মেয়র সোহেলের স্বপ্ন বদলে দেওয়ার...
আধুনিক নোয়াখালী পৌরসভা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। এখন জনগণের প্রত্যাশিত সেবা, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ, আলোকিত শহর, পৌরবাসীর উন্নত জীবন নিশ্চিত করাই আমার স্বপ্ন। এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে কাজ করে যাচ্ছি। গুরুত্ব দিয়েছি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর। পাশাপাশি ভাঙা ও জরাজীর্ণ রাস্তাঘাট, কালভার্ট ব্রিজ মেরামত করার ওপর। খুপরি ঘরের মতো অপরিকল্পিত গড়ে ওঠা স্থাপনা ভেঙে একাধিক টেকসই ও পরিকল্পিত বহুতল ভবন গড়ে তোলা। প্রতিটি ওয়ার্ডের জনতার সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার চেষ্টা করছি। আমার লক্ষ্য অতীতের দুঃসময়ের ক্ষতচিহ্ন মুছে নতুন করে পৌরসভাকে সাজানোর- বলছিলেন নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র শহীদ উল্যাহ খান সোহেল। প্রতিদিনের সংবাদের জেলা প্রতিনিধি জুয়ের রানা লিটনের সঙ্গে একান্ত আলাপ হয় তার।
আজকের আধুনিক নোয়াখালী পৌরসভা রূপান্তর করার পেছনে কোন বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েছিলেন জানতে চাইলে মেয়র সোহেল বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, পৌরসভার দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনে আমরা ব্যাপক কাজ করেছি। শহরে এখন জলাবদ্ধতা নেই। তারপরও এর স্থায়ী সমস্যা সমাধানে মাস্টারপ্লানের মাধ্যমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা চালু করা, জনগণের জন্য বৃহৎ আকারের মনোরম পার্ক তৈরি করা। বিশেষ করে নাগরিক অধিকারের প্রতি সর্বক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা।
শহীদ উল্যাহ খান সোহেল নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। হরিনারায়ণ ইউনিয়ন উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও নোয়াখালী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। ৯০ দশকে গণতন্ত্রে আন্দোলনে নোয়াখালীতে আলোচিত ছাত্র নেতাদের মধ্যে প্রথম সারির একজন। রাজনীতি করতে গিয়ে বহুবার নির্যাতিত হয়েছেন এবং কারাবরণ করেছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের আদর্শের রাজনীতিতে দীক্ষিত এই নেতা ছাত্র জীবনেও ছিলেন সাহসী, সংগ্রামী ও ত্যাগী। কর্মীদের যেকোনো বিপদ-আপদে শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে এড়িয়ে যেতেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির দুঃসময়ে শত ষড়যন্ত্রের মুখেও থমকে দাঁড়াননি তিনি; সাহস নিয়ে এগিয়েছেন সামনের দিকে। আর তারই প্রতিফলন ঘটেছে গেল নির্বাচনে।
নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ রোডের ঐতিহ্যবাহী খান বাড়ির সন্তান। বাবা মরহুম আজমল খান একজন সৎ ও সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। শহিদ উল্যাহ খান সোহেল ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ১৯৮৯ সালে নোয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত এজিএস ছিলেন। ১৯৯০ সালে একই কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সাল থেকে টানা কয়েক দফা শহর ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৯৮ সালে নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার মধ্যে দিয়ে জেলা নেতা হিসেবে আর্বিভাব ঘটে তার। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০৮ সালে নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি নোয়াখালীর রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের সদস্য, জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য, জেলা কারা পরিদর্শক, নোয়াখালী পাবলিক কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য। ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান মেসার্স খান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। এ ছাড়াও তিনি জেলার বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।
পৌরসভার নির্বাচনে পুনরায় মেয়র হলে আপনার কী কী পরিকল্পনা রয়েছে জানতে চাইলে শহীদ উল্যাহ খান সোহেল বলেন, আগামীতে যদি আমার দল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে মনোনয়ন দেয়, আর জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করেন, তাহলে আমার পরিকল্পনা রয়েছে, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ওপর আরো জোর দেওয়া। এছাড়া বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দেব। পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় আরো বহুতল মার্কেট নির্মাণ করব।
মেয়র নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী এবং কেন- এমন প্রশ্নে মেয়র বলেন, আমি আগেও বলেছি দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস আমি যেভাবে পৌরবাসীর সার্বিক উন্নয়নে কাজ করেছি, তার প্রতিদান হিসেবে জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে মেয়র নির্বাচিত করবে। পৌরবাসীর সর্বোচ্চ নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে আমার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্যই জনগণ আমাকে পুনরায় নির্বাচিত করবে বলে দৃঢ়বিশ্বাস করি।
প্রসঙ্গত, ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠিত নোয়াখালী জেলার ঐতিহ্যবাহী প্রথম শ্রেণির পৌরসভা এটি। ২০১৬ সালের নির্বাচনে শহীদ উল্যাহ খান সোহেল মেয়র নির্বাচিত হন। তার দায়িত্ব নেওয়ার পরই পাল্টে যেতে শুরু করে পৌরসভার সার্বিক অনিয়ম ও অব্যবস্থপনার চিত্র। অবহেলিত জনসমাজের দীর্ঘদীনের প্রত্যাশিত জীবন ব্যবস্থায় আসে আধুনিকতার ছোঁয়া। এ পৌরসভার সর্বক্ষেত্রে লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। খুপরি ঘরের মতো অপরিকল্পিত গড়ে ওঠা স্থাপনা ভেঙে একাধিক টেকসই ও পরিকল্পিত বহুতল ভবন গড়ে তুলেছেন মেয়র সোহেল।
আগামীকাল পড়ুন
কুয়াকাটা পৌর মেয়রের কথা
"