আবু সুফিয়ান শুভ

  ২০ মার্চ, ২০২৩

সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের

চৈত্রের এ সময়েও যখন গরমে জবুথবু হওয়ার কথা, সেখানে সারা বাংলাদেশ টের পাওয়া যাচ্ছে শীতের আমেজ। সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি। কখনো মুষলধারে আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি। আর এ কন্ডিশন অনেকটাই পরিচিত মনে হচ্ছে আইরিশদের। আর এমনটা অব্যাহত থাকলে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে কিছুটা হলেও বাড়তি সুবিধা পেতে পারে সফরকারী আয়ারল্যান্ড দল। আজ দুপুর ২টা একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আইরিশদের মুখোমুখি হবে তামিমের দল। এই ম্যাচ জিতলেই সিরিজ নিশ্চিত। শিষ্যদের নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হেরাথের ভাষ্য, ‘প্রথম ম্যাচের জয়টা আমাদের অনেক আত্মবিশ্বাস দেবে। এখন ওদের বিপক্ষে কীভাবে জিততে হয়, সে অভিজ্ঞতা আছে আমাদের। এটা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

আগের দিন বাংলাদেশের বিপক্ষে লড়াইটাও করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। রেকর্ড ব্যবধানে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। সিরিজে টিকে থাকতে আজ সোমবার জয়ের বিকল্প নেই আইরিশদের সামনে। তার আগে ভাগ্যের ছোঁয়া পাওয়ার আভাস মিলছে তাদের। টানা বৃষ্টিতে সিলেটের কন্ডিশনে পেতে যাচ্ছে নিজ দেশের ছায়া।

আইসিসি ইভেন্টে বরাবরই ব্যাটিং সহায়ক উইকেট দেখা যায়। আসন্ন ভারত বিশ্বকাপেও এমনটাই হওয়ার কথা। আর এই আসরের জন্য প্রস্তুত হতে এখন থেকেই ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে খেলার অনুশীলন করা জরুরি। এমন পরিকল্পনা থেকেই হয়তো বা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ব্যাটিং সহায়ক উইকেট রাখার চেষ্টা করছে বিসিবি। দলের স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথের কথায় এমনটারই ইঙ্গিত মিলেছে।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে স্পিনবান্ধব উইকেটে খেলা হলেও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নিখাদ ব্যাটিং উইকেটে খেলা হয়েছে। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ৩৩৮ রান সংগ্রহ করেছিল। ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটারও বলেছেন এটা ব্যাটিং স্বর্গ ছিল। তবে পরের দুই ওয়ানডেতে কেমন উইকেটে খেলা হবে তা স্পষ্ট করেননি হেরাথ। তার মতে, দল হিসেবে সাফল্য পেতে হলে ব্যাটার-বোলার সবাইকেই প্রস্তুত করতে হবে। তাই বোলারদের কথাও বিবেচনায় রেখেই উইকেট বানানো উচিত। এ প্রসঙ্গে টাইগার স্পিন কোচ বলেন, ‘আমরা জানি না কি ধরনের উইকেট পাব, বিশেষ করে সামনে যেহেতু বিশ্বকাপ আসছে। আমাদের যেকোনো উইকেটে খেলার জন্য তৈরি থাকতে হবে। এখানে উইকেট থেকে স্পিনাররা খুব বেশি সাহায্য পায়নি। কিন্তু আমরা এই উইকেটেও ভালো বোলিং করেছি।’ সোমবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। এই ম্যাচের জন্য ব্যাটার ও বোলারদের তৈরি থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেরাথ। তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না কি ধরনের উইকেট পাব। যেকোনো উইকেটের জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা বোলার ও ব্যাটার সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’

এদিকে প্রায় নিয়মিত বৃষ্টি, কনকনে শীত আর ঠাণ্ডা বাতাস আয়ারল্যান্ডের চিরাচরিত চিত্র। প্রচণ্ড গরমের সময়ের থাকে ১২ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা। এমন কন্ডিশনে বিধ্বংসী হয়ে ওঠে দলটি। তাদের কন্ডিশন থেকে এর আগে সিরিজ জিতে ফিরতে পারেনি টাইগাররা। সিলেটের কন্ডিশন যদি রবিবারের মতোই থাকে তাহলে উল্টো চ্যালেঞ্জিং হতে পারে টাইগারদের জন্য।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে আগামীকালও থাকতে পারে একই রকম পরিস্থিতি। তাই সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুশীলনের ফাঁকে সংবাদ সম্মেলনে আশার কথাই শোনালেন আইরিশ কোচ হেনরিক মালান, ‘এটা (কন্ডিশন) অনেকটা আমাদের কন্ডিশনের মতো, তাই না? আশা করি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে এবং আশা করি এটা (বল) এদিকওদিক মুভ করবে।’

আয়ারল্যান্ডের বোলিং আক্রমণ পেস নির্ভর। ঠাণ্ডা আবহাওয়াতে জ্বলে উঠতে পারেন তাদের পেসাররা। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে পেস আক্রমণে দারুণ করছে বাংলাদেশও। আগের দিনই রেকর্ড জয়ে বড় ভূমিকা ছিল পেসারদের। আইরিশদের মিডল অর্ডার ধসিয়ে দিয়েছেন তাসকিন-ইবাদতরাই। তাই আইরিশ পেসারদের মতো বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিতে পারেন তারাও। মালানের ভাবনায় রয়েছে তাসকিন-ইবাদতরাও, ‘দেখেন, বাংলাদেশেরও তিনজন মানসম্পন্ন সিমার আছে, সেটার দিকেও তাকাতে হবে। গত রাতে তারা তুলে ধরেছে যে তারা খুব ভালো অলরাউন্ড দল হয়ে উঠেছে। এখন আর শুধু স্পিন খেলানো নয়। তাদের দারুণ একটি পেস আক্রমণভাগ রয়েছে।’ তবে মেঘলা আকাশ ও বৃষ্টি থাকলে বাড়তি সুবিধা পাবেন তা জোর দিয়েই বললেন আইরিশ কোচ, একটু মেঘলা ও বৃষ্টি হলে আমাদের জন্য একটু বেশিই আরামদায়ক হবে। আপনার সামনে যা আছে আমাদের খেলতে হবে, আমরা বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় আছি।

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
বাংলাদেশ,আয়ারল্যান্ড,ওয়ানডে
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close