reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ময়রের উন্নয়ন ভাবনা

আগুন-সন্ত্রাসের মধ্যেও উন্নয়নে অবিচল

হেফাজতে ইসলামের কর্মী-সমর্থকদের ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের কারণে কার্যালয়ে বসে দায়িত্বও নিতে পারেননি। পৌর ভবনের সামনের সড়কে অস্থায়ী কার্যালয় বানিয়ে কার্যক্রম শুরু করতে হয়েছিল একরকম চ্যালেঞ্জ নিয়েই। তবে সেই চ্যালেঞ্জ সামলে এগিয়ে চলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির। আগের ৫ বছরে ২০০ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ছাড়াও ক্লিন ইমেজ তার জয়ে বড় ভূমিকা পালন করে। সন্ত্রাস, মাদক কারবারে মদদ দেওয়ার অভিযোগ ছিল না তার বিরুদ্ধে। পৌরসভাকে দুর্নীতি আর অনিয়ম থেকে দূরে রেখেছিলেন তিনি। তার প্রতিদান হিসেবেই দ্বিতীয়বার নগরমাতা হিসেবে তাকেই বেছে নেয় পৌরবাসী। তার জয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন নাগরিকরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এই মেয়রের উন্নয়ন-পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন মজিবুর রহমান খান।

মেয়র নায়ার কবির বলেন, প্রথমবার দায়িত্ব নিয়েছিলাম ঋণের বোঝা কাঁধে নিয়ে। তাছাড়া পৌরবাসীও ছিলেন নানা সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত। রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা, জলাবদ্ধতা, যানজট, অকার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ইত্যাদি নানা সমস্যা। গত ৫ বছর সেখান থেকে পৌরসভাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করি। তবে নির্বাচন নিয়ে সন্ত্রাস-গোলযোগের আশঙ্কা করছিলেন ভোটাররা। গত ১৮ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী অফিস ও মিছিলে ককটেল হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আতঙ্ক যায় আরো বেড়ে। তবে ২-১টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সুষ্ঠু ভোটের নজির সৃষ্টি হয়। নায়ার তার জয়ে পৌর নাগরিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

হেফাজত তা-বের মুখোমুখি হয়েও নায়ার কবির পৌরবাসীকে আরো বেশি সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে ছিলেন অটল। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে প্রায় ১৫০ বছর বয়সি এই পৌরসভায় প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন। ওই মেয়াদে ২০০ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা ছাড়াও ক্লিন ইমেজের কারণে পৌরবাসীর মধ্যে বিশেষ জায়গা করে নেন। পৌরসভাকে দুর্নীতি আর অনিয়ম থেকে দূরে রেখেছেন। দলীয় এবং পরিবারের প্রভাব পড়তে দেননি পৌরসভায়। সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসায় মদদ দেওয়ার মতো অভিযোগও উঠেনি নেই তার বিরুদ্ধে। ফলে দ্বিতীয় মেয়াদেও দলের মনোনয়ন তাকেই দেওয়া হয়।

বর্তমানে এই পৌরসভার প্রধান সমস্য কী জানতে চাইলে নায়ার কবির বলেন, আমি বলব পৌরসভার প্রধান সমস্যা ময়লা আবর্জনা। বাড়িঘর বেড়েছে। আগে ১০/১৫ ট্রাক ময়লা হতো, এখন প্রতিদিন ৩০ ট্রাক ময়লা হয়। অপসারণ বড় সমস্যা। তাছাড়া ময়লা আবর্জনা ডাম্পিং করার জন্য শহরে পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তবে শহরের ছয়বাড়িয়া এলাকায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকার একটি প্রকল্প চালু আছে। এটি হলে কিছুটা সুফল পাওয়া যাবে।

মেয়র বলেন, শহরে সুপেয় পানি, সড়ক বাতির অবস্থা ভালো। তবে রাস্তাঘাট ভাঙাচুরা আছে। পৌরসভার নিজস্ব অর্থে এসব মেরামত করাও সম্ভব হয় না। সরকারি বরাদ্দ যা আসে সেটি এই কাজের জন্য অপ্রতুল। আমার বিগত ৫ বছরে ইউজিপ প্রকল্প-৪ পাওয়া গেলে ৫ বছর চেষ্টা করেছি। এই প্রকল্পটি পাওয়া গেলে রাস্তাঘাট, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সমস্যা নিরসন করা যাবে।

শহরকে যানজট মুক্ত করা এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো ছাড়াও রাস্তাঘাট কীভাবে প্রশস্ত করা যায় সেটিও আমার লক্ষ্য আছে। তবে এসব সমস্যা পৌর নাগরিকদের সঙ্গে নিয়েই সমাধান করতে চাই। তাছাড়া পৌরসভার পুরাতন সুপার মার্কেটটি ভেঙে আমরা সেখানে আধুনিক একটি সুপার মার্কেট নির্মাণ করতে যাচ্ছি। এতে শহরের মানুষের কেনাকাটার সুবিধা বৃদ্ধি পাবে।

সরকারের বিভিন্ন ধরনের ভাতা সঠিকভাবে বিতরণ করার লক্ষ্যে ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছাড়াও বিভিন্ন এলাকার নেতৃস্থানীয় লোকজনের সমন্বয়ে তালিকা প্রণয়ন করে ভাতা বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। নারী উন্নয়ন ফেডারেশনের মাধ্যমে সেলাই, বিউটি পার্লারের কাজের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অসহায়-দরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্যও কাজ করে যাচ্ছি। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও রাজনৈতিক প্রভাব এবং স্বজনপ্রীতি মুক্ত হয়ে কাজ করে যাচ্ছি।

১৮৬৮ সালে স্থাপিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির। যার আয়তন ১৭.৫৮ বর্গকিলোমিটার। ১২টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এই পৌরসভার জনসংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষাধিক।

আগামীকাল পড়ুন

ঘাটাইল পৌর মেয়রের কথা

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close