বাংলাদেশের আজ ইংলিশ পরীক্ষা
বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৪টায়।
সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হেরে আসরে পিছিয়ে আছে টাইগাররা। অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে অনেকটাই এগিয়ে ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে নিয়মিত রান করে চলেছেন নাঈম শেখ। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত খেলেছেন তিনটি ম্যাচ, দুটি ম্যাচেই হাঁকিয়েছেন অর্ধশতক।
নাঈম জানিয়েছেন, ব্যক্তিগত লক্ষ্যের সঙ্গে উইকেট ও কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগিয়েও ভালো করার চেষ্টা করছেন তিনি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একাদশে সুযোগ না পাওয়া নাঈম ওমানের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েই জ্বলে ওঠেন। পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে কোনো রান করতে না পারলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হাঁকিয়েছেন অর্ধশতক। নাঈমের স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও অন্তত টপ-অর্ডারকে দৃঢ়তা দিচ্ছেন বলে তার প্রশংসা না করেও উপায় নেই।
নাঈম জানালেন, রান করাই তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাতে আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়। আর নিজের পরিকল্পনাতেই ব্যাটিং করার চেষ্টা করেন। নাঈম বলেন, ‘প্রত্যেক ব্যাটসম্যানেরই ব্যক্তিগত পরিকল্পনা থাকে, আমারও আছে। উইকেট, কন্ডিশন দেখে পরিকল্পনার সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে ব্যাটিং করতে হয়।’
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ঘরোয়া ক্রিকেটের তফাতটা এখন বেশ ভালোই বোঝেন এই বাঁহাতি ওপেনার। বিশ্বকাপের জন্য তাই নিজের পারফরম্যান্সে রেখেছেন বাড়তি মনোযোগ। তিনি বলেন, ‘সব সময় আমি চাই রান করতে। রান করলে যেকোনো ব্যাটসম্যানেরই আত্মবিশ্বাস খুব ভালো থাকে। চেষ্টা করি সব সময় রান করার জন্য। বিশেষ করে কোনো ইভেন্ট থাকলে বেশি মনোযোগ থাকে। ঘরোয়া ক্রিকেটের চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মনোযোগ বেশি রাখতে হয়।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের পরাজয়ের পর অনেকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন বাংলাদেশ দলের বোলিং পরিকল্পনা। ম্যাচ ১৯তম ওভারে গড়ালেও সাকিব আল হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসুম আহমেদের একটি করে ওভার বাকি ছিল। বাংলাদেশের এমন পরিকল্পনার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন সাবেক ক্রিকেটার শাহরিয়ার নাফীস। নাফীসের মতে, নির্ধারিত গেম প্ল্যান অনুযায়ী এগোনোর কারণেই সাকিবকে নবম ওভারের পর দীর্ঘক্ষণ বোলিং দেওয়া হয়নি, একইভাবে মুস্তাফিজ-নাসুমের বদলে বল করেছেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বা আফিফ হোসেন ধ্রুব।
নাফীসের ভাষায়, ‘অনেকের মনে হয়তো একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে কেন সাকিব, নাসুম, মুস্তাফিজ তাদের বোলিং কোটা পূরণ করল না। কেন আফিফ এবং রিয়াদ বোলিংয়ে এলেন।’ তার যুক্তি, ‘টিভিতে খেলা দেখে আমার যতটুকু মনে হয়েছে, শারজার এক পাশের উইকেটের খেলা হয়েছে। মাঠের একপাশ একটু বড় ছিল, অন্যপাশ ছোট ছিল। ব্যাটিংয়ে ছিল দুই বাঁহাতি চারিথ আসালাঙ্কা ও ভানুকা রাজাপক্ষে।’
‘শারজায় আমরা জানি মারলেই বড় বড় ছক্কা হয়। মেহেদী বোলিং শেষ করে যাওয়ার পর খুব সম্ভবত রিয়াদ চিন্তা করেছেন, আমি যদি দুই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে ডানহাতি অফ স্পিন বোলিং করাই এবং ব্যাটসম্যানকে যদি বড় শট খেলতেও হয়, অফ সাইডে খেললে বড় পাশে খেলবে এবং লেগ সাইডে খেললে ঝুঁকি নিতে হবে। তখন টপ এজ বা এলবিডব্লিউ হওয়ার সুযোগ থাকে।’
পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ দল সফল হলে বোলিং নিয়ে সমালোচনা হতো না বলেও মনে করেন নাফীস। একই সঙ্গে লিটন দাসের ক্যাচ ছাড়ার বিষয়টিকেও দায়ী করেছেন তিনি। নাফীস বলেন, ‘আফিফ কিন্তু একটি সুযোগ তৈরিও করেছিলেন। ওই ক্যাচ হাতছাড়া হওয়ায় জুটি ভাঙেনি। হয়তো জুটি ভেঙে গেলে সাকিব, নাসুম, মুস্তাফিজকে আনা হতো। খেলায় একটা পরিকল্পনা থাকে। সেটা সফলও হতে পারে, ব্যর্থও হতে পারে। সফল হলে বাহবা দেই। আমার মনে হয়েছে এটাই পরিকল্পনা ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে পরিকল্পনাটি আজ কাজ করেনি।’