আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৪ এপ্রিল, ২০২০

কোভিড-১৯ ও ছোট্ট ভিলওয়ারা...

ভারতের রাজস্থানের ছোট শহর ভিলওয়ারা। এই শহর এখন আলোচনায়। কারণ প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সফল হয়েছে। এরই মধ্যে ভিলওয়ারা মডেল নামে পরিচিত হয়ে ওঠা এই পদ্ধতির মূল কথা হল ‘রুথলেস কন্টেইনমেন্ট’ অর্থাৎ কঠোরভাবে মানুষজনকে ঘরের ভেতর আটকে রাখা। কিন্তু কীভাবে ভিলওয়ারাতে এই মডেল সফলভাবে প্রয়োগ করা হয়েছে এবং এর সুবিধা-অসুবিধাগুলোই বা ঠিক কী? রাজস্থানের রাজধানী জয়পুর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দূরের শহর ভিলওয়ারা। এটি ভারতের অন্যতম প্রধান টেক্সটাইল হাব হিসেবেও পরিচিত। ভারতে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রথম দিকে এই শহরটিই ছিল দেশের প্রধান হটস্পট।

গত ১৯ মার্চ ভিলওয়ারাতে প্রথম সংক্রমণের মাত্র চার দিনের ভেতর সেখানে ১৩ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। গত মাসের শেষের দিকে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২৬। কিন্তু এরপরই দেখা যায় একটা নাটকীয় পটপরিবর্তন। পরে ১০ দিনে পুরো জেলায় নতুন করে মাত্র একজন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৭ জন।

রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেন, করোনার প্রকোপ শুরু সঙ্গে সঙ্গে আমরা ভিলওয়ারাতে এমন একটা পরিবেশ সৃষ্টি করি যে, কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আর তাতে আমরা সফলও হয়েছি।

তিনি বলেন, সরকারি বাস, বেসরকারি যানবাহন বা ভ্যানের চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যত পজেটিভ কেস এসেছিল, তার প্রত্যেকটার ক্লাস্টার ম্যাপিং তৈরি করা হয়েছে। পুরো জেলায় হাজার হাজার লোককে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের সহযোগিতায় পুরো ব্যবস্থাটা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে ভাইরাস কিছুতেই ছড়াতে না পারে। ২২ মার্চের মধ্যেই রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন ৮৫০ টিম গড়ে তুলে লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সার্ভে শুরু করে।

প্রায় সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি বাড়ির দরজায় গিয়ে তারা প্রায় ২৪ লাখ লোকের ওপর জরিপ চালায়। যাদেরই ফ্লুর মতো উপসর্গ দেখা গেছে তাদেরই হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি তারা সেই নির্দেশ মানছেন কি না তা দেখতে একটি অ্যাপের মাধ্যমে তাদের গতিবিধিও ট্র্যাক করা হয়েছে।

প্রথম দিন থেকেই পুরো শহরে কারফিউ জারি করা হয়। জেলার সীমান্তে সিল থাকলেও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। ফোন করলে পুলিশ গিয়ে বাড়ি বাড়ি খাবার-দাবার ও ওষুধের হোম ডেলিভারি দিয়ে আসছে।

একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে করোনা ধরা পড়া প্রত্যেক রোগীর ক্ষেত্রেই। এর সঙ্গে প্রতিদিন চলতে থাকে জীবাণুমুক্ত করার অভিযান।

ভিলওয়ারা জেলার চিফ মেডিকেল অফিসার ড. অরুণ গৌড় বলেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্য ছাড়া এই কঠোর অভিযান কিছুতেই সফল হতো না। তারা প্রশাসনকে দারুণ সহযোগিতা করেছেন। তবে তাদের এখনো বেশ কিছুদিন এই নিয়মগুলো মেনে চলতে হবে বিশেষ করে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, ঘর থেকে না বের হওয়া এবং হাত পরিষ্কার রাখার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close