গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৯ মে, ২০২২

প্রাচীন গাছ দেখতে ভিড়

দুইশ বছরের অধিক সময় ধরে ইতিহাস, ঐতিহ্য আর কালের সাক্ষী হয়ে চারিদিকে ডালপালা ছড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে একটি আমগাছ। একটু দূর থেকে দেখলে মনে হবে সবুজ রঙের একটি টিলা। সব মিলিয়ে এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। স্থানীয়রা জানিয়েছেন গাছটির বয়স হবে ২০০ বছরের বেশি।

গোপালগঞ্জ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার উত্তরে কাশিয়ানী উপজেলার মহেশপুর ইউনিয়নের হিরোন্যকান্দি গ্রামে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে এ আমগাছটির অবস্থান। প্রায় ৫৪ শতাংশ জায়গাজুড়ে গাছটি বিস্তৃত। এটি দেশের সবচেয়ে প্রাচীন আম গাছ বলে ধারণা করা হয়। গাছটি একনজরে দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য মানুষ আসেন। এ কারণে এই গাছের কাছে সারা বছরই দর্শনার্থীরা ভিড় করেন। তবে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, দুর্গাপূজা, পহেলা বৈশাখ, ইংরেজি নববর্ষ, একুশে ফেব্রুয়ারিসহ বিভিন্ন উৎসব ও পার্বণে দর্শনার্থী বেশি হয়।

এই আমগাছ কে এবং কবে লাগিয়েছিলেন তার সঠিক তথ্য জানা যায়নি। তবে উত্তরাধিকার সূত্রে জায়গার মালিক মো. বাদশা শেখ (৫২) জানান, গাছটি হয়তো তাদের পূর্বপুরুষের কেউ রোপণ করেছেন। গাছটির বয়স প্রায় ২২০ বছর হবে। নড়াইল সদর উপজেলার রতডাঙ্গা গ্রাম থেকে আমগাছটি দেখতে আসা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমগাছটি দেখে অনেক ভালো লাগল। তবে এখানে বিশ্রামের জায়গাসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নেই। এসব ব্যবস্থা করা গেলে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরো বাড়ত।’

স্থানীয়রা জানান, সাত বছর আগে গোপালগঞ্জ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে মহাসড়ক থেকে আম গাছতলায় যাওয়ার আধা কিলোমিটার রাস্তা পাকাকরণ করা হয়। এ ছাড়া দিক-নির্দেশনার জন্য মহাসড়কের পাশে ‘শতবর্ষী আমগাছ’ লেখা দুটি সাইনবোর্ড টাঙানো হয়। কিন্তু গাছটি রক্ষণাবেক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। আমগাছটিকে ঘিরে এলাকাটি পর্যটন স্পট হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। মহেশপুর ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান লুথু বলেন, গাছটি আমাদের এলাকার ঐতিহ্য। এটি অত্র ইউনিয়নকে দেশ-বিদেশে পরিচিত করেছে। এটি দেখতে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ এখানে আসেন। কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, গাছ সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

যেভাবে যাবেন : গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর অথবা ভাটিয়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে লোকাল বাসে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ধরে যেতে পারবেন। শতবর্ষী আমগাছ তলা নামব বললে বাসের হেলপার নামিয়ে দেবেন। নেমে দেখবেন ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশেই জেলা পরিষদ কর্তৃক ‘শতবর্ষী আমগাছ’ লেখা নির্দেশ ফলক দেওয়া আছে। মহাসড়কের দক্ষিণ পাশে তাকালেই মাঠের মধ্যে দেখা যাবে ২০০ বছরের সেই পুরোনো আমগাছটি। যা চুলের এলোমেলো বিশালাকৃতির ডালপালা বিস্তার করে দাঁড়িয়ে আছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close