শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

  ০১ মার্চ, ২০২১

দখল-দূষণে মরছে লবলং

সবুজের সমারোহে প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর একটি এলাকা গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা। যদিও বর্তমানে শ্রীপুর প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য নয়, শিল্পনগরী হিসেবে বেশি পরিচিত। শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে ওঠায় এ এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য বেড়েছে, উন্নত হয়েছে স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার মান। এর বিনিময়ে স্থানীয় মানুষের পাশাপাশি এ এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশকে দিতে হচ্ছে চরম মূল্য। দখলে ও শিল্প বর্জ্যরে দূষণে মরতে বসেছে এক সময়ের পরিষ্কার পানির নদী লবলং।

উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের দক্ষিণ বেলতলী গ্রাম ও শ্রীপুর পৌরসভার বেড়াইদেরচালা (দোখলা বাজার) বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে লবলং নদী। ৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ নদীটি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার খিরু নদীর সংযোগস্থল থেকে উৎপত্তি হয়ে গাজীপুরের তুরাগ নদীতে গিয়ে মিলেছে। নদীর ওই অংশে ভরাট করে নদীর গতিপথ ব্যক্তি মালিকানা জমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত করতে বাধ্য করানোর অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নদীটির ওই অংশের প্রায় ২০০ মিটার জায়গা ভরাট করে কৃষিজমি নির্মাণ করে স্থানীয় কয়েকজন কৃষক। এতে খালটি গতিপথ হারিয়ে অন্যের কৃষিজমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। দীর্ঘদিন ওই নদীটি শাহ নেওয়াজ বাবলু, আবদুল গণি, আবদুল কাদির ও মমতাজ উদ্দিনসহ স্থানীয় আরো কয়েকজন কৃষকের জমির ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে নদী গতিপথ হারায়। পরে ওই কৃষক তাদের কৃষিজমিতে চাষাবাদ করতে না পারায় ক্ষতির ম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানান। স্থানীয়রা নদীটিকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।

কৃষক আবদুল গণি জানান, কৃষিজমি চাষাবাদ তাদের আয়ের অন্যতম উৎস। এ সময়ের স্বচ্ছ নদীটির পানি আজ বিভিন্ন কারখানার কেমিক্যাল বর্জ্যে দূষিত হয়ে গেছে। খালের ওই অংশ ভরাট হওয়ায় বর্জ্য মিশ্রিত পানি উপচে পড়েছে। এতে উর্বরতা হারিয়ে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে আশপাশের প্রায় ৪০০ বিঘা কৃষিজমি।

শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও তাসলিমা মোস্তারী জানান, এই বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভূমি অফিসারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে তারা প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু করেছে। দ্রুতই খাল উদ্ধার এবং সংস্কার কাজ শুরু হবে।

শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা নাসরীন বলেন, নকশা অনুযায়ীই নদী প্রবাহিত হবে। কেউ যদি নদীটির জায়গা দখল করে রাখে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে নদীটি দখলমুক্ত করা হবে। আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলেছি এক সপ্তাহের মধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close