সামিয়া রহমান

  ১৭ অক্টোবর, ২০২২

আলোর মশাল সানরাইজ

একদল তারুণ্যের ম্যাজিকেল নেতৃত্বে হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করছে সানরাইজ সোশ্যাল অর্গানাইজেশন। ২০১৭ সালের ২০ জুলাই একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় সংগঠনটির পথচলা হয়। যাত্রাপথ খুব একটা মসৃণ না হলেও অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে বর্তমানে সংগঠনটি কুমিল্লাসহ চার জেলা ও এক উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলজুড়ে ৫টি ইউনিট নিয়ে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী ও হতদরিদ্রের বেঁচে থাকতে, অগ্রসর করতে এবং তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে।

কোভিড-(১৯) করোনায় চার জেলা ও এক উপজেলায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জীবাণুনাশক স্প্র্রে কার্যক্রম ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে জীবাণুমুক্তকরণ কার্যক্রম বিভিন্ন গণপরিবহন, রেলওয়ে স্টেশন, অফিস, পুলিশ বক্স, এটিএম বুথ, মার্কেট ও বাস কাউন্টারে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয় এবং সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য সবাইকে আহ্বান জানানোসহ ২০০০ মাস্ক বিতরণ করা হয়। সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটি তথা লকডাউনের কারণে নিম্ন আয়ের এবং হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ৮০০ প্যাকেট রান্না করা খাবার ও ৩০০ খাদ্যসামগ্রী ভ্যানে করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিতরণ করাসহ এই সংগঠনের প্রজেক্টভিত্তিক কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রায় ৮০ হাজার মানুষকে সেবা প্রদান করেছে সংগঠনটি। সেসঙ্গে হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু শিরোনামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মকে আরো বেশি জানানোর জন্য বঙ্গবন্ধুর জীবনের নানা ঘটনা নিয়ে কবিতা আবৃত্তি ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে সংগঠনটি।

প্রজেক্টভিত্তিক কার্যক্রমে এই পর্যন্ত ২০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ, ৩০০০ হাজার ইফতার ও ইফতারসামগ্রী বিতরণ, ৫০০ ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষাসামগ্রী বিতরণ, ৩০ হাজার মানুষের বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, করোনায় অ্যাম্বুলেন্স সেবা, ১১ হাজার ঈদবস্ত্র বিতরণ ও ৬০০ সুবিধাবঞ্চিত শিশুর হাতে দুর্গা উৎসব উপলক্ষে নতুন জামা (বস্ত্র) বিতরণ করা হয়। এ ছাড়াও গত ২৯/০১/২০২১ তারিখে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার অন্তর্গত কোনাখালী ইউনিয়নে আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হওয়া (খোলা আকাশের নিচে মানবিক জীবনযাপন করা) ১৮টি পরিবারের মাঝে বস্ত্র, শুকনা খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় ও দৈনন্দিন ব্যবহারের প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনের সহসভাপতি খলিলুর রহমান আগামীর পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের অগ্রসর করতে যা যা প্রয়োজন আমরা সবটুকুই করার চেষ্টা করছি। তাদের জীবনমান উন্নয়নে ভবিষ্যতে আরো বেশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। আর কেবল চার জেলা ও এক উপজেলায় নয়, আস্তে আস্তে বাংলাদেশের সব জেলায় আমরা আমাদের সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে চাই।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান জয় বলেন, হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করতে এসে বিভিন্ন সময় অনেক প্রতিবন্ধকতা ও অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছি; তবে সেই সমস্যাগুলো প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের দৃঢ় পদক্ষেপসহ কোনো না কোনো মানুষের সহযোগিতায় সফলভাবে সমাধান করতে পেরেছি। তাই আমি স্বপ্ন দেখি জাগবে স্বপ্ন, বাঁচবে মানবতা এই স্লেøাগানে এগিয়ে চলার।

প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মো. আফজাল খানের কাছে সংগঠনের কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুরুতেই হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের শিক্ষায় সহযোগিতা নিয়ে কাজ করলেও এখন কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে। বর্তমানে স্বেচ্ছায় রক্তদান, বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ ও ডায়াবেটিস নির্ণয়, রমজান উপলক্ষে ইফতার ও ইফতারসামগ্রী বিতরণ, দুর্গাপূজায় বস্ত্র বিতরণ, ঈদুল ফিতরে বস্ত্র বিতরণ, ঈদুল আজহা উপলক্ষে মিট ডিসটিভিউশন, বৃক্ষরোপণ, মানসম্পন্ন শিক্ষা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, হতদরিদ্র শিশুদের জন্য শিক্ষাসামগ্রী এবং স্কুল থেকে ঝরে পড়া সুবিধাবঞ্চিত কিশোর-কিশোরীদের পুনরায় শিক্ষা ও সুরক্ষায় সহায়তাসহ ১২টি প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছি আমরা। আগামীতেও করে যাব ইনশাআল্লাহ।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close