reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ অক্টোবর, ২০২১

মেয়রের উন্নয়ন ভাবনা

দৃষ্টিনন্দন পৌরনগর গড়ব

প্রতিদিনের সংবাদকে কালিয়াকৈর পৌর মেয়র মো. মজিবুর রহমান

পৌরসভার প্রতিটি গ্রামকে দৃষ্টিনন্দন শহরে রূপান্তর করতে কাজ করে যাচ্ছি। শুরুতে পৌর ভবন ছিল উপজেলা চত্বরে। সেখানে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে কাজ করতে হতো পৌর প্রশাসকদের। ২০০৪ সালে প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে পৌরসভাকে আধুনিক ও মডেল পৌরসভায় পরিণত করতে কাজ শুরু করি। সে লক্ষ্যে নতুন রাস্তা তৈরি, পুরোনো রাস্তা মেরামত ও প্রশস্তকরণ এবং সড়কবাতি লাগানোর কাজ করি। পরে ২০১১ সালে পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে মেয়র হয়ে আধুনিক পৌর ভবন নির্মাণ করি। পৌরবাসীর দুয়ারে সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ৩টি সার্কেল অফিস স্থাপন করে নিয়মিত সেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করি। আমার লক্ষ্য একটি আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও দৃষ্টিনন্দন শহর গড়ার। প্রতিদিনের সংবাদকে এমন কথা শুনিয়েছেন কালিয়াকৈরের পৌর মেয়র মো. মজিবুর রহমান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি মো. খোরশেদ আলম।

কালিয়াকৈর পৌরসভা ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলার একটি পৌরসভা। এটি ২০০১ সালে গঠন করা হয়। আয়তন ২৪.৬৬ বর্গকিলোমিটার। জনসংখ্যা ২ লাখ ৫৫ হাজার ৯৬৭ জন। এদিকে ১০ বছর পর আগামী ২৮ নভেম্বর নির্বাচন হবে এই পৌরসভায়। সীমানা নির্ধারণসহ নানা জটিলতার কারণে এত বছর নির্বাচন হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই পৌরসভায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন দাখিলের শেষ দিন ২ নভেম্বর, যাচাই-বাছাই ৪ নভেম্বর, প্রত্যাহার করার শেষ দিন ১১ নভেম্বর।

মেয়র বলেন, পৌরসভার বেশকিছু সমস্যা রয়েছে। পৌর আইন অমান্য করে ভারী যানবাহন ও মাটির ট্রাক চলাচল করায় রাস্তাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে বর্তমানে পৌর এলাকার কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা আরসিসি দ্বারা উন্নয়নের কাজ হাতে নিয়েছি। এরই মধ্যে কয়েকটি রাস্তায় আরসিসি বসানো হয়েছে। পৌরবাসীর জন্য বড় একটি সমস্যা ড্রেনেজ ব্যবস্থা। পৌরসভার উন্নয়নের পাশাপাশি কিছু সমস্যাও সৃষ্টি হয়েছে। পৌরসভাটি শিল্পাঞ্চল হওয়ায় দিন দিন বসতবাড়ি বাড়ছে। জনসাধারণের চাহিদা থাকায় নিচু জমি ভরাট করে ঘরবাড়ি ও শিল্পকারখানা গড়ে ওঠার কারণে অল্প বৃষ্টিতেই পানির স¦াভাবিক গতি ব্যাহত হয়ে পৌর এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পৌর এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণের নিমিত্তে এরই মধ্যে প্রায় ৩৩ কিমি ড্রেন খনন এবং যেসব স্থানে অল্প বৃষ্টিতেই পানির স¦াভাবিক গতি ব্যাহত হয় সেসব স্থানকে চিহ্নিত করে ৫০ কিমি ওপরে ডেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে বলে জানান মেয়র। তবে পৌর এলাকার ময়লা-আবর্জনা বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় জমি না পাওয়ায় এখনো ময়লা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হচ্ছে।

মেয়র বলেন, রাজধানীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতীকরণে স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দিরসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির অংশ হিসেবে অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত পৌরবাসীকে বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ১০ হাজার ৪৬০টি পরিবার অর্থাৎ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার মানুষকে স্বাস্থ্য ও পুষ্টি কার্ডের আওতায় আনা হয়, যার দ্বারা একটা পরিবার বিনামূল্যে ওষুধ, বিভিন্ন টেস্ট, অ্যাম্বুলেন্স সেবা, গর্ভবতী মায়ের সিজারসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে পৌর এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সরবরাহের জন্য ৭৮ কিমি পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। এই কাজ শেষ হলে পৌর নাগরিকদের বিশুদ্ধ পানির অভাব দূর হবে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই ও মাদক রোধে পৌরসভার জনগুরুত্বপূর্ণ প্রায় ৮০ শতাংশ রাস্তায় সড়ক আলোকবাতি স্থাপন করা হয়েছে। কালিয়াকৈর পৌর এলাকায় ছোট ছোট মাঠ থাকলেও এখনো কোনো স্টেডিয়াম না থাকায় অতিদ্রুত একটি আধুনিক দৃষ্টিনন্দন মানসম্মত স্টেডিয়াম নির্মাণের লক্ষ্যে এরই মধ্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপির ডিও লেটার দিয়েছেন বলে জানান মেয়র। এ ছাড়া একটি স্থায়ী ঈদগাহ মাঠ, একটি আধুনিক কমিউনিটি সেন্টার কাম অডিটোরিয়াম, একটা আধুনিক পৌর পার্ক, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কবরস্থান নির্মাণ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

মেয়র মজিবুর রহমান আরো বলেন, পৌরসভাকে মডেল পৌরসভা হিসেবে গড়ে তুলতে মাস্টারপ্ল্যান হাতে পেয়েছি। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী রাস্তাঘাট-ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ সব কিছুর উন্নয়ন করতে হবে। সেক্ষেত্রে ঢাকা ও আমাদের নিকটবর্তী গাজীপুর সিটি করপোরেশন এবং সাভার পৌরসভার মতো গ্রামকে শহরে পরিণত করতে হবে। সরকার পৌরসভাকে সবসময় সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close