চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
কমিটি নিয়ে বাণিজ্য
চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপির ৬০ নেতার পদত্যাগ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি, তিন উপজেলা ও এক পৌর কমিটি থেকে ৬০ নেতা পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার জেলা শহরের একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে এই পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ তৃণমূল বিএনপির নেতাদের ব্যানারে আয়োজিত সাংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন জেলা বিএনপির সদস্য ও নাচোল উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলেন, দলের শীর্ষ পদের নেতারা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছেন। একইভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, নাচোল, ভোলাহাট উপজেলা এবং নাচোল পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এনামুল হক অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যাদের ন্যূনতম সম্পর্ক নেই। বিগত ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের বিরুদ্ধে জামায়াত ও আওয়ামী লীগের সভামঞ্চে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। সদ্য গঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সদর আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থীর হয়ে নৌকার প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন।
তিনি আরো বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ম মেনে জেলার আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়নি। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া গোমস্তাপুর উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে অর্থ লেনদেন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব অন্য উপজেলার যেসব কমিটি গঠন করেছেন সেসবও অর্থের বিনিময়ে করেছেন। জেলা বিএনপির কমিটি গঠনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহীন শওকতের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ করা হয়েছে।
শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ এনে বিভিন্ন কমিটির ৬০ নেতা পদত্যাগ করেছেন। জেলা, উপজেলা পর্যায়ের আহ্বায়ক কমিটি বাতিল দাবি করে পুনর্গঠনের দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগ করা নেতা ও তাদের সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম জাকারিয়া বলেন, ‘৬০ জন পদত্যাগের বিষয়টি সঠিক নয়। ৫-৬ জন হতে পারে। যারা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তারা একটি পক্ষের অনুসারী। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি যাচাই-বাছাই করে আমাদের কমিটি অনুমোদন করেছেন। তবে আমাদের বিতর্কিত করতে তারা নানা অভিযোগ করছেন। বিএনপি একটি বড় দল নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব থাকবে, এ নিয়ে বিচলিত নয়।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘টাকা নিয়ে কমিটি দেওয়ার অভিযোগ সত্য নয়। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ দলের দায়িত্বশীল নেতারা খোঁজ নিয়েছেন, যাদের দিয়ে দল চলবে তাদের নিয়ে কমিটি দিয়েছেন। এ কমিটিকে অস্বীকার করা মানে বিএনপিকে অস্বীকার করা। যারা পদত্যাগ করেছেন তারা ব্যক্তিপূজারী, হয় এমপি হারুন অথবা আমিনুলের লোক। যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিতে উৎসাহ দিচ্ছেন তাদের ব্যাপারেও কেন্দ্রে রিপোর্ট হচ্ছে। দল অবশ্যই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।’
"