সিলেট প্রতিনিধি

  ১১ জুন, ২০২১

ঘন ঘন ভূমিকম্পে সিলেটে সতর্কতা

সিলেটে সম্প্রতি কয়েক দফা ভূমিকম্পের পরপরই নড়েচড়ে বসেছে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ঘন ঘন ভূমিকম্পে বিষয়ে করণীয় নিয়ে প্রতিদিনই বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের খোঁজ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া নগরীর সব ভবনের সক্ষমতা পরীক্ষা করে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিতকরণের জন্য মাঠে নেমেছে গবেষক দল।

এর আগে সিলেটে ভূমিকম্প হলেও বেশিরভাগের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের শিলং ও মেঘালয় অঞ্চলে। সম্প্রতি কয়েক দফা ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেটের ডাউকি। গত সোমবার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দক্ষিণ সুরমার জালালপুর ইউনিয়নে। এরপর থেকেই মূলত উৎপত্তিস্থল নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয় সিলেটজুড়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল না খুঁজে প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া দরকার। কারণ উৎপত্তিস্থল চিহ্নিত করতে অনেক গবেষণা এবং সময় সাপেক্ষ। সেই হিসাবে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া ভালো হবে। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসাব নগরের বন্ধ থাকা ছয়টি মাকের্টসহ ২৫টি ভবন এখনই খুলে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি ঝুঁকি বিবেচনায় আগামী ছয় মাসের মধ্যে নগরীর সব ভবন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে মাঠে নামছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বিশেষজ্ঞ দল।

জানা গেছে, এই মুহূর্তে বিশেষজ্ঞরা ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণার চেয়ে ভূমিকম্প ঝুঁকির শহরে মানুষ বাঁচানো বা সম্ভব্য ক্ষয়ক্ষতি কীভাবে কমিয়ে আনা যায় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কাজ শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে আগামী ছয় মাসের মধ্যে নগরীর সব ভবনের সক্ষমতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রতিবেদন জমা দেবেন। চিহ্নিত করবেন ঝুঁকিপূর্ণ সব ভবন।

সিসিক সূত্রে জানা গেছে, শাবিপ্রবির সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ (সিইই) ও পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষকরা গতকাল বিকাল থেকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে জরিপ শুরু করেন। তারা এই ভবনগুলো করে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে এসব ভবন কতটুকু ঝুঁকিপূর্ণ- এ নিয়ে সিসিককে পরামর্শ দেবেন। তাদের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মার্কেট খোলা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সিসিক।

সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যরা গতকাল সকালে ও বিকালে ঝুঁকিপূর্ণ কয়েকটি মার্কেট পরিদর্শন করেন। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনের ভেতর যতগুলো ভবন আছে সব পরীক্ষা করা হবে। সিসিকের সমন্বয়ে আমরা কাজটি শুরু করেছি। এটা আমাদের পক্ষে একা করা সম্ভব না। তাই সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও ছাত্রদেরও নেওয়া হবে। সবাই মিলে কাজটি করব। এ ক্ষেত্রে সব ভবন পরীক্ষা শেষ করতে হয়ত ছয় থেকে আট মাস সময় লাগতে পারে।

তিনি আরো বলেন, ভূমিকম্পের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ফল্ট সেটি ডাউকি। সে হিসেবে এ ফল্ট যেকোনো সময় ছয় মাত্রার ভূমিকম্প তৈরি করার শক্তি রাখে। নতুন কোনো ফল্ট তৈরি হয়েছে কি না সেটিও গবেষণা প্রয়োজন। সেটি নিয়েও কাজ হবে। আপাতত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি জরুরি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close