বাসস

  ১১ অক্টোবর, ২০২১

গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে

জমিতে সেচ দিয়ে কাদা তৈরি করে ধান লাগানোর মতো করেই মেহেরপুরের কৃষক গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের চাষ শুরু করেছেন। শীত মৌসুমে শুকনো মাটিতে পেঁয়াজ চাষের যে রেওয়াজ চলে আসছে, মেহেরপুরের চাষি তাকে পাল্টে দিয়েছেন। তারা পেঁয়াজ ক্ষেতে আমন ধান আবাদের মতো কাদা তৈরি করে রোপণ করেছেন পেঁয়াজের চারা। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজের ফলন নিয়ে চিন্তিত হলেও হাল ছাড়ছেন না কৃষি বিভাগ ও উদ্যোমী চাষি। গত ৪ বছর ধরে জেলায় কাদা জমিতে পেঁয়াজের চাষ করে সফল হয়েছেন তারা। এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়। আগামীতে এ পদ্ধতিতে পেঁয়াজ চাষ বাড়বে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় এবার ২৫ হেক্টর জমিতে নতুন পদ্ধতিতে বারি পেঁয়াজ-৫ সহ বিভিন্ন জাতের পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছে। জেলার মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর গ্রামের কৃষক ফিরোজ আহমেদ মাস্টার বলেন, মুজিবনগরে শীতকালে ব্যাপক পেঁয়াজ চাষ হয়। তবে সেটি ভারতীয় বীজ থেকে উৎপন্ন ‘সুখ সাগর’ পেঁয়াজ। এ পেঁয়াজ বেশি দিন ঘরে রাখা যায় না। আবার সময়, চাহিদা ও দাম না পাওয়ায় চাষিকে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। এবার ‘সুখ সাগর’ পেঁয়াজের পরিবর্তে কয়েকজন কৃষক গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে ভালো ফলন ও ভালো দাম পেয়েছেন। ওই জমিতেই আবার শীতকালীন পেঁয়াজের চাষ করছেন। আবাদের এ ধারায় দেশের পেঁয়াজ সংকট দূর হবে বলে আশা করছেন এসব কৃষক।

মেহেরপুর সদর উপজেলার শুভরাজপুর গ্রামের কৃষক ওহাব আলী জানান, তিনি ৫ বিঘা বারি পেঁয়াজ-৫ চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় এ পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকি কম। নভেম্বর থেকেই এ পেঁয়াজ তোলা যায় বলে তিনি জানান। ফলে চাষি সারা বছর পেঁয়াজ চাষ ও সংরক্ষণ করতে পারেন।

মেহেরপুর সদর উপজেলার ইছাখালি গ্রামের পেঁয়াজ চাষি গোলাম মোস্তফা জানান, ১৫ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। ৯৫ থেকে ১১০ দিনে বিঘায় ১২০ থেকে ১৫০ মণ উৎপাদন হয়। গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।

ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ নাসির উদ্দীন আহম্মেদ জানান, জেলায় বিভিন্ন চাষির মাধ্যমে ২৫ হেক্টর জমিতে বারী পেঁয়াজ-৫ আবাদ করা হয়েছে। ভালো ফলন হবে এবং চাষি লাভবান হবে।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক স্বপন কুমার খাঁ বলেন, নতুন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ উৎপাদনে মেহেরপুর জেলা কৃষিতে যুগান্তকারী পরিবর্তনের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। লাভ ও ফলনে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আগ্রহ বেড়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close