সরকারি চাকরির প্রলোভনে টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রতারকচক্রের হোতাসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

সিআইডি বলছে, চক্রটি সম্প্রতি অভিনব কায়দায় বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে চাকরি দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অর্থ আত্মসাতের জন্য চক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিত। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে চাকরি ও টাকার গ্যারান্টি হিসেবে ব্ল্যাংক চেক ও ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প নিতো বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের জন্য।

গতকাল সোমবার সকালে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রো সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি ঈমাম হোসেন। তিনি বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি বেলা ১১টায় পল্টন থানায় মিরাজুল ইসলামসহ চার ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের মূলহোতা হারুন অর-রশিদকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি নওগাঁর বদলগাছির মৃত আ. জলিলের ছেলে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেকেন্দার আলী ও মাসুদ রানাকে কাফরুল থানার মিরপুর-১৪ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ভুয়া নিয়োগপত্র চারটি, মন্ত্রণালয়ের আবেদনপত্র তিনটি, ভিকটিমদের স্বাক্ষরিত বিভিন্ন ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক ছয়টি, ভিকটিমদের স্বাক্ষরিত ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প ২৪টি, মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর সরকারি চাকরির জন্য সুপারিশকৃত ভুয়া ডিও লেটার ও বিভিন্ন ব্যক্তির ছবি ও অন্য কাগজপত্র সংবলিত বায়োডাটা জব্দ করা হয়।

ঈমাম হোসেন আরো বলেন, যেসব চাকরিতে পদ কম থাকে সেসব চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। কারণ ওই সব চাকরি হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। বেকার যুবকদের চাকরির অফার দিলে অনেকেই রাজি হয়। এজন্য তিন থেকে ৫ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে নিত। পরে কাকতালীয়ভভাবে কারো চাকরি হয়ে গেলে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছে চক্রটি।

ঈমাম হোসেন বলেন, বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য চক্রটি চাকরি পাওয়ার পর বাকি টাকা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। আবার ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ব্ল্যাংক চেক ও ব্ল্যাংক স্ট্যাম্প নিয়ে বিশ্বাস করানোর চেষ্টা করে যে, চাকরি আপনার হবেই। এভাবেই প্রতারকচক্রটি ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। শুধু তাই নয়, চক্রটি বদলি বাণিজ্যের সঙ্গেও জড়িত। বিভিন্ন মানবিক কারণ দেখিয়ে প্রতিষ্ঠান থেকে বদলিতে আগ্রহীদের বদলির তদবির করত চক্রটি। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

"