নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ মে, ২০২২

পরিবর্তন হচ্ছে না পদ্মা সেতুর নাম

জুন শেষে উদ্বোধন

বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শেষে উদ্বোধনের জন্য এখন প্রায় প্রস্তুত। কবে এই সেতু উদ্বোধন হবে- তা নিয়ে নানা জল্পনার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর জানানো হয়েছে, কয়েক দিনের মধ্যেই উদ্বোধনের তারিখ ঠিক করে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে জুন মাসের শেষের দিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি জানান, জুনের শেষ সপ্তাহের আগেই সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। এর নাম পদ্মা সেতুই থাকবে, এটা প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন।

গত বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নিজেই পরিষ্কার করবেন আগামী পাঁচণ্ডছয় দিনের মধ্যে। পদ্মা সেতু জুন মাসের শেষে উদ্বোধন হচ্ছে, এটা তিনি বলেই দিয়েছেন। আমরাও রেডি আছি। আশা করি শেষ সপ্তাহের আগেই ব্রিজ রেডি হয়ে যাবে।

দক্ষিণ জনপদের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি যোগাযোগ স্থাপনের এই সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ করার দাবি এরই মধ্যে তুলেছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। নানা অঙ্গন থেকে তাতে সমর্থনও দেওয়া হচ্ছে। পদ্মা নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা। সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মান বজায় রাখা হয়েছে বলে জানান খন্দকার আনোয়ারুল।

পদ্মা সেতুর নির্ধারিত টোল বেশি হওয়া নিয়ে যে সমালোচনা হচ্ছে, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যখনই যেখানে ব্রিজ করি এর স্ট্যান্ডার্ড হলো ফেরির দেড় গুণ। সেটা ধরেই করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ব্রিজ হলো প্রায় পাঁচ কিলোমিটার আর এটা হলো ৯ দশমিক ৮৬ (সংযোগ সড়কসহ) অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ। তা ছাড়া ফেরির যে চরিত্র, সেটা কিন্তু এক ছিল না। বঙ্গবন্ধু ব্রিজ যখন ফেরিতে ধরা হয়েছে, ১৯৯৫-৯৬ এর টোল ধরে করা হয়েছে। তারপর দুবার বাড়ানো হয়েছে। পদ্মায় তো প্রেজেন্ট টোলের রেট ধরে করা হচ্ছে।’

‘ফেরির যে রেটটা, এটাই হলো জেনারেল প্র্যাকটিস, ১ দশমিক ৫ গুণ, এই জিনিসটা একটু খেয়াল রাখতে হবে। তাও পরবর্তী সময়ে যদি মনে করা হয় যে এটা বেশি হয়েছে...’ বক্তব্য অসমাপ্ত রাখেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর টাকা সেতু কর্তৃপক্ষকে ১ শতাংশ হার সুদে সরকারকে ফেরত দিতে হবে। সুতরাং সেতু কর্তৃপক্ষকে ওই জায়গা থেকে টাকা উপার্জন করতে হবে। পৃথিবীর কোথাও এই ধরনের স্থাপনার ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় পয়সা না দিয়ে যাওয়ার কোনো সিস্টেম নেই।’

আনোয়ারুল বলেন, ‘ফিজিবিলিটি স্টাডিতে যেমন ছিল যে, ২৪ থেকে ২৫ বছরের মধ্যে টাকাটা (পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয়) উঠে আসবে। এখন মনে হচ্ছে ১৬/১৭ বছরের মধ্যেই টাকাটা উঠে আসবে। ওই পাড়ের যেসব কাজকর্ম এবং যেগুলো আছে সেগুলো ফিজিবিলিটি স্টাডিতে আসেনি। মোংলা পোর্ট যে এত স্ট্রং হবে, পায়রা বন্দর হবে, এত শিল্পায়ন হবে- এগুলো কিন্তু আসেনি। ধারণা ছিলো পদ্মা সেতু ১ দশমিক ৩ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি আনবে। তবে এটা ২ এর কাছাকাছি চলে যাবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে।’

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিষয় জানান খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে, ‘হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন, ‘ভূমি উন্নয়ন কর আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন, ‘ভূমি সংস্কার আইন, ২০২২’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন, ‘জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য নীতি, বাংলাদেশ-২০২২’-এর খসড়া অনুমোদন, গত ৭ থেকে ১২ মার্চ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিতকরণ এবং গত ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১ মার্চ মেয়াদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল কর্তৃক কমিশন ওয়ান দ্য লিমিটস অব দ্য কন্টিনেন্টাল সেল্ফ (সিএলসিএস)-এর ৫৪তম অধিবেশনে বাংলাদেশ কর্তৃক মহীসোপানের অ্যামেন্ডমেন্ট সাবমিশন উপস্থাপন সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিতকরণ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close