নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ জুন, ২০২২

‘জলাবদ্ধতা নিরসন ও ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুতি আছে’

ঢাকা ও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে এবং ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সরকারের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এ ছাড়া যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করার সামর্থ্য সরকারের আছে বলেও জানান মন্ত্রী।

গতকাল রবিবার স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে গৃহীত কার্যক্রমের পর্যালোচনা এবং ডেঙ্গু ও মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে তৃতীয় আন্তমন্ত্রণালয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রাম দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি শহর। তাই এই দুই মহানগরীর সমস্যা সমাধানে বিশেষ নজর দিয়ে কাজ করা হয়। জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অধীন খালগুলো খনন/পুনঃখনন করা হয়েছে। অনেক খাল দখল হয়েছিল, সেগুলো সিটি করপোরেশনের মেয়ররা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দখলমুক্ত করে পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার উপযোগী করেছেন। যার সুফল নগরবাসী পেতে শুরু করেছে। আগের তুলনায় এখন জলাবদ্ধতা অনেক কমেছে।

এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ওয়াসা থেকে পাওয়া খালের পাশাপাশি দুই সিটি করপোরেশন অনেকগুলো খাল দখলমুক্ত করেছে। বড় বড় ভবন, মার্কেট, বাস-ট্রাকস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন সাড়ে ছয় একর এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন প্রায় পঁচিশ একর জমি উদ্ধার করেছে। অবৈধ দখল অভিযান এখনো চলমান।

তিনি আরো বলেন, ‘উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন ওয়ার্ড ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা ও অবকাঠামো উন্নয়নে এরই মধ্যে চার হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে প্রকল্প পাস করা হয়েছে এবং কাজ চলমান রয়েছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনও নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। আমি আশা করি সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।’

ডেঙ্গু নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ডেঙ্গুর বিষয়ে বছরের প্রথম থেকেই কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। এবারও সেটি করা হয়েছে। আমাদের সব প্রস্তুতি উভয় মেয়র নিয়ে রেখেছেন। যেসব কীটনাশক, ওষুধ, যন্ত্রপাতি এবং জনবল দরকার তা তাদের কাছে মজুদ আছে।’

বিশ্বে বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্তদের তথ্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘সিঙ্গাপুরে ১১ হাজার ৬৭৪, মালয়েশিয়ায় ১৩ হাজার ৬৫১, ইন্দোনেশিয়ায় ২২ হাজার ৩৩১, থাইল্যান্ডে ১ হাজার ৫৮৪, ফিলিপাইনে ৩৬ হাজার ৯৩৮, ভারতে ৮ হাজার ২৭৮ আর আমাদের দেশে আছে ৭৩০ জন। সার্বিক পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে আমরা এসব দেশ থেকে অনেক ভালো অবস্থানে আছি। তবে এর মানে এই না যে, আমরা বসে থাকব। আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া আছে। মানুষকে সচেতন করতে মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো হচ্ছে।’

সিলেট-সুনামগঞ্জে ভয়াবহ বন্যা সম্পর্কে মো. তাজুল ইসলাম জানান, বন্যা এত ভয়ংকর রূপ নেবে এটা সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থা পূর্বাভাস দিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বন্যাদুর্গত এলাকায় মানুষের কাছে খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ অন্যান্য জরুরি সেবা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ ছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা দুই সিটি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বিভাগ ও সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close