জিয়াউদ্দিন রাজু

  ১১ মে, ২০২২

কঠিন নিয়ম মেনেই মনোনয়ন

আগের দুটি নির্বাচনে জনসম্পৃক্ততা না থাকলেও দলীয় বদান্যতায় অনেকেই ‘হঠাৎ এমপি’ হয়েছেন। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা বা রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও আমলে নেওয়া হয়নি। এতে দলে নানা প্রশ্ন উঠেছে, কোন্দল দেখা দিয়েছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে। কিন্তু সেই ধারা থেকে সরে আসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এবার কোনো নেতাকেই ‘পাস’ করিয়ে আনার দায়িত্ব দল নেবে না। মাঠ জরিপের মাধ্যমে খুব হিসাব-নিকাশ করেই জয়ী হওয়ার মতো প্রার্থী বেছে নেওয়া হবে। এরই মধ্যে কয়েকটি জরিপের মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। গত শনিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠকে তিনি সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন।

ওই বৈঠক সূত্র জানায়, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে যারা অধিক জনপ্রিয় বা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়ে আসতে পারবেন তাদেরই বেছে নেবে দল। সে লক্ষ্যে এখনই খোঁজখবর নিচ্ছে হাইকমান্ড। এতে বর্তমান এমপিরা বাদ পড়লে বিকল্প প্রার্থীও খুঁজবে দল। এমনই নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈঠকে উপস্থিত একজন সম্পাদক এই প্রতিবেদককে বলেন, আওয়ামী লীগ এবার সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়। এমন নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন দলীয় প্রধান। নেত্রী বলেছেন, বিএনপিসহ সব দল নির্বাচনে আসুক। নির্বাচনে ভোটের লড়াই হোক। দল কারো নির্বাচনে জয়ের দায়িত্ব নেবে না। জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে।

ওই সম্পাদক আরো বলেন, এক্ষেত্রে শুধু দলের নেতাদের জরিপ চলছে তা নয়, বিরোধী দলের যে সব প্রার্থী নির্বাচনী লড়াইয়ে থাকবে তাদের বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের প্রার্থী দেখে দল প্রার্থী দেবে।

বৈঠকে উপস্থিত দুজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জানান, প্রধানমন্ত্রী সভায় মন্তব্য করেন, গত নির্বাচন নিয়ে এখনো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তাকে জবাব দিতে হয়। আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক ও কঠিন হবে। তাই দল গোছাতে হবে। সর্বস্তরে সম্মেলন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। দলীয় সম্মেলন যথাসময়েই হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ অথবা জাতীয় নির্বাচনের মনোনয়ন বোর্ডে প্রার্থীর যোগ্যতা, সক্ষমতা, জনপ্রিয়তা দেখা হয়। এবারও মহামারি করোনাকালীন সময়ে যারা জনগণের কাছে যেতে পারেনি, তাদের অধিকাংশই এবার বাদ পড়ে যাবেন। সেখানে নতুন যোগ্য নেতৃত্ব আনা হবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, এবারে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠিন পরীক্ষা দিয়ে আসতে হবে। নেত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কঠোর। আমাদের মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রার্থীর যোগ্যতা, দলের প্রতি আনুগত্য এবং জনসম্পৃক্ততা দেখা হয়। এছাড়াও প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বা কোনো মামলা রয়েছে কি না তাও ক্ষতিয়ে দেখা হয়। পরিবার নয়, সমাজে তার কতটুকু জনপ্রিয়তা রয়েছে তা দেখা হয়। দলের অভ্যন্তরীণ খুঁটিনাটি বিষয়গুলো মীমাংসা করে নেতাকর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার লক্ষ্যে সারা দেশে আমাদের কাজ শুরু হয়েছে।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
মনোনয়ন,নির্বাচন,আওয়ামী লীগ,রাজনীতি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close