কিউই পেসে বিধ্বস্ত ভারত
লড়াইয়ের আগেই ভারতকে চোখরাঙানি দিচ্ছিল নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমণ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সেই চোখরাঙানিটাই করুণ বাস্তবতা হয়ে দেখা দিল বিরাট কোহলির দলের সামনে।
টেস্টের শেষ দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দলটি অলআউট হয়েছে ১৭০ রানে, সেই পেস আক্রমণে কুপোকাত হয়েই। তাতে নিউজিল্যান্ডের সামনে লক্ষ্য পড়েছে ১৩৯ রানের। এর ফলে টেস্ট শ্রেষ্ঠত্বের সুযোগটা হারানোর শঙ্কাও উঁকি দিচ্ছে ভারতের সামনে।
বৃষ্টিতে ভেসে গিয়েছিল টেস্ট শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের প্রথম দিন। তাতে সিদ্ধান্ত হয়, খেলা গড়াবে রিজার্ভ ডেতে। সেই বাড়তি এক দিনের খেলাই চলছে আজ। সেই বাড়তি একটা দিনই যে এত রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষা করছে, কে জানতো?
বৃষ্টির বাগড়া কেবল এক দিনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এরপরেও একটা দিন শেষ হয়েছে বৃষ্টির রাজত্বে। আলোস্বল্পতা, আরও খুচরো বৃষ্টি তো ছিলই। এর ফলে নিষ্প্রাণ ড্রকেই মনে হচ্ছিল 'টেস্ট বিশ্বকাপ' ফাইনালের নিয়তি।
সে সম্ভাবনা মাথায় নিয়েই ২ উইকেটে ৬৪ রান নিয়ে 'অতিরিক্ত' দিনের খেলা শুরু করে ভারত। কিন্তু প্রথম সেশনেই যেন পথ হারাল ভারত। কাইল জেমিসনের তোপে মধ্যাহ্ন বিরতির আগেই হাওয়া ভারতের অর্ধেক ব্যাটসম্যান। শুরুটা হয়েছিল কোহলিকে দিয়ে। দিনের ষষ্ঠ ওভারে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ফেরেন কোহলি। এক ওভার বিরতি দিয়ে জেমিসন আবারও ফিরলেন, এবার ফেরালেন ১৫ রান করা চেতেশ্বর পুজারাকে।
ঋষভ পান্তকে সঙ্গে নিয়ে এরপর কিউইদের তোপ ভালোই সামাল দিচ্ছিলেন অজিঙ্কা রাহানে। কিন্তু বিরতির ঠিক আগে তাকে ব্যক্তিগত ১৫ রানে ফেরান ট্রেন্ট বোল্ট। ভারত ১০৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে মধ্যাহ্ন বিরতিতে যায়।
এরপর পান্তের সঙ্গে মাত্রই র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে ওঠা রবীন্দ্র জাদেজার খানিকটা প্রতিশোধ। কিন্তু দুজনে মিলে ৩৩ রান করতেই তাদের জুটিতেও ধরে ভাঙন। ১৬ রান করা জাদেজাকে তুলে নেন নিল ওয়াগনার। ততক্ষণে শতরানের লিড অবশ্য পেরিয়ে গেছে ভারত।
পান্তের লড়াই এরপরও চলেছে কিছুক্ষণ, রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে সঙ্গে নিয়ে। কিন্তু বোল্টের এক ওভারের ঝড়ে দুজনকেই হারিয়ে বিপদটা আরও ঘনীভূত হয় ভারতের। ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪১ রান করে পান্ত ফেরেন, আউট হওয়ার আগে অশ্বিনের ঝুলিতে জমা পড়ে ৭ রান।
বাকি দুই উইকেট তুলে নিতেও তেমন ঘাম ঝরাতে হয়নি নিউজিল্যান্ডকে। সাউদির আরেক ওভারের ঝড়ে ব্যক্তিগত ১৪ রানে শামি ও রানের খাতা খোলার আগে যশপ্রীত বুমরাহ ফেরেন সাজঘরে। ১৪ রানের ব্যবধানে শেষ চার উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানে অলআউট হয় ভারত। লিডটা পায় মাত্র ১৩৮ রানের।
কিন্তু শেষ দিনে এসে কিউই পেসারদের দাপট এক ঝটকায় সে সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে। ভারতকে তারা রুখে দিয়েছে ১৭০ রানেই। ফলে চ্যাম্পিয়ন হতে তাদের প্রয়োজন ১৩৯ রান, হাতে আছে ৫৩ ওভার।
পিডিএসও/এসএম শামীম