বদরুল আলম মজুমদার

  ২৫ নভেম্বর, ২০২১

নিবন্ধন জটিলতায় ধীরগতি

শিক্ষার্থীদের টিকাদান মাদরাসায় আগ্রহ কম

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের ‘পূর্ণাঙ্গ’ ও ‘সঠিক’ ডাটা বা তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) দিতে পারছে না। ফলে অনেক প্রতিষ্ঠানে দুবার-তিনবার তথ্য চাওয়া হচ্ছে। আবার নিবন্ধনের জন্য যেসব শিক্ষার্থীর তালিকা আইসিটি বিভাগে পাঠানো হয়েছে, তাদের ‘সুরক্ষা অ্যাপে’ অন্তর্ভুক্তিতেও বিলম্ব হচ্ছে। আর মাদরাসা ও কারিগরির ‘টিকা পাওয়ার’ উপযোগী শিক্ষার্থীদের তালিকাই করা হয়নি এখনো। এতে ধীরগতিতে এগুচ্ছে স্কুলশিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি।

গত ১ নভেম্বর থেকে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান শুরু হয়। এরপর ১৩ নভেম্বর থেকে শুধু এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়। ২৫ নভেম্বরের মধ্যে ৩৫ জেলায় পরীক্ষার্থীদের টিকা কর্মসূচি শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে মাউশি। এরপর জেলা পর্যায়ে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০ নভেম্বর পর্যন্ত সবস্তরের শিক্ষার্থী মিলিয়ে এ পর্যন্ত মাত্র ৩ লাখ ১৫ হাজার ৮৯২ শিক্ষার্থী করোনার টিকা নিয়েছে। অথচ শুধু ঢাকায় দৈনিক ৪০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকাদানের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য বিভাগ। আর এখন ঢাকাসহ ৩৬ জেলায়ও দৈনিক ৫০ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকাদান সম্ভব হচ্ছে না।

মাউশি জানিয়েছে, ঢাকায় টিকাদানের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ৪ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষার্থীর তথ্য আইসিটি ও স্বাস্থ্য বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর নিবন্ধন চলছে। এছাড়া মাদরাসা ও কারিগরি মিলিয়ে ঢাকায় ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ লাখের মতো হতে পারে বলে শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ধারণা করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের টিকা কর্মসূচির পরিচালক অধ্যাপক ডা. শামসুল হক সম্প্রতি এক বুলেটিনে বলেছেন, যেহেতু শিশুদের (১২-১৭ বছর বয়সি) এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) নেই, তারা জন্মনিবন্ধনের মাধ্যমে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে।

১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকাদান কর্মসূচি সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করছেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কলেজ ও প্রশাসন শাখার পরিচালক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী। তিনি গতকাল প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, “টিকা পেতে শিক্ষার্থীদেরও সুরক্ষা ‘অ্যাপে’ নিবন্ধন করতে হয়। শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন যদি আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে করতে পারতাম তাহলে তাদের টিকা পেতে সহজ হতো। কিন্তু বর্তমানে লাখ লাখ শিক্ষার্থীর ডাটা আগে সুরক্ষা অ্যাপে অন্তর্ভুক্ত করতে হচ্ছে। এতে চাপ বেড়েছে।”

মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, টিকায় মাদরাসা শিক্ষার্থীদের খুব একটা আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। মাদরাসাগুলোও নানা অজুহাতে শিক্ষার্থীদের তথ্য দিতে বিলম্ব করছে।

শিক্ষার্থীদের টিকায় ‘ধীরগতির’ বিষয়ে অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, ‘স্কুল-কলেজ থেকে প্রতিদিন আমাদের কাছে যেসব ডাটা পাঠাচ্ছে তাতে অনেক ডাটাই সঠিক আসছে না। এজন্য বারবার ডাটা চাওয়া হচ্ছে, যাচাই-বাছাই করতে হচ্ছে। আবার সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতেও কিছুটা জটিলতা হচ্ছে, সময় লাগছে।’

অধ্যাপক শাহেদুল জানান, ২৫ নভেম্বরের মধ্যে ৩৫টি জেলায় এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীদের টিকাদান শেষ করা সম্ভব হবে। এরপর বাকি জেলাগুলোতেও শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হবে। সরকার স্কুল-কলেজ পর্যায়ের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবিত ‘ফাইজার’র টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের অর্থাৎ ১৮ বছরের বেশি বয়সি শিক্ষার্থীদের টিকাদান প্রায় শেষ হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close