জিয়াউদ্দিন রাজু

  ০৮ ডিসেম্বর, ২০২২

রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় আ.লীগের সরব উপস্থিতি

ঢাকার প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান

বছরখানেক বাকি থাকলেও জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে দেশের রাজনীতির ময়দান। ১০ ডিসেম্বর (শনিবার) ঢাকায় বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে রাজনৈতিক দল বিএনপি। তারা সরকার পতনের রূপরেখা ঘোষণা করতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা। এদিকে বিএনপির এই সমাবেশ ও রাজনৈতিক তৎপড়তায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগও বসে নেই। রাজপথে কোনো ধরনের ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগ। বিএনপি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করলে তারা সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত।

বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে সরাসরি বিরোধিতায় না জড়ালেও সংগঠিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। রাজধানী ঢাকায় পড়ায়-মহল্লায় তারা অবস্থান নিচ্ছেন। সাংগঠনিক শক্তি দিয়ে সম্ভাব্য অরাজক পরিস্থিতি মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়েছেন।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, গত বছর ১০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা সংস্থার ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। চলতি বছর একই দিনে অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপি বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছে। এটি বিএনপির পূর্বপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ। গত বছর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পেছনে লবিং ও অর্থের জোগানদাতা হিসেবে বিএনপিকেই দায়ী করছেন তারা। তার পরও বিএনপির ষড়যন্ত্র রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে তারা প্রস্তুত। তাই বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশে তারা বাধা সৃষ্টি করবে না বা পাল্টা সমাবেশ ডেকে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে না। বিএনপির সমাবেশ থেকে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে সেই লক্ষ্য নিয়ে সতর্ক অবস্থান করবেন আওয়ামী লীগের রাজধানীর থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। এজন্য গুচ্ছপরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।

গত মঙ্গলবার ছাত্রলীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নির্দেশ দিন বুধবার (৭ ডিসেম্বর) থেকেই পাহারা বসানোর। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীর হাত থেকে মানুষকে বাঁচাতে হবে। জানমাল নিরাপদ রাখতে হবে। এরা জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষক, সাম্প্রদায়িকতার পৃষ্ঠপোষক। প্রস্তুত হয়ে যান। বুধবার থেকে পাড়া-মহল্লা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা সব জায়গায় সতর্ক পাহারা বসাতে হবে।

ফলে বুধবার সকাল থেকেই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশপথে মহড়া শুরু করেছেন। গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের। এর মধ্যে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনেক নেতাকর্মীকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। মিছিল করতে দেখা গেছে ভূতের গলি, হাতিরপুল, ধানমন্ডি ও পল্টন এলাকায়। ঢাকা উত্তরে বিভিন্ন এলাকার যুবলীগ নেতাকর্মীরা শোডউন করেছেন। পিকআপে চড়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে এলাকায় ঘুরছেন নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগের মিছিল ও স্লোগানে রাজধানীর অনেক স্থানই সরগরম।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করতে পারে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। তারা বিএনপির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করবে। ১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে প্রস্তুতি এবং করণীয় বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের নেতারা।

মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, টঙ্গী, আশুলিয়া ও গাবতলী দিয়ে যাতে বিএনপির সমাবেশে লোকজন না আসতে পারে, এজন্য এসব এলাকায় নিজেদের কার্যালয়ের সামনে, মোড়ে মোড়ে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান করবেন।

এ ছাড়া ঢাকার সাভারে রেডিও কলোনি মাঠে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগ। সেখানে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেবেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন যদি এখানে আক্রমণ করা হয়, যদি উসকানি দেওয়া হয়, আমাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া হয় তাহলে আমরা কি চুপ করে বসে থাকব? আশা করছি, বিরোধী দল শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করবে। দলীয়ভাবে আমরা তাদের সঙ্গে কখনো সংঘাত সৃষ্টি করিনি। এখন আমরা সংঘাত চাই না।’

পিডিএস/মীর

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
রাজধানী,আওয়ামী লীগ,রাজনীতি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close