আবদুর রহমান রাসেল, রংপুর

  ২৯ জানুয়ারি, ২০২২

মাঠে হাসি, হাটে কান্না

আলুর বাম্পার ফলন হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। বাজারে দাম না থাকায় আগাম আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। পানির দামে আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ তো উঠছেই না, বরং ক্রেতার পেছনে ঘুরতেই দিন শেষ কৃষকের। ফলে এবারও লোকসানের পাল্লা ভারী হওয়ার আশঙ্কা করছেন আলুচাষিরা।

রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার রংপুর জেলায় ৫১ হাজার ৮৪০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর আগাম জাতের আলু চাষাবাদ হয়েছে। এসব আলু উত্তোলন করে কৃষক অন্য ফসল রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করতে শুরু করেছেন। চলতি বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষক কোমর বেঁধে আলু চাষে নেমে পড়েন। তবে রংপুরের সব উপজেলা ও পীরগাছার ছাওলা ও তাম্বুলপুর ইউনিয়নের তিস্তা নদীর চরাঞ্চল এবং বিভিন্ন ইউনিয়নে উঁচু জমিগুলোতে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়। এসব আলুর ফলন বাম্পার হলেও কৃষককের মুখে হাসি নেই। প্রথম দিকে আগাম জাতের আলু প্রতি বস্তা (৯০ কেজি) ২ হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হলেও গত দুই সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের আলুর বাজারে ধস নেমেছে। বর্তমান বাজারে আলু প্রতি বস্তা ইস্ট্রিক, ডায়মন, কার্ডনাল জাতের (৯০ কেজি) ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং গ্রানুলা জাতের ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

পীরগাছা উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আদম সবুজপাড়া গ্রামের আলুচাষি মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ধারদেনা করে আগাম জাতের আলু চাষাবাদ করেছি। যাতে আলু তুলে অন্য ফসল চাষাবাদ করতে পারি। এখন দেখি বাজারে দাম নেই। আমরা মাঠে মারা যাচ্ছি। কারণ উৎপাদন খরচই উঠছে না। তবু বাকিতে আলু বিক্রি করে দিলাম।’

পীরগাছা বাজারের আলু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আলুর উৎপাদন বেশি হওয়া ও একসঙ্গে কৃষকরা আলু উত্তোলন করায় বাজারে চাহিদা কম। তাই দামটাও কমে গেছে। এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল আলম প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘আগাম জাতের আলু সংরক্ষণের কোনো সুযোগ নেই। আর সব জায়গায় বোরো চাষাবাদের জন্য কৃষক আলু উত্তোলন করছেন। ফলে বাজারে দাম কম। তবে পর্যায়ক্রমে আলু তোলা হলে তেমন লোকসান হতো না।’

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ ওবায়দুর রহমান জানান, এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। তবে আগাম জাতের আলু সংরক্ষণের কোনো সুযোগ এই অঞ্চলে নেই। আর সব জায়গায় বোরো চাষাবাদের জন্য কৃষক আলু উত্তোলন করছেন। ফলে বাজারে এখন দাম তুলনামূলক কম। তবে পর্যায়ক্রমে আলু তোলা হলে তেমন লোকসান হতো না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close