নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২১

সাংবাদিকদের স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

নাগরিকসেবায় কোনো আপস নয়

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে যারা ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলসহ খাল দখল করে অবকাঠামো নির্মাণ করেছে, সেগুলো উচ্ছেদ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে এবং নাগরিকসেবা দিতে কোনো আপস করা হবে না।

গতকাল রবিবার মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন এবং প্রাকৃতিক খালগুলোর ব্যবস্থাপনাকল্পে সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে আয়োজিত সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।

এর আগে সভায় সভাপতির বক্তব্যে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঢাকাকে শুধু বাসযোগ্য নয়, দৃষ্টিনন্দন করে বিনোদনকেন্দ্রেও পরিণত করা হবে।

মন্ত্রী বলেন, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, ঢাকা জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের সমন্বয়ে, সিএস এবং আরএস দেখে ধাপে ধাপে সব জায়গা চিহ্নিত করা হবে। এরপর নদী-খাল দখল করে যত অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে, সেগুলো উদ্ধার করতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এ ক্ষেত্রে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নেওয়া হবে।

গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং অন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের অধীন যেসব খাল রয়েছে, সেগুলো সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে কি নাÑ এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিষ্ঠান অধিক দায়িত্বশীল হবে বলেই ওয়াসা থেকে খালের দায়িত্ব দুই সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হয়েছে। অন্য প্রতিষ্ঠানের অধীনে থাকা খালের দায়িত্বও দুই সিটি করপোরেশনকে দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এ লক্ষ্যে একটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক হবে।

সভায় মহানগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন এবং প্রাকৃতিক খালগুলোর ব্যবস্থাপনাকল্পে দুই সিটি করপোরেশন গৃহীত নানা কর্মপরিকল্পনার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী জানান, দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে যেসব মতামত, কর্মপরিকল্পনা এবং প্রকল্পের কথা জানিয়েছেন এর বাইরেও কিছু প্রকল্প এবং কর্মপরিকল্পনা নিতে হবে। এসব কর্মপরিকল্পনা এবং প্রকল্প সমন্বয় করে গ্রহণ করতে হবে।

এর আগে সভায় সভাপতির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেতনা ও আদর্শ বাস্তবায়ন এবং দেশের মানুষকে উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করতে কারো সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না। ঢাকাকে শুধু বাসযোগ্য নয়, দৃষ্টিনন্দন করে বিনোদনকেন্দ্রে পরিণত করা হবে। তিনি বলেন, শুধু বৃষ্টির পানি যাওয়ার এবং খালগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার জন্য সিটি করপোরেশনের কাছে এটা হস্তান্তর করা হয়নি। খাল হস্তান্তরের উদ্দেশ্য হলো যেসব খালের জায়গা অবৈধভাবে দখল হয়েছে, তা দখলমুক্ত করে সংস্কার করা এবং নগরীকে জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করা।

মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ওয়াসার কাছে ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনা থাকা অবস্থায় যেসব নতুন প্রকল্প পাস হয়েছে এবং যেগুলো চলমান রয়েছে, সেগুলো দুই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। এ সময় খালগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করতে ওয়াসার কাছ থেকে প্রাপ্ত যন্ত্রপাতির পাশাপাশি আরো নতুন যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে বলে দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে জানালে মন্ত্রী নতুন যন্ত্রপাতি কেনার সিদ্ধান্ত দেন।

সভায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন দীর্ঘমেয়াদি (আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে), মধ্যমেয়াদি (আগামী দুই বছরের মধ্যে) এবং স্বল্পমেয়াদি (আগামী ছয় মাসের মধ্যে) কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের কথা উল্লেখ করে। এ ছাড়া দক্ষিণ সিটি করপোরেশন চলতি বছর থেকে শুরু করে ২০২৪ সাল পর্যন্ত নিজস্ব এবং সরকারি অর্থায়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা জানায়।

সভায় উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, রাজউক চেয়ারম্যান সাঈদ নূর আলম, দুই সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close