নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৩ মে, ২০২২

সম্রাটকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেওয়া যাবে

কারাগার থেকে মুক্তি পেলেও হৃদরোগের ঝুঁকি বিবেচনায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল হোসেন সম্রাটকে আপাতত হাসাপাতালেই রাখতে চায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ। তবে পরিবার চাইলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে অন্য হাসপাতালে বা বিদেশে নিয়ে যেতে পারবে বলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নজরুল ইসলাম খান জানিয়েছেন।

ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত সম্রাট গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ৩১ মাস আগে। এর মধ্যে গত দেড় বছর তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে কারা তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সব মামলায় জামিন পাওয়ার পর বুধবার তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।

মুক্তি পেলেও চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালের ‘ডি’ ব্লকের সিসিইউতে ভর্তি রাখা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন হাসপাতালের পরিচালক নজরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এত দিন উনার চিকিৎসার ব্যাপারে আমরা জেল অথরিটিকে অভিভাবক ভেবেছি। এখন যেহেতু উনি মুক্ত, আজ থেকে চিকিৎসার বিষয়ে উনার অভিভাবকদের জানাব। এখন তার অভিভাবক বিবেচনা করবে, কোথায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া হবে। দেশে নাকি বিদেশে নেবে।

মেডিকেলের কার্ডিয়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রায়হান মাসুম মণ্ডল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সম্রাট ‘হার্টের ক্রনিক অসুখে’ ভুগছেন। এটা কিছু সময় স্টেবল থাকে, কিছু সময় আনস্টেবল হয়ে যায়। উনার হার্টে যে অসুখগুলো আছে, তার তিন-চারটা ডায়াগনোসিস এমন যে, হঠাৎ করে মৃত্যুও হয়ে যেতে পারে।

এই চিকিৎসক বলেন, এত দিন মনিটর করার পর গত তিন সপ্তাহ ধরে উনার কন্ডিশন স্থিতিশীল আছে। আগামী সোমবারের দিকে আমরা আবার টোটাল রিভিউ করব। বেটার কোনো চিকিৎসা আছে কি না, সেটা নিয়ে আমরা উনার অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলব। উনার অভিভাবকরাই সিদ্ধান্ত নেবে কোথায় চিকিৎসা নেবেন।

পরিবার চাইলে সম্রাটকে এখন বাড়িতে নিয়ে যেতে পারবে কি না- এমন প্রশ্নে ডা. রায়হান মাসুম মণ্ডল বলেন, এখন উনার হার্ট একেবারেই স্বাভাবিক। কিন্তু উনার রোগের গতিবিধি এমন যে, অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে যেকোনো সময়। পরিবার রিস্ক নিয়ে যেতে চাইলে বন্ড দিয়ে নিয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে হাসপাতালে কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে না।

উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া লাগবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উনার ভালো চিকিৎসা দরকার। সেটা দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের আছে, তবে তারপরও পরিবার চাইলে অন্য কোথাও নিয়ে যেতে পারে। আমরা উনার অভিভাবকের সঙ্গে আলাপ করব। উনার অভিভাবক অন্য কোথাও না নেওয়া পর্যন্ত উনি হাসপাতালেই থাকবেন।’

হাসপাতালের পরিচালক নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের হার্টের ক্যাপাসিটি (কার্যক্ষমতা) ৬০-৬২ শতাংশ থাকা দরকার, সেখানে সম্রাটের আছে ৩১-৩৩ শতাংশ, কখনো ৩৪ শতাংশ ছিল। হাসপাতালে থাকা অবস্থাতেও উনি স্বাভাবিক কার্যক্রম করতে পারতেন না। আমরা শঙ্কিত ছিলাম, এখানে তার কিছু হয়ে যায় কি না। এখানে ভর্তি হওয়ার আগে তার ভাল্ব রিপ্লেসমেন্ট করা ছিল। এ পরিস্থিতিতে তিনি আমাদের কাছে এসেছেন। আমরা তাকে কয়েদি নয়, রোগী হিসেবে দেখেছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরো ছিলেন বিএসএমএমইউয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটো, সহকারী পরিচালক ডা. এহসানুল কবির, ডা. এনায়েত তুষার, ডা. মোহাম্মদ কুতুব উদ্দিন প্রমুখ।

গত বুধবার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় তিন শর্তে জামিন পান সম্রাট। শর্তগুলো হলো আদালতের অনুমতি ব্যতীত দেশ ত্যাগ করতে পারবেন না সম্রাট, পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং স্বাস্থ্যগত পরীক্ষার প্রতিবেদন আগামী ধার্য তারিখে জমা দিতে হবে।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close