মধ্যরাতে ইশার নামাজ আদায়ের ইসলামি বিধান
ইসলামি শরিয়তের কোনো বিধান ঘড়ির সময়ের আলোকে হয় না। কিছু বিধান সূর্যের হিসেবে আর কিছু বিধান চাঁদের হিসেবে আরোপিত হয়। নামাজের সময় হিসাব করা হয় সূর্যের হিসেবে। ফজর সোবহে সাদিক থেকে সূর্য উঠার আগে, জোহর সূর্য মাথার ওপর থেকে পশ্চিমাকাশে হেলে গেলে, জোহরের সময় শেষ হলে সূর্য ডোবার আগ পর্যন্ত আছর, সূর্য ডুবে গেলে মাগরিব। পশ্চিম আকাশের লাল আভা দূর হওয়ার পর আকাশ প্রান্তে যে সাদা আভা চোখে পড়ে তা বিলুপ্ত হওয়ার পর ইশার নামাজের সময় শুরু হয়।
সুবহে সাদিকের পূর্ব পর্যন্ত ইশার সময় বিদ্যমান থাকে। তবে মধ্যরাতের আগেই এই নামাজ আদায় করা উত্তম। কিছু মানুষের ধারণা, এশার নামাজের মাকরুহ ওয়াক্ত শুরু হয় রাত ১২টার পর থেকে। এ ধারণাটি সঠিক নয়। কারণ, এশার নামাজের মাকরুহ ওয়াক্ত শুরু হয় মধ্যরাতের পর থেকে। আর মধ্যরাত শুরু হয় সূর্যাস্ত ও সুবহে সাদিকের মাঝামাঝি সময় থেকে। আমাদের দেশে মওসুমভেদে মধ্যরাত শুরু হয় কখনো এগারটা থেকে কখনো সাড়ে এগারটা থেকে বা তার কিছু মিনিট আগে পরে।
যেমন, কোনো মওসুমে যদি সূর্যাস্তের সময় হয় ৫টা ১৪ মিনিটে এবং পরের দিন সুবহে সাদিকের সময় হয় ৪টা ৪৯ মিনিটে, তাহলে তখন মধ্যরাত শুরু হবে ১১টা ০২ মিনিট থেকে। তেমনি কোনো মওসুমে যদি সূর্যাস্তের সময় হয় ৬টা ০২ মিনিটে এবং সুবহে সাদিকের সময় হয় ৫টা ০৫ মিনিটে, তাহলে মধ্যরাত শুরু হবে ১১টা ৩৪ মিনিট থেকে। সুতরাং রাত ১২টা থেকে মধ্যরাত শুরু হয়- এ ধারণা ঠিক নয়। বরং কোনো মৌসুমে ১১টা বা তার পর থেকে শুরু হয় আবার কোনো মৌসুমে সাড়ে ১১টা বা তার কিছু মিনিট আগে পরে।
সুতরাং রাত ১২টার পর নামাজ পড়া যাবে না—এমন কথা বলা যাবে না। কারও অধিক ব্যস্ততা থাকলে রাত ১২টার পরে পড়তে পারেন। ইচ্ছাকৃত বিলম্ব যেন না হয়, সে ব্যাপারে সচেষ্ট থাকা উত্তম।
পুরুষকে জামাতে নামাজ আদায় করতে হবে, আর ঘুমিয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকলে নারীরা আগেই নামাজ আদায় করে নিবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ইসলামের সকল দিক-নির্দেশনা জানার ও মানার তাওফিক দান করুন।
পিডিএস/এমএইউ