ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
হুতোমপ্যাঁচাকে সেবাদান
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ী উত্তর বনগাঁও গ্রামে বিরল প্রজাতির একটি হুতোমপ্যাঁচা উদ্ধার করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উদ্ধারের পর আহত ওই প্যাঁচাটিকে সেবা করছেন স্থানীয় শ্রমিক ইসমাইল হোসেন। ইসমাইল জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি তার কর্মস্থল থেকে বের হয়ে বাড়ির দিকে যাওয়ার সময় দেখতে পান কয়েকটি শিশু একটি প্যাঁচার ছানা নিয়ে খেলা করছে।
তিনি জানান, প্যাঁচাটি বিকালে ঝড়ের পর সড়কের পাশে পড়েছিল। পরে শিশুরা উঠিয়ে নেয়। একপর্যায়ে শিশুদের কাছ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ফার্মেসিতে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করান তিনি। পরে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে নিজের মতো করে শুশ্রুষা শুরু করেন। এতে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠে ছানাটি। এখন সেটিকে কবুতরের খাঁচায় রেখে প্রয়োজনীয় খাবার দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে সেটি আগের চেয়ে ভালো আছে। ইসমাইল বলেন, আমি এর আগেও শেয়াল ও বেজির বাচ্চা লালন-পালন করে বড় করে জঙ্গলে ছেড়ে দিয়েছি। এরকমভাবে প্যাঁচাটিকেও সুস্থ করার চেষ্টা করছি। আজ প্যাঁচাটিকে দেখতে ইসমাইলের বাড়িতে আসতে থাকে উৎসুক মানুষ।
নান্দাইল সমূর্ত জাহান মহিলা কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক অরবিন্দ পাল অখিল কালের কণ্ঠকে জানান, হুতোমপ্যাঁচাকে কেউ প্যাঁচা, কেউ ধুধু আবার কেউ লক্ষ্মীপ্যাঁচা বলে ডাকে। এরা রাতে বিচরণ করে, নিশাচর পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম কঊঞটচঅ কঊঞটচট (ইটঋঋণ ঋওঝঐ ঙডখ)। অনেক সম্প্রদায়ের কাছে পূজনীয় একটি পাখি প্যাঁচা। এরা জোড়ায় জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। এরা বিভিন্ন রকমের ক্ষতিকারক পোকামাকড়, পাখির ছানা, ইঁদুর খেয়ে থাকে। প্যাঁচা সাধারণত গাছের কোটরে কিংবা দালানের ফাঁকফোকরে বসবাস করে। বৃক্ষ নিধন ও জমি আবাদ করতে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার এবং শিকারের কারণে হুতোমপ্যাঁচা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের স্বার্থে এদের বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন।
"