নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

আগামী সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ হবে, জাতীয় পার্টি সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে: রওশন 

ছবি : সংগৃহীত

আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ। তিনি বলেছেন, 'আর সেই নির্বাচনে জাতীয় পর্টি অংশগ্রহণ করবে ইশাআল্লাহ।'

বৃহস্পিতবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের ২৪তম অধিবেশনের সমাপনি বক্তব্যে তিনি এ এ আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। জাতীয় পার্টি তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সকল জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা গণতান্ত্রিক ধারায় বিশ্বাস করি বলেই কখনই আমরা নির্বাচন বয়কট করিনি। আমরা আশা করি যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে, আর সেই নির্বাচনে জাতীয় পর্টি অংশগ্রহণ করবে।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ওএমএস চাল ও আটা এবং টিসিবি পণ্য কিনতে স্বল্প আয়ের মানুষের দীর্ঘ লাইন এখন এক সাধারণ চিত্র। এ লাইনে প্রতিনিয়ত যুক্ত হচ্ছে মধ্যবিত্তরাও। যদি আয় না বাড়ে তাহলে সাধারণ বা কম আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও কমে যাবে। তারা আরও চাপে পড়বে। এখন তাই প্রবৃদ্ধিই যথেষ্ট নয়, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি জরুরি। সামাজিক সুরক্ষামূলক কর্মসূচির ব্যাপ্তি ও প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে গোটা সমাজের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী নিশ্চিত করা সম্ভব না হলে সামাজিক অস্থিরতাও সামনে নতুন রূপে হাজির হতে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এজন্য এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানান তিনি।

স্যালাইন সংকট ও জনস্বাস্থ্য বিপর্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'অনেক উদ্যোগ গ্রহণের পরও আমাদের স্বাস্থ্য খাত যে নাজুক অবস্থায় রয়েছে,তা করোনা মহামারির সময় স্পষ্ট হয়েছিল। বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল। ডেঙ্গু এসে সেই নাজুকতা নির্মমভাবে প্রমাণ করছে। হাসপাতালে বর্তমানে স্যালাইন সংকটে চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্যালাইন আমদানির আশ্বাস দিলেও আশার আলো দেখা যাচ্ছে না। অথচ প্লাটিলেট কিট, শয্যা এবং স্যালাইন সংকটে রোগীর অবস্থা সংকটতর হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারকে আশু হস্তক্ষেপের আহ্বান জানান রওশন এরশাদ।

মূল্যস্ফীতিরোধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, করোনা-পরবর্তী চাহিদা বৃদ্ধি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের এখানে উচ্চ মূল্যস্ফীতি হচ্ছে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বিশ্ববাজারে বেশির ভাগ পণ্যের দাম বেড়ে আবার কমেছে এবং কমার এ প্রবণতা অব্যাহত। এর সঙ্গে অর্থনীতির ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা দেখিয়ে অনেক দেশ মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে। দেশে দীর্ঘদিন ধরে ডলার সংকট চলছে। অনিয়মের কারণে ব্যাংক খাত বারবার আলোচনায় আসছে। আইএমএফের মানদণ্ডে হিসাব করতে গিয়ে আর্থিক খাতের করুণ অবস্থা আরও প্রকটভাবে ফুটে উঠেছে। সুতরাং বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে অর্থনীতির সংকটের ব্যাখ্যা দেওয়ার আর অবকাশ নেই। দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।

রিজার্ভ সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বৈশ্বিক ও দেশীয় সংকটের কারণে গত দুবছর ধরেই রিজার্ভ নিম্নমুখী। বকেয়া ও মেয়াদ বাড়ানো বৈদেশিক ঋণ এবং আমদানির দায় পরিশোধের চাপে পড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ।এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। রেমিট্যান্স, রপ্তানি আয়, বিদেশি বিনিয়োগ ও বৈদেশিক অনুদান নিম্নমুখী। এসব কারণে রিজার্ভের ওপর আগামীতে চাপ আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। দেশে ডলার সংকটের প্রধান কারণ এবং সমাধানে কী করণীয় তা বহুল আলোচিত। ডলার সংকট কাটাতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ জরুরি। ব্যাংকগুলো এসব মানুষের কাছে সহজে সেবা পৌঁছে দিতে পারলে রেমিট্যান্স প্রবাহে গতি আসবে। বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দক্ষ কর্মী প্রেরণের ব্যবস্থা করতে হবে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রওশন এরশাদ,জাতীয় পার্টি
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close