হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

  ০৯ মে, ২০২১

মেঘের ঘনঘটায় হালদায় মা মাছের আনাগোনা

চৈত্র ও বৈশাখ অনাবৃষ্টিতে কেটেছে হাটহাজারী, রাউজান ও ফটিকছড়ি উপজেলা। গতকাল শনিবার আকাশে মেঘের ঘনঘটায় আর বজ্রপাত ও বৃষ্টির আভাস দেখে হালদার মা মাছের আনাগোনা বেড়েছে। আর আশায় বুক বাঁধছেন ডিম আহরণকারীরা।

এরই মধ্যে দমকা হওয়ার সঙ্গে কয়েক দফা হালকা ও মাঝারি বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আবহাওয়া অফিস গতকাল সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ময়মনসিংহ, সিলেট, চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বর্ধিত পাঁচ দিনে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

আমাবস্যা তিথির জোতে আকাশে ভারী মেঘের আনাগোনা ও বৃষ্টির আলামত দেখে বিভিন্ন শাখা খাল ও নদী থেকে কার্প জাতীয় মা মাছ হালদায় চলে আসে। নদী ও খালগুলো হলো কর্ণফুলী, সাঙ্গু, মাতামুহুরী, চেংখালী, পোড়াকোপালী, সোনাইখাল, তেড়পাড়িখাল, ডোমখালী খাল প্রভৃতি।

এভাবেই শুরু হয় দক্ষিণ এশিয়ার এই প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদায় মা মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুম। গত কয়েক বছর ধরে নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও মাছের মজুদ বাড়ানোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ব্যাপক হারে নদীতে পোনা অবমুক্ত করা হচ্ছে।

প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে ইঞ্জিনচালিত নৌকা, বালু উত্তোলনের ড্রেজার ও অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকার কমে এসেছে। অবৈধভাবে মাছ শিকারের চেষ্টা চালালে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা এবং এনজিও সংস্থা আইডিএফের স্বেচ্ছাসেবকদল সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। এদিকে মৌসুম শুরুর আভাস পেয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ডিম আহরণকারীরা।

ডিম আহরণকারী গড়দুয়ারার কামাল সওদাগর ও মধ্যম মাদার্শার আশু বড়ুয়া জানান, চৈত্র মাসের শেষে ও বৈশাখ মাসের প্রথমে হালদা নদীতে মা মাছের ছাড়া ডিমের পোনা দ্রুত বাড়ে। তাই ডিম আহরণকারীরা বৃষ্টির আবাস পেয়েই ডিম আহরণের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকে। আসন্ন আমাবস্যা তিথির সময় পুনরায় বজ্রসহ প্রবল বর্ষণের ফলে নদীতে ঢলের সৃষ্টি হলে মা মাছ ডিম ছাড়াতে পারে বলে তারা আশা করছেন।

জানা গেছে, ডিম আহরণকারীরা সরকারি হ্যাচারিতে ডিম থেকে রেণু উৎপাদনের জন্য নদীর দুই পাড়ে স্থাপিত মাটির কুয়া ও সরকারি হ্যাচারি সংস্কারের কাজ সম্পন্ন করে রেখেছে। একসময়ের সনাতনী পদ্ধতির মাটির কুয়া আধুনিকায়ন করা হয়েছে। আকাশে মেঘের ঘনঘটায় সব প্রস্তুতি শেষ।

বেশ কয়েক বছর ধরে নদীর দখল-দূষণ, মাছ চোরদের তৎপরতা, নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন ও ইঞ্জিনচালিত নৌকা চলাচলে ডিমের পরিমাণ কমে আসছিল। সরকারি প্রশাসন ও বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার তৎপরতায় ডিমের পরিমাণ বিগত কয়েক বছরের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে। নদীর পাড়ের সিসি ক্যামরায় স্থাপন করায় মা মাছের নিরাপদ বিচরণ নিরাপদ হয়েছে। মা মাছের সংখ্যাও বেড়েছে। তাই এবার বেশি পরিমাণে ডিম পাওয়ার আশা সংশ্লিষ্টদের।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close