নিজস্ব প্রতিবেদক
শেখ হাসিনার ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের আর কোনো সুযোগ নেই: রিজভী
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের আর কোনো সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে জুলাই বিপ্লবে চোখ হারানো ক্ষতিগ্রস্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্পের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনার এদেশে ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের আর কোনো সুযোগ নেই। তিনি ক্ষমতাকে ধরে রাখতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব জিম্মি করে দিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী দেশের কাছে। এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুন।
- এখন জনগণের একটাই দাবি, শেখ হাসিনা ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যত চুক্তি করেছেন সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার প্রকাশ করুন।
- শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন অসৎ উদ্দেশ্যে।
- জনগণের কল্যাণে কোনো চুক্তি করেননি। তা না হলে, আদানি কেন হুমকি দেবে?
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার কোনো দেশপ্রেম ছিল না। তার ছিল ভারত প্রেম। ওই একটাই প্রেম ছিল তার। তার প্রেম কার সঙ্গে ছিল, এটা জনগণ জানতো এবং বুঝতো।
বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, শহীদ নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগ নাকি ঢাকা শহর উথাল-পাতাল করে দেবে। ওদের মতো আমরা মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়ে পাহারাও দিইনি। কিন্তু ওদের সেদিন কোথাও দেখা যায়নি। কোথায় যুবলীগ? কোথায় ছাত্রলীগ? অথচ একসময় বিএনপি বের হলেই ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হতো। এটাই ছিল শেখ হাসিনার নীতি। তার পরিণামও হয়েছে ভয়াবহ। সঙ্গী, সাথী ফেলে স্বার্থপরের মতো পালিয়ে গেছেন শেখ হাসিনা।
আদানির সঙ্গে হওয়া বিদ্যুৎ চুক্তিটি অসম ও অন্যায় চুক্তি দাবি করে তিনি বলেন, আদানির কাছ থেকে কেনা এক ইউনিট বিদ্যুতের দাম ১২ টাকা, পৃথিবীর আর কোথাও এত দামে বিদ্যুৎ কেনা হয় না। শেখ হাসিনা আদানির সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন অসৎ উদ্দেশ্যে। জনগণের কল্যাণে কোনো চুক্তি করেননি। তা না হলে, আদানি কেন হুমকি দেবে?
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আপনাদের তো সব গণতান্ত্রিক দল, ছাত্র ও সংগঠন সমর্থন দিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো দেখতে পাই স্বাস্থ্য বিভাগে যারা দীর্ঘদিন অন্যায় করেছেন তারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। স্বাচিপ নামে একটি সংগঠন আছে, এখনো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ওই স্বাচিপের চিকিৎসকদের ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করছে। এগুলো না দেখলে অন্তর্বর্তী সরকারকেও বিপদে পড়তে হবে। ওই দানবেরা কোনো ফাঁক দিয়ে ঢুকে পড়লে তা কারও জন্য শুভ হবে না।
তিনি আরও বলেন, মার্কেটগুলো এখনো আওয়ামী সিন্ডিকেটের হাতে। বর্তমান সরকার কি তাদের একজনকেও ধরেছেন? একজনকেও গ্রেপ্তার করেছেন? অথচ শুল্ক কমানোর পরও পেঁয়াজ, আলু, চিনি, আটা ও সয়াবিন তেলের দাম কমে না। কারণ, বাজার সিন্ডিকেট যাদের হাতে তাদের কাউকে সরকার গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এ বিষয়গুলো না দেখলে ফ্যাসিস্টরা বিভিন্নভাবে মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে এবং মাঝেমধ্যেই ভুত-পেত্নীর মতো আওয়াজ দেবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মাসুদ কামাল, বিএনপির সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল, আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন ও সদস্যসচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।