ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ০৩ আগস্ট, ২০২১

বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া প্রথম টি-টোয়েন্টি

ভয়ডরহীন ক্রিকেটের প্রতিশ্রুতি

২০০৫ সালে কার্ডিফে ওয়ানডে আর ২০১৭ সালে ঢাকায় টেস্ট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছিল বাংলাদেশ। সব সংস্করণ মিলিয়ে ক্যাঙ্গারু বাহিনীর সঙ্গে মোট ৩১ দেখায় ওই দুইবারই মুখে হাসি ফুটেছিল টাইগারদের। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে জয় এখনো অধরা। অবশ্য দেখাই হয়েছে কেবল চারবার। তাও চার বিশ্বকাপের আসরে। এবারই প্রথম দ্বি-পাক্ষিক টি-টোয়েন্টি সিরিজে মুখোমুখি দুদল। ঘরের সুবিধা নিয়ে আজ থেকে শুরু হতে চলা বহুল প্রতীক্ষিত সেই সিরিজে বাজিমাত করার বড় সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে।

অস্ট্রেলিয়ার বাংলাদেশ সফর মূলত আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে কিছু ক্রিকেটারকে বাজিয়ে দেখার। বাংলাদেশের দিক থেকে সেটা ভিন্ন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল আছে টি-টোয়েন্টিতে শক্ত ভিত গড়ে তোলার চেষ্টায়। সংক্ষিপ্ত সংস্করণে নিজেদের ‘আনাড়ি’ অপবাদ ঘোচানোরও মিশন টাইগারদের।

ইনজুরি এবং বিশ্রাম মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া পাচ্ছে না তাদের প্রথমসারির কয়েকজন তারকাকে। স্টিভেন স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস, ঝাই রিচার্ডস, কেন রিচার্ডসন, অ্যারোন ফিঞ্চ, প্যাট কামিন্স—তালিকাটা বেশ বড়। প্রভাব ফেলা ক্রিকেটারদের মধ্যে সিরিজে বাংলাদেশও পাচ্ছে না তামিম ইকাল, মুশফিকুর রহিম, লিটন দাসের মতো খেলোয়াড়দের। অস্ট্রেলিয়ার তুলনায় অবশ্য সেটা কিছুই নয়।

এতজন না থাকায় মূলত ব্যাটিংয়ের দিক থেকে দুর্বল হয়ে পড়েছে অজিরা। সেই দুর্বলতা বোঝা গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে উড়ে গিয়েছিল তারা।

সেন্ট লুসিয়ায় যেসব উইকেটে অজি ব্যাটসম্যানরা ভুগেছেন, সেটাই আশা দেখাচ্ছে বাংলাদেশকে। কিছুটা মন্থর উইকেটে দুই ক্যারিবিয়ান স্পিনার হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র আর ফাবিয়ান অ্যালেন অজিদের বিপক্ষে ছিলেন বেশ সফল।

মিরপুর শেরেবাংলায় স্পিনারদের জন্য অনেক সহায়ক কন্ডিশনে সেই কাজটা আরো কঠিন হওয়ার কথা অস্ট্রেলিয়ার। বিশেষ করে নিজেদের মাঠে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ অজিদের জন্য হতে পারে বড় পরীক্ষা।

অবশ্য অস্ট্রেলিয়ান বোলিং আক্রমণও বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের জন্য বড় পরীক্ষার নামই। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে ঘাটতি থাকলেও সফরকারীদের বোলিং বেশ শক্তিশালী। পেস আক্রমণে আছেন মিচেল স্টার্ক, জশ হ্যাজলউডের মতো দুজন। স্কিল দিয়ে তারা যেকোনো উইকেটে হতে পারেন কার্যকর। বাংলাদেশের টপ অর্ডারকে তাই স্টার্ক-হ্যাজলউডের চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে।

অজিদের স্পিন বিভাগও যুতসই। দারুণ ছন্দে থাকা লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা এই বিভাগে দলের মূল ভরসা। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের লেগ স্পিন খেলার দুর্বলতা বিবেচনায় ম্যাথু ওয়েডকে ভরসা যোগাতে পারেন জাম্পা। ‘দুই অ্যাশটন’ অ্যাগার ও টার্নার বল টার্ন করাতে পারেন বেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও তারা খুব একটা খারাপ করেননি।

তবে নিজেদের মাঠে এসব স্পিনারদের সামলে নেওয়া উচিত বাংলাদেশের। নিজেদের ভালো সম্ভাবনা দেখলেও টাইগারদের নেতা মাহমুদউল্লাহর কণ্ঠ অবশ্য বেশ সতর্ক, ‘সেরা সুযোগ কি না, সেটা এ মুহূর্তে বলাটা কঠিন। কারণ, তারা খুব ভালো একটি দল। ভালো ক্রিকেট খেলেই ওদেরকে হারাতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা আমাদের স্কিলগুলো কত ভালোভাবে ম্যাচের দিন প্রয়োগ করতে পারি। ম্যাচের কন্ডিশন ও পরিস্থিতি অনুযায়ী আমরা নিজেদের কতটা প্রয়োগ করতে পারি। ওই জিনিসগুলোর ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার মনে হয় খুব ভালো একটা সিরিজ হবে। আমরা জিম্বাবুয়েতে সিরিজজুড়ে ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের আত্মবিশ্বাসও আছে। আমরা অপেক্ষায় আছি যেন আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেটটা খেলতে পারি।’

আজ সন্ধ্যা ৬টায় প্রথম ম্যাচে নামবে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া। আগামীকালই দ্বিতীয় ম্যাচ। পরশু বিরতি দিয়ে ৬ ও ৭ তারিখে আবার টানা খেলা। আর ৯ তারিখ হবে শেষ ম্যাচ। সবকটি ম্যাচই হবে মিরপুর শেরেবাংলায়।

পিডিএসও/হেলাল

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ক্রিকেট,টি-টোয়েন্টি সিরিজ,বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close