রুবেল মিয়া নাহিদ

  ২৮ আগস্ট, ২০২৩

প্রত্যন্ত অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে...

ইরানুল ইসলাম পড়াশোনা করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রান্তিক অঞ্চলে শিক্ষা ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষিতকরণ এবং অসহায়, দুস্থ, সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে ২০১৯ সালের একদল স্বেচ্ছাসেবী তরুণদের নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছেন মানবিক পাঠশালা। কক্সবাজারের চকরিয়ায় ‘মানবতার শুভেচ্ছা বার্তা’ স্লোগানে মাত্র ১৫ জন সদস্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল সংগঠনটি। বর্তমানে তাদের স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা প্রায় ৫০০ জনের অধিক। তারা প্রত্যেকে সৃজনশীল চিন্তা, নিজস্ব বুদ্ধিমাত্তা দিয়ে ও স্বেচ্ছাসেবী কাজের মাধ্যমে সমাজের অবহেলিত মানুষের কল্যাণে কাজ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এরই মধ্যে বেশ কিছু জনকল্যাণমূলক কাজ করে প্রশংসার স্মারক রেখেছে সর্বমহলে।

এসব স্বপ্নবাজ তরুণ করোনাকালে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি ও মাস্ক বিতরণ, মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান এবং লকডাউন চলাকালে নন-কোভিড, প্রসূতি ও মুমূর্ষু রোগীদের বিনা মূল্যে যাতায়াতসেবা দেওয়ার প্রয়াসে চালু করেছিলেন মানবিক পরিবহন। এ ছাড়া প্রজেক্ট-আলোকবর্তিকার মাধ্যমে আর্থিক সমস্যায় পড়াশোনা বন্ধ হওয়া শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে অধ্যয়ন। প্রজেক্ট-আহারের আওতায় বিভিন্ন এতিমখানা ও বিভিন্ন এলাকায় জনসাধারণের মধ্যে খাবার সরবরাহ করা। অবহেলায় থাকা বিভিন্ন শহীদ মিনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ সংস্করণের কাজ করেছে তারা। আইনজীবীর সমন্বয়ে প্রজেক্ট-মানবিক ডেস্ক দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন, যৌন হয়রানি, ইভটিজিং ও বাল্যবিবাহ বন্ধে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং অসহায় ও অসচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের বিনা মূল্যে আইনি সহয়তা প্রদান। দুস্থ জনসাধারণ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের ঈদবস্ত্র বিতরণ। ঈদুল আজহায় কোরবানির পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় প্রচার-প্রচারণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে মানবিক পাঠশালা। জরুরি ব্লাড ডোনেশনে মানবিক ব্লাড ডোনার’স টিম গঠন করেছে মানবিক পাঠশালা। যেখানে প্রায় ১০০ জনেরও বেশি রক্তদাতা প্রস্তুত রেখেছে তারা। প্রতি মাসে প্রায় ৩০-৫০ ব্যাগ ব্লাড ম্যানেজ করে দিচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট সিটিজেন গড়ার লক্ষ্যে সমাজের অক্ষরজ্ঞানহীন বয়স্ক ও পথশিশুদের নিয়ে সাক্ষরতা কার্যক্রম, প্রযুক্তিনির্ভর জনশক্তি সৃষ্টিতে আইসিটিবিষয়ক কর্মশালা, মেধা অন্বেষণ বৃত্তি পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের পাঠাভ্যাস উন্নয়ন কর্মসূচি, ফ্রি ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছে তারা। এ ছাড়া সর্বসাধারণের জন্য একটি গ্রন্থাগার এবং সুবিধাবঞ্চিতদের বিনা মূল্যে অধ্যয়নে বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এই সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা। সংগঠনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে মানবিক পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা ইরানুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক অনুপ্রেরণায় একদল স্বপ্নবাজ স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে সমুদ্র জনপদে মানবতার শুভেচ্ছা বার্তা ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করছি। করোনাকালে আর্থিক অভাবে অনেকেই পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন, মূলত সে সময় এক-দুজনের পড়াশোনার ব্যয়ভার বহন করতে গিয়ে আজ আমরা হাজারো মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে সক্ষম হয়েছি। মানবিক মূল্যবোধ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে অসচ্ছল বা সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি। মহান সৃষ্টিকর্তা যত দিন বাঁচিয়ে রাখবেন, সামর্থ্য অনুযায়ী বছরে অন্তত একটি কাজ করি। এর পরও মানবিক কাজ করতে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close