জিয়াউদ্দিন রাজু

  ০৫ জুন, ২০২৩

মার্কিন ভিসানীতি দুরভিসন্ধিমূলক : ১৪ দল

সরকারি কাজের ‘সমন্বয়হীনতা’ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ১৪ দলীয় জোটের একাধিক নেতা। একই সঙ্গে কয়েকজন মন্ত্রীর অতিকথন নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতিকে দুরভিসন্ধিমূলক বলা হয়েছে ১৪ দলের বৈঠকে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট মনে করে এ ভিসানীতি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। একটি স্বাধীন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ।

রবিবার (৪ জুন) সকালে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমুর ইস্কাটনের বাসভবনে ১৪ দলের বৈঠকে এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতারা।

আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে জোটের বৈঠকে আরো অংশ নেন- বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টির (একাংশ) জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মৃনাল কান্তি দাস, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম খান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন, গণ আজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এস কে সিকদার, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান, গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন, ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ফারুক, জাতীয় পার্টি জেপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এনামুল হক রুবেল, জাসদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাদের চৌধুরী।

১৪ দলের বৈঠকে ভিসানীতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নির্বাচনকে ঘিরে মার্কিন ভিসানীতি ঘোষণা এটা তাদের একটি এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ হয়েছে। এটা তাদের দুরভিসন্ধিমূলক সুদূরপ্রসারী পদক্ষেপের অংশ। এটা তারা করতে পারে না। এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীসহ ১৪ দলের অনেকেই কথা বলেছেন।

বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানিয়েছে, শরিক দলের কয়েকজন নেতা বর্তমান সরকারের কয়েকজন মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেছেন, মন্ত্রীদের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে কথা বলা উচিত। বৈঠক সূত্র আরো জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে জনসম্পৃতার জন্য কাজ করতে শিগগির মাঠে নামবে আওয়ামী লীগ। এ জন্যই এ বৈঠক ডাকা হয়েছে। যা নিয়ে জোটের সবাই সম্মতি প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এ সময় ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান মেনন নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সামনেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ সময় মানুষের সঙ্গে সরকারের সম্পর্ক ভালো রাখতে হবে, কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ ক্ষিপ্ত হতে পারে।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে অন্য কোনো হস্তক্ষেপ আমরা কামনা করি না।’ আপনারা ভিসানীতির সমালোচনা করছেন কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগকে টার্গেট করে এটা করা হয়নি, এমন এক প্রশ্নে আমু বলেন, ‘আমরা মার্কিন ভিসানীতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত মনে করি।

আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আমরা যেহেতু পড়াশোনার দিকে গুরুত্ব দিচ্ছি, প্রধানমন্ত্রী নবম শ্রেণি পর্যন্ত বিনাপয়সায় বই বিতরণ করছেন। সবকিছু ঠিক আছে। সেই ক্ষেত্রে কলম ও কাগজের দাম বৃদ্ধি পড়াশোনার ক্ষেত্রে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। সংবাদপত্রের ওপর ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে। তাই আমরা মনে করি কাগজ-কলমের দাম কমানো উচিত। আরোপিত কর প্রত্যাহার করা উচিত।’

বিদ্যুৎ সমস্যা পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার জন্য ১৪ দলীয় জোট সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সব রকম চেষ্টা করছেন।

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মার্কিন ভিসানীতি,১৪ দল
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close