reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ২৮ মে, ২০২২

রিয়াল–লিভারপুল: কে হবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন?

প্রতীকী ছবি।

ইউরোপীয় অঞ্চলের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও মর্যাদার লড়াই আজ রাতে। উইয়েফা ইউরোপা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপার এই লড়াইয়ে বাংলাদেশ সময় রাত ১টায় মুখোমুখি হচ্ছে লিভারপুল ও রিয়াল মাদ্রিদ। রিয়াল এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ রেকর্ড ১৯ বারের ফাইনালে ১৩ বারই চ্যাম্পিয়ন। লিভারপুল মহাদেশীয় এই শ্রেষ্ঠত্বেল লড়াইয়ে ৯ বার ফাইনালে ওঠে ৬ বার ট্রফি ঘরে তুলেছে।

ইংল্যান্ড ও স্পেনের জায়ান্ট ক্লাব দু’টি এর আগে দু’বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়ে সমানে সমান। অর্থাৎ ১৯৮১ সালের ফাইনালে রিয়ালকে হারিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন হয় লিভারপুল। ৩৭ বছর পর ২০১৮ সালে দ্বিতীয় সাক্ষাতে লিভারপুলকে হারিয়ে প্রতিশোধ নেয় রিয়াল।

চার বছর পর উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আজ রাতে কী হবে; ’৮১ নাকি ’১৮-এর পুনরাবৃত্তি! বিশ্বের কোটি কোটি ফুটবলভক্ত সেই মাহেন্দ্রক্ষণ দেখার অপেক্ষায় এখন।

আজ প্যারিসে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বে তৃতীয়বার দেখা হচ্ছে দুই দলের। চ্যাম্পিয়নস লিগে সর্বশেষ যে সাতবার ফাইনাল উঠেছে রিয়াল, ম্যাচ শেষে প্রতিবারই হাতে তুলেছে চ্যাম্পিয়নের ট্রফি। এবার কি সেই ধারা ভঙ্গ করতে পারবে লিভারপুল? সেই প্রশ্নের উত্তর জানার আগে ফাইনালে দুই দলের আগের দুই দ্বৈরথের গল্প শোনা যাক…

লিভারপুল ১: ০ রিয়াল মাদ্রিদ ২৭ মে ১৯৮১, প্যারিস। রিয়াল মাদ্রিদ শেষ কবে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল হেরেছে? এই প্রশ্নের উত্তর ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ৪১ বছর আগের প্যারিসে। পার্ক দে প্রিন্সেসের সেই ফাইনালটা তৃতীয়বার ইউরোপ–সেরা বানিয়েছিল লিভারপুলকে। অভূতপূর্ব এক কীর্তিতে সেদিন নাম লিখিয়েছিলেন ইংলিশ ক্লাবটির কোচ বব পেইসলি। ইউরোপিয়ান কাপের ইতিহাসে প্রথম কোচ হিসেবে তৃতীয়বার দলকে চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিলেন পেইসলি। তাতে টানা পঞ্চমবার ইংল্যান্ডে গিয়েছিল ইউরোপ–সেরার মুকুট।

৮১ মিনিটে রে কেনেডির থ্রোইন খুঁজে পায় অ্যালান কেনেডিকে। রিয়ালের বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে ঢুকে যাওয়া অ্যালানকে আটকাতে পারেননি রিয়াল ডিফেন্ডার রাফায়েল গার্সিয়া কোর্তেস। কোর্তেসকে পেরিয়েই গোলে শট অ্যালান কেনেডির। রিয়াল গোলরক্ষকের ঠেকানোর সামর্থ্য ছিল সেই শট। ওই একমাত্র গোলটাই শিরোপা জয়ের উদযাপনে মাতিয়ে দেয় পার্ক দে প্রিন্সেসের একাংশকে ‘কপ’ বানিয়ে ফেলা লিভারপুল সমর্থকদের।

গোল শোধের জন্য মরিয়া রিয়ালের আক্রমণের ঢেউ এরপর আছড়ে পড়তে থাকে লিভারপুলের রক্ষণভাগে। তবে সেই চেষ্টা সফল হয়নি লিভারপুল গোলরক্ষক অগাস্টিন বাধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে যাওয়ায়। এর আগে দুই দলই বেশ কয়েকবার গোলের সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। কিন্তু দিন শেষে সেই মিসগুলো শুধু রিয়ালই মনে রেখেছে। রাখবেই–বা না কেন, ইউরোপের সবচেয়ে সফল ক্লাবটিকে যে এরপর আবার ফাইনালে উঠতে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৭ বছর।

রিয়াল মাদ্রিদ ৩: ১ লিভারপুল ২৬ মে ২০১৮, কিয়েভ। চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় ফাইনাল মঞ্চস্থ হয়েছিল কিয়েভে। মনে রাখার মতো কত ঘটনা। রিয়াল মাদ্রিদ ডিফেন্ডার সের্হিও রামোস ‘জুডো–স্টাইলে’ মোহাম্মদ সালাহর কাঁধের হাড় সরিয়ে ফেললেন। সালাহর যন্ত্রণাকাতর মুখটাই শেষ পর্যন্ত ম্যাচে লিভারপুলের প্রতীক হয়ে থাকে।

অবশ্য রামোস নন, ইয়ুর্গেন ক্লপের দলকে সবচেয়ে বড় যন্ত্রণাটা উপহার দেন লিভারপুলের এক খেলোয়াড়—লোরিস কারিয়াস। সেদিন কী যেন হয়েছিল জার্মান গোলরক্ষকের। রিয়ালের করা ৩ গোলের ২টিই যে কারিয়াসের উপহার। ৫১ মিনিটে সতীর্থের দিকে তাঁর ছোড়া বলটি পাশেই দাঁড়ানো করিম বেনজেমা পাঠিয়ে দিলেন জালে।

চার মিনিট পর সাদিও মানে সমতা এনে দেন। ৬১ মিনিটে মাঠে নামার দুই মিনিট না যেতেই দুর্দান্ত এক অ্যাক্রোবেটিক শটে গোল করে বসেন রিয়াল উইঙ্গার গ্যারেথ বেল। চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোলের তকমা পেয়ে গেছে বেলের এই গোল।

৮৩ মিনিটে ওয়েলস তারকা পেয়ে যান দ্বিতীয় গোল। এই গোলে বেলের চেয়ে কারিয়াসের অবদানই বেশি। প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে লিভারপুল গোল লক্ষ্য করে নিরীহ এক শট নিয়েছিলেন বেল। সেই শট ধরতে গিয়ে উল্টো নিজেদের জালেই ঢুকিয়ে দিলেন কারিয়াস। ওই গোলের পর দেখার মতো হয়েছিল কারিয়াসের চেহারা। রিয়ালের অবশ্য সেই চেহারা দেখার ফুরসত ছিল না। একটু পরেই যে ১৩তম বারের মতো ইউরোপ–সেরা হওয়ার উৎসবে মাতে দলটি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
লিভারপুল,রিয়াল মাদ্রিদ,ইংল্যান্ড,স্পেন,উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ,ফুটবল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close