খুলনা ব্যুরো

  ২৫ মে, ২০২২

খুলনায় কচু চাষে সম্ভাবনা

১৮০ হেক্টর জমিতে আবাদ

খুলনা অঞ্চলে কচু চাষে সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। প্রতি বছরই বাড়ছে কচু চাষ। এ অঞ্চলে এ বছর ১৮০ হেক্টর জমিতে পানি কচুর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনা, বাগেরহাট ও নড়াইল জেলায় সবজির চাষাবাদ বেড়েছে। বিশেষ করে খুলনার ডুমুরিয়া থেকে কচুর লতি বিদেশেও রপ্তানি হয়। চলতি মৌসুমে গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-সাতক্ষীরা-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প-এসআরডিআইয়ের জিকেবিএসপি প্রকল্প কচু চাষে কৃষকদের সহায়তা করছে।

পানি কচু সবজি হিসেবে বেশ জনপ্রিয় সবজি। স্বল্প পানিতে এর চাষ করা যায়। খরচও কম। কচুর কান্ড ও লতি সবজি এবং ভেষজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কচুতে রয়েছে প্রচুর ঔষধি গুণাগুণ। এর চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হওয়া যায়। পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে কচু।

কৃষি বিভাগের সূত্র জানান, স্থানভেদে নারকেলি কচু, লতিরাজ, শোলা কচু, জাত কচু, লতি কচু, বারি পানি কচু ও বাঁশা কচু নাম রয়েছে। তবে কান্ড অপেক্ষা লতির প্রাধান্য বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি রোপণ করা হয়। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চাষ হয়ে থাকে। প্রতি হেক্টরে ২০-৩০ টন লতি উৎপাদন হয়ে থাকে। সব ধরনের মাটিতে চাষ করা যায়। তবে পলি, দোঁআশ ও এঁটেল মাটি চাষের জন্য ভালো। এর ডগা ও লতি সবুজ রঙের হয়। তবে আবার লালচে রঙের হয়। গাছের উচ্চতা হচ্ছে ১০-১৫ ফুট। প্রতিনিয়ত আগাছা দমন ও পরিচর্যা করা হয়। চাষ ও সার প্রয়োগ করতে হয়। পোকামাকড় আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। ছোট ছোট গাছ থেকে লতি সংগ্রহ করলে গাছের ক্ষতি হয়ে থাকে।

এসআরডিআইয়ের সূত্র জানান, খুলনাঞ্চলে ১৮০ হেক্টর জমিতে পানি কচুর আবাদ করা হয়েছে। খুলনার উৎপাদিত কচু ও লতি দেশের বিভিন্ন হাট বাজারে পাঠানো হয়। প্রতি কেজি লতি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। এক দিন পর পর খেত থেকে ৪০-৫০ কেজি লতি সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। নর্থ বেঙ্গল ও দেশি জাতের কচু চাষ করা হয়েছে। আর প্রতিটি কচু বিক্রি হচ্ছে ২০-২৫ টাকা। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও পাঠানো হয় কচু।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের সূত্র জানান, চলতি মৌসুমে খুলনা অঞ্চলে ১৮০ হেক্টর জমিতে পানি কচুর চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় ৪৭ হেক্টর, বাগেরহাটে ১৩ হেক্টর ও নড়াইলে ১২০ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়েছে।

স্থানীয় কচু চাষি রবিউল শেখ ও রাশেল শেখ বলেন, কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প এসআরডিআইয়ের জিকেবিএসপি প্রকল্প থেকে সঠিক বিনামূল্যে বীজ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। তাদের সঠিক পরমর্শ কাজে লাগাতে পেরে আজ কচু চাষে সফলতা আসেছে। তার ২ লাখ করে ৪ লাখ টাকা বিক্রির স্বপ্ন দেখছেন। প্রকল্প কর্মকর্তা অমেরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, এ প্রকল্পের আওতায় শুধু কচু নয় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হচ্ছে। কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়ায় আজ তারা সফল কৃষক। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। তিনি কচুর পাশাপাশি অন্যান্য সবজি চাষের জন্য কৃষকদের আহ্বান জানান।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close