নিজস্ব প্রতিবেদক
সংকটে ক্রেতার ‘ভরসা’নিম্নমানের প্রযুক্তি পণ্য
মহামারি করোনাভাইরাসের পর থেকে ল্যাপটপ, কম্পিউটারের দাম বাড়ছে। গত বছরের বাজেটে প্রযুক্তি পণ্যের ওপর ভ্যাট ও ইউরোপে যুদ্ধের কারণে পণ্যের দাম চলে গেছে ক্রেতার নাগালের বাইরে। সাধারণ কনফিগারেশনের ল্যাপটপ ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকার নিচে মিলছে না। অন্যদিকে মনিটর, সিপিউর দামও আকাশচুম্বি। রয়েছে প্রসেসর, প্রিন্টার, র্যাম ও অ্যাকসেসরিজ সংকট। অন্যদিকে দাম বাড়ায় পাড়া-মহল্লার কম্পিউটার দোকানে নন চ্যানেলে আনা প্রযুক্তি পণ্যের বিক্রি বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও এলসি জটিলতায় এক বছরের ব্যবধানে প্রযুক্তি পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ। তাদের বেচাকেনাও কমেছে। ক্রেতারা বাধ্য হয়ে নিম্নমানের লাগেজ পার্টির পণ্য কিনছেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি পণ্যের উচ্চমূল্য বড় বাধা বলে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।
ক্রেতারা বলছেন, গত দুই বছরে প্রযুক্তি পণ্যের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। মোটামুটি ভালো কনফিগারেশনের ল্যাপটপ মিলছে না ৫০ হাজার টাকার নিচে। অন্যদিকে পিসি বিল্ড বা পূর্ণাঙ্গ পিসি পেতে খরচ করতে হচ্ছে ৩০ হাজার টাকার বেশি। আবার প্রযুক্তি পণ্য সারাতেও খরচ বাড়ছে। যুদ্ধের প্রভাব স্বীকার করে তারা বলছেন, সরকারকে এখাতে ভর্তুকি দিতে হবে। কিংবা দেশীয় ইলেকট্রনিক প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্যের মান ভালো করতে এগিয়ে আসতে হবে।
বিসিএস কম্পিউটার সিটিতে বন্ধুদের সঙ্গে গেমিং পিসি কিনতে আসা কলেজপড়ুয়া আল রকিব বলেন, অন্য দেশে ল্যাপটপ ও পিসির দাম কম। সেখানে ভ্যাট, ট্যাক্সও কম। বাংলাদেশের গ্রে মার্কেটে (নন চ্যানেল) আবার দাম কম। কিন্তু সেখানে পণ্য নিম্নমানের। রিফারবিশড, সার্ভিসিং ভালো নয়। আগে যেখানে ৮০ হাজার টাকায় একটা গেমিং ল্যাপটপ কেনা যেতো সেটা এখন ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ওপরে। আমাদের এখানে দাম অনেক বেশি। এ জন্য অনেকেই এখন বিদেশ থেকে ল্যাপটপ আনছেন। দামও কম পড়ে।
বাজারে ইনটেল ও এমডি প্রসেসরের সংকট আছে। ল্যাপটপ, মনিটর, মাদার বোর্ডসহ অন্য অ্যাকসেসরিজের সংকট আছে। তবে সেটা সাময়িক। কিন্তু দাম দিন দিন বাড়ছে। এবং এটা আরও বাড়বে। প্রযুক্তি পণ্যের বাজার সম্পর্কে জানতে চাইলে এমনটাই জানান বিসিএস কম্পিউটার সিটির ফাসট্র্যাক সলিউশনের বিজনেস কো-অর্ডিনেটর মুনিম রহমান।
মুনিম বলেন, প্রযুক্তি পণ্যের দাম বাড়ছে এটা নতুন কোনো কথা নয়। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে। কিন্তু এখানে ভ্যাট, ট্যাক্স দিয়ে সেটা মূল্য আকাশচুম্বি হয়ে গেছে। বাজারে নতুন নতুন পণ্য আসছে। গতকাল যে পণ্য বাজারে ছিল আজ তার বদলে অন্য পণ্য এসেছে। কম দামেরও কিছু নতুন পণ্য আসে। কিন্তু যেহেতু এলসি করতে এখন অনেক ঝামেলা, ডলার সংকট আমরা এখন নতুন পণ্য কম আনতে পারছি।
পিডিএস/এমএইউ