reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ জানুয়ারি, ২০২২

মেয়রের উন্নয়ন ভাবনা

কাজ করছি আধুনিক নগর গড়ার

মানুষের পাশে থেকে তাদের নাগরিক সুবিধা দিতেই আমি মেয়র হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। আমি মনে করি একজন মেয়রের ইচ্ছায় একটি পৌরসভার উন্নয়ন সম্ভব। পৌরবাসী আমাকে ভালোবাসে বলে মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। আমার লক্ষ্যই হচ্ছে পৌরসভাকে একটি সুন্দর-পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে গড়ে তোলা। পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করে যেতে চাই। পৌরসভার নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করে একটি মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করতে চাই। যা জেলায় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। প্রতিদিনের সংবাদকে কথাগুলো বলছিলেন মাদারগঞ্জ মেয়র মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাদারগঞ্জ (জামালপুর) প্রতিনিধি খাদেমুল ইসলাম।

২১ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে ১০.৭৮৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে ‘গ’ শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে যাত্রা শুরু করে মাদারগঞ্জ। এ পৌরসভায় জনসংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। ভোটার ২৭ হাজার ১২৩ জন। পরে ২০১১ সালে ‘খ’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ২০১৫ সালে মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির প্রথমবার মেয়র নির্বাচিত হন। তার উদ্যোগেই ২০১৯ সালে পৌরসভাটি ‘ক’ শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ২০২১ সালে পৌর নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হন। সবশেষ ২০২১ সালের ২৪ মার্চ দ্বিতীয়বার মেয়রের দায়িত্ব নেন তিনি। মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য।

মির্জা গোলাম কিবরিয়া কবির বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম এমপির দিকনির্দেশনায় নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার মাধ্যমে মাদারগঞ্জকে আধুনিক পৌরসভা হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। পৌরসভার অভ্যন্তরে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতকরণে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ কিমি পাকা রাস্তা ও কাঁচা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভাকে যানজট মুক্ত রাখতে ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌরবাস টার্মিনাল থেকে জোনাইল বাজার পর্যন্ত ১৮ ফুট প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ফুটপাতসহ ড্রেন ও পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ১৫টি কালভার্ট, ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাস টার্মিনাল, ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে থানা মোড়ে স্মৃতিসৌধ, পৌরসভার বিভিন্ন বাজারে গণশৌচাগার ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে অত্যাধুনিক গণশৌচাগার নির্মাণ, ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বালিজুড়ী এফ এম উচ্চবিদ্যালয় ও মাদারগঞ্জ এ এম পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে দুটি স্থায়ী মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। মেয়র বলেন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি শোধনাগার ও ৪ কোটি ১ লাখ টাকা ব্যয়ে পৌরভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। মসজিদ, মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ করা হচ্ছে। বিভিন্ন মোড়ে দৃষ্টিনন্দন গোল চত্বর নির্মাণ, পৌরসভাকে সম্পূর্ণ সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা, পাবলিক লাইব্রেরি নির্মাণ, বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট সংস্কার, কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ, আরসিসি রাস্তা নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে।

মেয়র মির্জা কবির বলেন, করোনা মোকাবিলায় পৌরসভার প্রত্যেক ওয়ার্ডে জীবাণুনাশক স্প্রেসহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে পৌরসভার অভ্যন্তরে সর্বস্তরের অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ৬ হাজার ২৫০টি পরিবারের মধ্যে ৬৩ টন চাল, সঙ্গে ডাল, আলু, তেলসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ২ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রধান করা হয়েছে। এ পৌরসভায় ৮৮৩ জন বয়স্ক, ৪০৫ জন বিধবা, ৩৪৯ জন প্রতিবন্ধীকে ভাতার কার্ড প্রদান করা হয়েছে। ঘরে বসে নাগরিক সুবিধা পেতে পৌরবাসীকে অনলাইন ভিত্তি খানা তথ্য নিবন্ধন ও নাগরিকসেবা কার্ড প্রদান করা হয়েছে। রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন খাতে নানা উন্নয়ন করা হচ্ছে। পৌরসভা বিভিন্ন সড়কে ৩৭৭টি বাতি স্থাপন করে পৌর এলাকাকে আলোকিতকরণ করা হয়েছে।

মেয়র বলেন, মাদারগঞ্জ পৌরসভায় ৫২.৬ কিমি পাকা রাস্তা, ৬.৮০ কিমি আধা পাকা, ২২ কিমি কাঁচা রাস্তা রয়েছে। এখানে প্রাইমারি ড্রেন ৫.৩ কিমি সেকেন্ডারি ড্রেন ৫.৬ কিমি, টারশিয়ারি ড্রেন ৭.৮০ কিমি রয়েছে। এছাড়াও ৩১টি ব্রিজ/কালভার্ট, ৩৭৭টি বৈদ্যুতিক বাতির খুঁটি, ৩টি গার্বেজ ট্রাক, ৩টি রোড রোলার, ২টি মোটরসাইকেল, ৭টি কম্পিউটার ল্যাপটপ, ৪টি হাটবাজার, ১টি বাস টার্মিনাল, ৮ হাজার ১১৯টি হোল্ডিং, ১.৫ একর স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে মাদারগঞ্জ পৌরসভায়।

মেয়র মির্জা কবির বলেন, এ পৌরসভাকে আধুনিক ও ডিজিটাল হিসেবে গড়ে তুলতে আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন, নাগরিক সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপদ জীবন যাত্রার নিশ্চিত করা এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বাসযোগ্য মডেল পৌরসভা গড়াই আমার লক্ষ্য। আমি বাল্যবিবাহ, মাদক, জঙ্গি-সন্ত্রাস, দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে এ পৌরসভাকে ডিজিটাল পৌরসভা হিসেবে রূপান্তরে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন বাস্তবায়নে একজন কর্মী হিসেবে কাজ করছি। এজন্য পৌরসভার সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close