প্রতিদিনের সংবাদ ডেস্ক
ব্রিটেন
‘ফিশ অ্যান্ড চিপস’ অস্তিত্ব সংকটে
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব ব্রিটেনের ‘ফিশ অ্যান্ড চিপস’-এর ব্যবসায়ও পড়েছে। এসব রান্নার জন্য যে মূল উপকরণ রয়েছে তার দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের মাথায় রীতিমতো হাত পড়ার অবস্থা হয়েছে। এসব ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দোকানিরা জানিয়েছেন, কড মাছ আর রান্নার তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তাদের এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে। যে কারণে অনেকেই এখন এই ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিশ ফ্রাইয়ার্সের সভাপতি অ্যান্ড্রূ ক্রুকের আশঙ্কা, সে দেশের কমবেশি ১০ হাজার ফিশ অ্যান্ড চিপস রেস্তোরাঁর এক-তৃতীয়াংশ আগামী ৯ মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, তার জীবদ্দশায় এ ব্যবসায় এত বড় সংকট তিনি আর দেখেননি। এই বণিক সমিতি ব্রিটেনের ১ হাজার ২০০ ফিশ অ্যান্ড চিপস রেস্তোরাঁর প্রতিনিধিত্ব করছে। এ সংগঠনের বয়সও ১০০ বছরের বেশি। ক্রুক নিজেও ফিশ অ্যান্ড চিপস দোকানের মালিক। তিনি জানান, গত বছরের শেষভাগে এসব পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। তবে অপরিহার্য উপকরণগুলোর দাম এক লাফে বেড়ে যায় ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরুর পর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে।
ইউক্রেনে যুদ্ধ আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপ করা অবরোধের জেরে পণ্যে মূল্যের ঊর্ধ্বগতি আর সরবরাহ সংকটে অনেক শিল্প খাতের ব্যবসায়ীদেরই ভুগতে হচ্ছে। তবে ব্রিটেনের ফিশ অ্যান্ড চিপসের দোকানগুলো রীতিমত অস্তিত্ব সংকটে পড়ে গেছে, কারণ তারা খুব কম লাভে ব্যবসা করে। আর তাদের ব্যবসা রাশিয়া থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর নির্ভরশীল।
অ্যান্ড্রু ক্রুক বলেন, তাদের ব্যবসা খাতে চাহিদার ৪০ শতাংশ কড ও হ্যাডক মাছ রাশিয়ার জলসীমা থেকে আসে। আর সূর্যমুখী তেলের মোট চাহিদার অর্ধেক পূরণ হয় ইউক্রেনের রপ্তানি থেকে। তেলের জন্য এখন তাদের মার্চের শুরুর তুলনায় ৮৩ শতাংশ বেশি দাম দিতে হচ্ছে। সূর্যমুখীর বিকল্প হিসেবে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় পাম তেল, কিন্তু সে তেলের দামও বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে, কারণ বিশ্বের শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশ ইন্দোনেশিয়া অভ্যন্তরীণ বাজার ঠিক রাখতে পাম তেল রপ্তানিতে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে।
ফিশ অ্যান্ড চিপসকে বলা হয় ইংরেজদের অনানুষ্ঠানিক জাতীয় খাবার। ক্রুক জানান, ১৮৬০-এর দশকে সে দেশে প্রথম ফিশ অ্যান্ড চিপসের দোকান চালু হয় এবং দ্রুত দেশজুড়ে তা ছড়িয়ে পরে। বিশেষ করে শিল্পায়নের ব্যাপক বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে কারখানা শ্রমিকদের খাবার হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই ডিশ।
"