reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৪ নভেম্বর, ২০২১

মেয়রের উন্নয়ন ভাবনা

নান্দনিক শহর গড়ব

ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে পৌরসভার দায়িত্ব নিয়েছি। মাত্র দশ মাসের মধ্যেই পৌরবাসীর মন জয় করেছি কাজের মাধ্যমে। পৌরসভাকে আধুনিক ও বাসযোগ্য নগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। যে নগরে থাকবে না যানজট, জলজট, হবে না দূষণ। থাকবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। মাদক, সন্ত্রাসমুক্ত ও সম্প্রীতি বজায় রেখে উন্নতসমৃদ্ধ আধুনিক পৌরসভা গড়াই আমার লক্ষ্য। সমাজের সবস্তরের মানুষকে নিয়ে আধুনিক ও আদর্শ পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলব। সেই সঙ্গে নিজেকে পৌরবাসীর সেবক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। রাস্তাঘাট, সেতু, কালভার্ট, ড্রেন, স্যানিটেশন, সড়কবাতিসহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ চলছে। এসব কাজ স্বচ্ছতার সঙ্গেই পরিচালিত হচ্ছে। নির্মাণ করা হচ্ছে ড্রেন ও কালভার্ট। শুধু শহরের প্রধান সড়ক নয়, পাড়া-মহল্লার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তাঘাটও সংস্কার করা হচ্ছে। প্রতিদিনের সংবাদকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মতলুবর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন গাইবান্ধা প্রতিনিধি মুকুল মাসুদ।

১৯২৩ সালে স্থাপিত হয় গাইবান্ধা পৌরসভা। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার আয়তন ১০.৫৪ বর্গকিলোমিটার। ২০০২ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা লাভ করে। এখানে ভোটার আছেন ৫১ হাজার ৩৮৭ জন। গণমানুষের বিপুল ভোটে ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারির পৌর নির্বাচনে গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন মো. মতলুবর রহমান। নির্বাচিত মেয়রের দায়িত্বকে তিনি চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন। এ পৌরসভাকে তিনি সাজাতে চান নান্দনিক রূপে। জলাবদ্ধতা নিরসন, রাস্তাঘাটের উন্নয়নের মাধ্যমে আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন পৌরসভা গড়ে তোলাই লক্ষ্য গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়র মতলুবর রহমানের।

মেয়র বলেন, হাসপাতালের সামনের ডিবি রোড-ভায়া নাকাইহাট রাস্তাটি জনসাধারণ, রোগী পরিবহন এবং যানবাহন চলাচলে কষ্টকর ছিল। সেখানে ড্রেন ও আরসিসি রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। মৎস অফিস থেকে খানকা শরিফ যাওয়ার রাস্তা নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। রেললাইনের পশ্চিম পাড়ে সরকারি কলেজসংলগ্ন ৩৫০ কিউসেক ক্ষমতার পানি শোধনাগার চালু হয়েছে। এ ছাড়া পৌর কবরস্থানে মুসল্লিদের পানি ব্যবহারে যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পৌর পার্কে অবস্থিত শহীদ মিনারের পেছনের প্রাচীরটির নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। পৌর পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য দুটি দৃষ্টিনন্দন গেট নির্মাণ করা হয়েছে। পৌর পার্কে একটি মনোরম ক্যানটিন স্থাপনের জন্য প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে, স্বল্প সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হবে। এ ছাড়া সর্বসাধারণের জন্য আধুনিক বিপণিবিতান হকার্স মার্কেট গড়ে তোলার চিন্তা আছে। জনগণের বিনোদনের জন্য ঘাঘট লেকটিকে দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর করার পরিকল্পনা রয়েছে। শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য ৫ বছরমেয়াদি পৌরসভা উন্নয়ন পরিকল্পনা শেষের দিকে রয়েছে।

মেয়র মতলুবর রহমান বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর স্বল্প আয়ের অটোচালকদের কষ্ট বিবেচনায় নিয়ে লাইসেন্স ফি কমিয়ে ৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৩০টি বস্তিবাসীর উন্নয়নের জন্য বিশুদ্ধ পানি, টয়লেট, রাস্তা এবং সড়কবাতি স্থাপনে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এজন্য প্রতিটি বস্তিতে মতবিনিময় কার্যক্রম চলছে। বর্জ্য থেকে ডাম্পিং স্টেশনে জৈব সার এবং বায়োগ্যাস উৎপাদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে, যা সরকারি-বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে দ্রুত বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

যানজট সম্পর্কে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ ও শহরের প্রধান সড়কের নির্মাণকাজ শেষ হলে যানজট আর থাকবে না। এ ছাড়া নতুন একটি ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ফোর লেন রাস্তার যে কার্যক্রম চলছে তা শেষ হলে সড়কে দৃষ্টিনন্দন লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।

মেয়র মতলুবর রহমান বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় আমি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন, জনগণের মুখোমুখি হয়ে জবাবদিহিমূলক আলোচনা করি এবং বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করে কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, মশক নিধন ওষুধ ছিটানো, বয়স্ক, বিধবা মাতৃত্বকালীন ও প্রতিবন্ধী ভাতা নিয়মিত দিয়ে আসছি। করোনাকালীন সময় সাধারণ মানুষের পাশে থেকে পৌর এলাকার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় সরকারি অনুদানের পাশাপাশি নিজস্ব তহবিল থেকে খাদ্যসামগ্রী, নগদ অর্থ ও অন্যান্য সহায়তা পৌঁছে দিয়েছি। জাতীয় সংসদের হুইপ ও গাইবান্ধা-২ আসনের সংসদ সদস্য মাহাবুব আরা বেগম গিনির আন্তরিক প্রচেষ্টায় পৌরসভাকে এগিয়ে নিতে কাজ করছি। এ ছাড়া জেলা ও পুলিশ প্রশাসন, সুশীলসমাজ এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে পৌরসভার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রেখে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকমুক্ত সমাজ গড়তে কাজ করছি। পৌরসভায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, মাদকসেবন, মাদক বিক্রি, কিশোর গ্যাং দমন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের প্রতিহত করতে আমরা বদ্ধপরিকর। এ ছাড়া তরুণসমাজকে আরো উদ্যমী করা এবং বেকার সমস্যা সমাধানে গুরুত্ব দেব।

গাইবান্ধা পৌরসভাকে দেশের আধুনিক ও মডেল পৌর নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। দল-মত নির্বিশেষে গাইবান্ধা পৌরসভাকে একটি আধুনিক ও বাসযোগ্য পরিকল্পিত নগর হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আর এজন্য চাই সবার সহযোগিতা।

আগামীকাল পড়ুন

যশোর পৌর মেয়রের কথা

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close