reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২২ আগস্ট, ২০২২

কয়েক ছত্র জীবন পত্র

জীবনের বাঁকে বাঁকে এমন অনেক ঘটনাই আছে যা নিয়ে বিস্ময়ের সীমা নেই। সেসব ঘটনার সঙ্গে আবার জড়িয়ে আছে নানা রহস্য। বিজ্ঞানের মাধ্যমে আমরা অনেক কিছু জানতে পেরেছি। তারপরও অনেক রহস্য এখনো আমাদের অজানাই রয়ে গেছে। এমন কয়েকটি বিষয় নিয়ে লিখেছেন লিটন সামন্ত

পৃথিবীতে পানি এলো কীভাবে ?

পৃথিবীর ৩ ভাগ জল আর এক ভাগ স্থল এ কথা আমরা অনেক আগে থেকেই শুনে এসেছি। কিন্তু পৃথিবীতে যে কীভাবে পানি এলো বা পানি তৈরি হলো সে ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা অনেক রকম কথা বলেছেন। পৃথিবী এক সময় বসবাসের উপযোগী ছিল না। এই পৃথিবী এক সময় ছিল একটি জলন্ত অগ্নিপিন্ড। অত্যন্ত গরম ও লাভা জাতীয় পদার্থ দিয়ে গঠিত ছিল আমাদের পৃথিবী। কিন্তু এসব জানার আগে জানা দরকার পৃথিবী কোথা থেকে এলো। পৃথিবী প্রথমে ছিল নক্ষত্রেরই একটা অংশ। আর এই নক্ষত্রের কোনো অংশের চ্যুতির ফলে পৃথিবীর অবস্থান তৈরি হয়। কোটি কোটি বছরের বিবর্তনের ফলে পৃথিবীর উপরিভাগ শীতল হতে থাকে। কিন্তু পৃথিবীতে পানি কীভাবে এলো? মনে রাখতে হবে পানি এক প্রকার যৌগ। অর্থাৎ দুটি মৌল- হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন এই দুই প্রকারের মৌল দিয়ে পানি গঠিত। আর পানি গঠিত হয়েছে দুই পরমাণু হাইড্রোজেন এবং এক পারমাণু অক্সিজেনের সমন্বয়ে। যখন পৃথিবীর উপরিভাগ শীতল থেকে বরফ হয়, এর এক পর্যায়ে বরফ গলে পানির সৃষ্টি হয়।

আমরা কেন তৃষ্ণা অনুভব করি?

মানব দেহের প্রায় ৭০ শতাংশই পানি দ্বারা গঠিত। তার থেকে মাত্র ১ শতাংশ পানি কমে গেলেই আমরা তৃষ্ণার্ত অনুভব করে থাকি। আমরা প্রতিদিন প্রায় ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করে থাকি। পানি আমাদের দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী পানি আমরা খেতে পারি না বা খাই না। আমরা শুধু তৃষ্ণা পেলেই পান করি। প্রতিদিন আমরা যে পরিমাণ পানি পান করি তার ২ থেকে ৩ লিটার দেহ থেকে বিভিন্ন উপায়ে বের হয়ে যায়। গরমের সময় ঘামের মাধ্যমে পানি বের হয়, তখন বেশি বেশি তৃষ্ণা অনুভূত হয়। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস গ্রন্থি/গ্লান্ড থেকেই আমাদের পানি পানের অনুভূতি তৈরি হয়। মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস গ্রন্থির দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশে একটি ল্যাটারাল হাইপোথ্যালামাস, অপরটি ভেন্ট্রোমিডিয়াল হাইপোথ্যালামাস। আর এ দুটি অংশ যথাক্রমে মানুষের ক্ষুধা বা পানির তৃষ্ণা নিয়ন্ত্রণ করে। মানুষের রক্তের শতকরা প্রায় ৫৫ শতাংশ পানি। কিডনি তার রেনিন নামক এনজাইমের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পানির পিপাসার নির্দেশ দেয়। তখনই আমরা তৃষ্ণা অনুভব করি।

মানুষ রাগ করে কেন?

প্রাচীন গ্রিক দেবতা অ্যারিসকে বলা হয় রাগের দেবতা। গ্রিকদের বিশ্বাস মানুষের রাগের ক্ষেত্রে তার অর্থাৎ অ্যারিসের অবদান অপরিসীম। মানুষের ক্রোধান্বিত হওয়ার পেছনে দায়ী হলো অনিয়ন্ত্রিত অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ। বর্তমান সময়ে মানুষের মাঝে যে প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছে তাতে সহজেই ক্ষুদ্র বিষয়ে রেগে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মানুষের রাগও বৃদ্ধি পেয়েছে। ছেলেদের অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ বেশি হয়, তাই ছেলেদের রাগ/ক্রোধ বেশি হয় মেয়েদের তুলনায়। মানুষের মধ্যে যাদের O+ রক্ত, তাদের রাগ বেশি হয়ে থাকে। কারণ তাদের মস্তিষ্কে অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ বেশি হয়। মানুষের কর্ম ব্যস্ততা রাগের ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে মানুষের অবসরে থাকার প্রবণতা হ্রাস পেয়েছে। যার ফল স্বরূপ যে কোনো অতি তুচ্ছ ঘটনায় রেগে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। অনিদ্রা ও দুশ্চিন্তা মানুষের ক্রোধ বা রাগকে বাড়িয়ে তোলে।

ইভটিজিং কথাটি কীভাবে এলো?

সাম্প্রতিক সময়ে ইভটিজিং কথাটি সবার কাছেই একটি অত্যধিক পরিচিত শব্দ। আর এই ইভটিজিং কথাটি শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম তথা দুর্গম অঞ্চলেও শোনা যায়। বিগত কয়েক দশক আগে থেকেই ইভটিজিং কথাটি সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু সবার জানাটা অতি জরুরি যে, ইভটিজিং কথাটি অতি পুরোনো একটি শব্দ। মূলত ইভ শব্দটি এসেছে সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই। এডাম এবং ইভ থেকে “God made them and they were put to live in the garden of Eden/ইডেন। অর্থাৎ স্বর্গের বাগানে এডাম ও ইভকে রাখা হয়েছিল। এরপর এডাম তন্দ্রাছন্নতা কাটিয়ে ইভের দিকে দৃষ্টি রেখে ইভের যে সব রূপের প্রশংসা করেছিল এবং বিভিন্ন ধরনের উক্তি করেছিল সেটাই হলো ইভটিজিং। অর্থাৎ ইভকে কেন্দ্র করে এডামের মন্তব্যকেই ইভটিজিং বলে।

কিন্তু কালের বিবর্তনে ইভটিজিংয়ের বিষয়টি এখন আর সহনীয় পর্যায়ে নেই। বিভিন্ন স্থানে মেয়েরা ইভটিজিং বা উত্ত্যক্তের শিকার হয়। যার ফলে এক ধরনের অপ্রীতিকর পরিবেশ তৈরি হয়। মেয়েদের সম্পর্কে কোনো মন্তব্য বিশেষ করে বাজে মন্তব্যই ইভটিজিং হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়। মানুষ যে ইভটিজিং করে থাকে তা অনেকটা মনস্তাত্ত্বিক বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। ইড হলো মানব মস্তিষ্কের সেই অংশ, যেখানে মানুষের কুপ্রবৃত্তি, কামননা বাসনা নিয়ন্ত্রণ করে। এবং ইড সক্রিয়তার কারণে মানুষ ইভটিজিং করে।

লেখক : তথ্য অফিসার

পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড

[email protected]

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close