বগুড়ার শিবগঞ্জ মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে সন্ধান মিলেছে প্রায় ১৭০০ বছর আগের প্রাচীন পুরার্কীতির। আবিষ্কৃত হয়েছে প্রাচীন আমলের সিল ও পোড়া মাটির মূর্তির মাথার। এছাড়া সন্ধান পাওয়া গেছে গুপ্ত ও পাল যুগের বেশ কয়েকটি বৌদ্ধ মূর্তির। প্রত্নতাত্ত্বিকরা বলছেন, মহাস্থান গড়ের বৈরাগীর ভিটায় একটি বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কৃত হয়েছে।

মহাস্থানগড়ে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে মহাস্থান গড়ের বৈরাগীর ভিটায় চলছে খনন কাজ। আরো মাসখানেক চলবে এই খনন কাজ। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সেখানে ১৭০০ বছরের পুরোনো বৌদ্ধ মূর্তি, দুটি বৌদ্ধ স্তূপ (সমাধিসৌধ), প্রাচীন লিপি খচিত সিল, পোড়া মাটির নারী অবয়বের মাথা, অলঙ্কৃত ইট, ভগ্ন মৃৎপাত্র, বৌদ্ধ মন্দিরসহ বিভিন্ন প্রত্নসামগ্রীর সন্ধান পাওয়া গেছে।

বর্তমানে বৈরাগীর ভিটার যে স্থানে খনন করা হচ্ছে তার সঙ্গেই ঠিক দক্ষিণাংশে একটি মন্দির কমপ্লেক্সের সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল আগের খননে। আর এবার বৌদ্ধ মন্দির কমপ্লেক্সের সন্ধান পেলেন খননে নিয়োজিতরা।

গত মঙ্গলবার বিকালে প্রত্নতত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক নাহিদ সুলতানা জানান, ২০১৬ সাল থেকে পরপর তিন অর্থবছরের শীত মৌসুমে আমরা বৈরাগীর ভিটায় খনন কাজ শুরু করি। এরই মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক অনেক নিদর্শন আমরা পেয়েছি। গত দুবছর করোনার কারণে বন্ধ থাকার পর ২০২১-২২ অর্থবছরে ১ মার্চ থেকে আমরা পুনরায় খনন শুরু করেছি।

তিনি আরো বলেন, এবারের খননে আমরা চারটি দেয়ালবিশিষ্ট স্তূপ পেয়েছি। এর মাঝখানে একটি বৌদ্ধ মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছি। এছাড়া পাওয়া গেছে প্রাচীন আমলের সিল, মূর্তির মাথাসহ অন্যান্য নিদর্শনও।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রতন চন্দ্র পালিত জানান, মহাস্থান গড়ের বৈরাগীর ভিটায় গুপ্ত ও পাল যুগের অনেক নিদর্শন পাওয়া গেছে। প্রাচীন এসব পুরাকীর্তির মধ্যে বৌদ্ধ মূর্তিগুলো ছিল দৃষ্টিনন্দন। মাথার অংশে চুল আঁচড়ানো ও খোপায় ফুল দেওয়া মূর্তি দেখতে পাওয়া গেছে। এগুলো থেকে সেই সময়ের মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

"