ক্রীড়া ডেস্ক
ক্রিকেটের ফিউচার ট্যুর প্ল্যান প্রকাশ, ব্যস্ত সময় পার করবে বাংলাদেশ
নারীদের পর এবার পুরুষ ক্রিকেটের ফিউচার ট্যুর প্ল্যান, এফটিপি প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল, আইসিসি। বুধবার (১৭ আগস্ট) ২০২৩ থেকে ২০২৭ মৌসুমের জন্য ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম প্রকাশ করেছে। এই সময়ে ৭৭৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হবে। এর মধ্যে ১৭৩টি টেস্ট, ২৮১টি ওয়ানডে এবং ৩২৩টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবে, যা আইসিসি ইভেন্টগুলোর অংশ। এবারের তৈরি করা এই এফটিপিতে ব্যস্ত সময় পার করবে বাংলাদেশ। সব দল মিলিয়ে আসন্ন চার বছরের চক্রে মোট ৮৩ ম্যাচ বাড়িয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আসন্ন ফিউচার ট্যুর প্ল্যানে তিন সংস্করণ মিলিয়ে মোট ১৪৪টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা লাল-সবুজরা এই সংস্করণে খেলবে সর্বোচ্চ ৫৯ ম্যাচ। অন্যদিকে ৩৪টি লম্বা দৈর্ঘ্যরে ম্যাচের বিপরীতে মাঠে নামবে ৫১ টি-টোয়েন্টিতে। এর বাইরেও বিভিন্ন ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে বাড়তি ম্যাচ এবং এশিয়া কাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলবে টিম বাংলাদেশ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে নতুন এফটিপি শুরু হবে বাংলাদেশের। ইংলিশ মুলুকে গিয়ে তিনটি করে ওয়ানডে এবং বিশ ওভারের ম্যাচ খেলবে রাসেল ডোমিঙ্গোর শিষ্যরা, যা শেষ হবে অস্ট্রেলিয়া সফর দিয়ে। ক্রিকেট পরাশক্তিদের মাটিতে ২০২৭ সালের মার্চে খেলবে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ। এর আগে সবশেষ ২০০৩ সালে তাসমান পাড়ের দেশে এই ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলেছিল বাংলাদেশ।
এই চার বছরে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি করে সাদা পোশাকের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও সাউথ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে দুটি করে টেস্ট সিরিজে অংশ নেবে লাল-সবুজের দল।
আসন্ন চক্রে প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত এই দুই দল শুধু একটিমাত্র কুড়ি ওভারের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে, সেটা সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে অনুষ্ঠিত সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে।
তবে মার্চের মাঝামাঝি থেকে মে মাস পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক খেলা হবে না। এই সময়ে বিসিসিআই আইপিএল আয়োজন করবে। পাকিস্তান পিএসএল একই সময়ে আয়োজন করবে।
ক্রিকবাজের খবরে জানা গেছে, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বর্ডার-গাভাস্কার সিরিজে প্রতিটি সিরিজে টেস্টের সংখ্যা চার থেকে পাঁচে উন্নীত হবে। শেষবার দুই দল পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মুখোমুখি হয়েছিল ১৯৯২ সালে। এই চক্রে প্রতি বছর অস্ট্রেলিয়ার ভারত ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি সিরিজ (সব ফরম্যাটে) খেলার কথা রয়েছে। এই সময়ে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত সবেচেয়ে বেশি টেস্ট খেলবে।
এফটিপিতে আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি চক্রে রয়েছে, চারটি আইসিসি ইভেন্ট ছাড়াও, ভারতে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ রয়েছে। ২০২৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হবে। ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পাকিস্তানে আয়োজন হবে। ভারত ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে ২০২৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক হবে এবং ২০২৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং নামিবিয়ায় ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ হবে।
ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ২০২৩-২৫ চক্রে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোম সিরিজ এবং অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর করবে।
ভারত ও পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজে একে অপরের বিপক্ষে খেলবে না। পাকিস্তান আসন্ন এফটিপিতে ১২টি সদস্য দেশের মধ্যে ১০টির বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রস্তুত। পাকিস্তান চার বছরে ২৭টি টেস্ট, ৪৭টি ওয়ানডে এবং ৫৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে। ২০২৩ এশিয়া কাপ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করবে তারা।
২০২৩-২৪ মৌসুমে আফগানিস্তানের ছয়টি টেস্ট খেলার কথা রয়েছে। তিনটি ঘরের মাঠে, জিম্বাবুয়ে ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এবং তিনটি অ্যাওয়ে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। পরের মৌসুমে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড সফরে যাবে। পরে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং আয়ারল্যান্ডে টেস্ট খেলার কথা রয়েছে।
অন্যদিকে আয়ারল্যান্ড পরবর্তী চক্রে ১৪টি টেস্ট খেলবে। আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪টি, বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩টি এবং শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি করে টেস্ট খেলবে তারা।
আইসিসির মহাব্যবস্থাপক ওয়াসিম খান বলেছেন, ‘আগামী চার বছর ধরে এই এফটিপি তৈরির জন্য আমাদের সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই। তিনটি প্রাণবন্ত ফরম্যাট রয়েছে। আইসিসি গ্লোবাল ইভেন্ট, শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক এবং ঘরোয়া ক্রিকেট এই এফটিপি সব ক্রিকেটকে বিকাশের অনুমতি দেবে।’