ার খামারে। খামার থেকে পরামর্শ নিয়ে এ জাতের মুরগি পালনে আগ্রহ প্রকাশ করছেন অনেক তরুণ উদ্যোক্তা। এ মুরগি সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, ১৮৫২ সালে আমেরিকার অন্যতম রাজনীতিবিদ জর্জ বুরহাম ইংল্যান্ডের রানি ভিক্টোরিয়াকে ৯টি ব্রাহমা জাতের মুরগি উপহার দেন। সৌন্দর্যের কারণে বাংলাদেশেও অনেক স্থানে শৌখিনভাবে এই মুরগি পালন করে আসছে।

পলাশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো শফিকুল আলম জানান, আমেরিকার বিখ্যাত ব্রাহমা জাতের মুরগি বাংলাদেশের আবহাওয়ায় পালন করা সম্ভব। সাধারণ মুরগির মতোই এটি পালন করা যায়। খামারি কাশেম মিয়াকে উন্নত জাতের এই মুরগি বাণিজ্যিকভাবে পালনে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close