পার্থ মুখোপাধ্যায়, কলকাতা থেকে

  ২০ এপ্রিল, ২০২০

ভারতে করোনায় আক্রান্ত ১৫ হাজার

কলকাতায় মাস্ক না পরায় ছেলেকে খুন করল বাবা

মাস্ক না পরায় ছেলেকে খুন করে উত্তর কলকাতায় শ্যামপুকুর থানায় আত্মসমর্পণ করেছে বাবা। পুলিশ জানিয়েছে, শোভাবাজার লেনের বাসিন্দা, ৭৮ বছরের ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, প্রতি দিন বিকালে ছেলে শীর্ষেন্দুকে নিয়ে বেড়াতে বেরোন। ছেলে শারীরিকপ্রতিবন্ধী এবং মৃগী রোগী। শনিবারও তিনি বেরোনোর সময়ে ছেলেকে মাস্ক পরতে বলেন। কিন্তু ছেলে কিছুতেই তা পরতে রাজি হননি। বার বার বলেও রাজি না হওয়ায় ছেলের গলায় কাপড় পেঁচিয়ে খুন করেছেন বলে দাবি করেন বৃদ্ধ। বংশীধরবাবুর কাছ থেকে ওই বর্ণনা শুনে শ্যামপুকুর থানার অফিসাররা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, ঘরের মাটিতে পড়ে রয়েছে শীর্ষেন্দুর দেহ আর বিছানায় শুয়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধা। তিনি শীর্ষেন্দুর মা। সেরিব্রাল অ্যাটাকের পর পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে বছর ১৮ ধরে বিছানায় শয্যাশায়ী তিনি। মায়ের সামনেই ছেলেকে বংশীধরবাবু খুন করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এরপরই পুলিশ শীর্ষেন্দুর দেহ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় ময়নাতদন্তের জন্য। ঘটনাস্থলে পৌঁছে লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা।

এসএসকেএমের চিকিৎসকসহ ১৪ জন কোয়ারেন্টাইনে

করোনা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসায় এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসকসহ ১৪ জন স্বাস্থ্যকর্মীকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে উত্তর কলকাতায় সূর্য সেন স্ট্রিটের বাসিন্দা পঞ্চাশোর্ধ্ব ওই ব্যক্তিকে একটি বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে এসএসকেএমে ভর্তির জন্য নিয়ে যান তার পরিজনরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রোগীকে প্রথমে জরুরি বিভাগে দেখানো হয়। এরপর ইমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ডে রোগীকে ভর্তি করে শুরু হয় চিকিৎসা। পর দিন বিকালে রোগীকে বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোলজিতে স্থানান্তরিত করানো হয়। স্থানান্তরিত প্রক্রিয়ায় ছিলেন হাসপাতালের সাপোর্ট স্টাফ। শ্বাসকষ্ট কমছে না দেখে রোগীকে সন্ধ্যায় কোভিড হাসপাতাল, এম আর বাঙুরে স্থানান্তরিত করানো হয়। সেদিনই রোগীর মৃত্যু হয়। এসএসকেএমের পাশাপাশি নাইসেডে ওই রোগীর নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। দুই পরীক্ষাগারের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ হওয়ায় এসএসকেএমের আটজন চিকিৎসক, তিনজন নার্স এবং তিনজন সাপোর্ট স্টাফকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে আরো ১৩২৯ জনের করোনা সংক্রমণের খবর মিলেছে। রোববার সকালেই ১৫ হাজারের গন্ডি ছাড়াল ভারত। ফলে সারা দেশে এখন আক্রান্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ৭০৭। এক দিনে ১ হাজার ৩২৯ জনের শরীরে এই মারণ ভাইরাসের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মৃতের সংখ্যাও। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে সারা দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৫০৭। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ২ হাজার ২৩১ জন রোগী। খবর শনিবার গভীর রাতে গুরুগ্রামে মৃত্যু হয় এক করোনা রোগীর। তার বয়স হয়েছিল ৫০ বছর। এ দিন নতুন করে আরো ৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আগ্রায়। সব মিলিয়ে সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন ২৪১ জন। তবে করোনা সংক্রমণের ভরকেন্দ্র মহারাষ্ট্র। গোটা দেশের নিরিখে আক্রন্তের সংখ্যা ও মৃত্যু, দুটি ক্ষেত্রেই শীর্ষে রয়েছে ওই রাজ্যটি। এরপরই রয়েছে দিল্লি। এ ছাড়াও তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান ও গুজরাটে।

অন্যদিকে চীন থেকে আসা অ্যান্টিবডি কিট রাজ্যগুলোকে পাঠানো শুরু করেছে কেন্দ্র। করোনা-প্রতিরোধের লক্ষ্যে তৈরি জাতীয় টাস্কফোর্সের পরামর্শ মেনে যে রাজ্যগুলোতে রোগী তথা হটস্পটের সংখ্যা বেশি, কিট পাঠানোর প্রশ্নে সেই রাজ্যগুলোকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দাবি, দেশের অন্তত ২২টি জেলায় গত ১৪ দিনে নতুন সংক্রমণের খবর নেই। যার মধ্যে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি ও কালিম্পং। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেরই নদিয়া, বিহারের পটনা এবং হরিয়ানার পানিপথে ১৪ দিনের পরও সংক্রমণ ফিরে এসেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close