নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ জুন, ২০২১

মৃত্যু ১৩ হাজার ছুঁইছুঁই, দৈনিক শনাক্তও বাড়ল

দেশে বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) মৃত্যু পৌঁছে গেছে ১৩ হাজারের কাছাকাছি। আর দৈনিক শনাক্তও বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত) আরো ২ হাজার ৫৭৬ জনের মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। গতকাল বৃহস্পতিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এর আগে এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ২৮ এপ্রিল, সেদিন ২ হাজার ৯৫৫ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়ার কথা জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। আর গত বুধবার শনাক্ত হয়েছিল ২ হাজার ৫৩৭ জন নতুন রোগী। গত এক দিনে নতুন আক্রান্তদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগী বেড়ে ৮ লাখ ২০ হাজার ৩৯৫ জন হয়েছে। আর মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ১২ হাজার ৯৮৯ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৪৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্ত হার দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ১২ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ড অনুযায়ী, কোনো দেশে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে কি না, তা বোঝার একটি নির্দেশক হলো রোগী শনাক্তের হার। কোনো দেশে টানা দুই সপ্তাহের বেশি সময় পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে ধরা যায়।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। তারপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সংক্রমণ। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।

এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ আবার বেড়ে যায়। মার্চের প্রথমার্ধেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। বাড়তে থাকে মৃত্যুর সংখ্যাও। গত ২৬ মার্চের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনের মৃত্যু খবর দেওয়া হয়, সেখানে ১৯ এপ্রিলের বুলেটিনে আগের ২৪ ঘণ্টায় ১১২ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়। দেশে করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ওই দিনই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়।

করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, যা এখনো বহাল। এ বিধিনিষেধে মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে গত মাসের মাঝামাঝিতে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে ‘লকডাউন’ ঢিলেঢালা হয়ে পড়ে। ঈদ কেন্দ্রিক কেনাকাটা ও যাতায়াতে বিপুল লোক সমাগম দেখে জনস্বাস্থ্যবিদরা এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আশঙ্কা করেছিল, ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে। এদিকে ভারত সীমান্তবর্তী ১৫টি জেলায় রোগী দ্রুত বাড়ছে। কয়েক দিন ধরে দেশেও করোনা সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনামুক্ত হয়েছেন ২ হাজার ৬১ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৩০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৯ হাজার ৮৬৯ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪৪৭টি। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ। দেশে এ পর্যন্ত মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬১ লাখ ২৬ হাজার ২৩৮টি। মোট পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪০ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৮ জন। এ ছাড়া চট্টগ্রামে ১২, রাজশাহীতে ৮, খুলনায় ৬, সিলেটে ২ এবং রংপুরে ৪ জন মারা গেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close