জিয়াউদ্দিন রাজু

  ০৩ এপ্রিল, ২০২১

ইউপি নির্বাচন

আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই করবে ৮ টিম

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকায় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যক্তির প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় তাদের পছন্দসই লোকজন বারবার মনোনয়ন পাচ্ছেন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনে। এতে ক্ষোভ ও দ্বন্দ্ব বাড়ছে দলের তৃণমূলপর্যায়ে। এসব ক্ষোভ ও দ্বন্দ্ব নিরসন করার লক্ষ্যে দলের কেন্দ্রীয় নির্দেশনাও হচ্ছে উপেক্ষিত অনেক ক্ষেত্রে। তাই আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিতর্ক এড়াতে প্রার্থীদের তালিকা যাচাই-বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিভাগীয় আট টিমকে। এসব টিম কাজ শুরু করবে কয়েক দিনের মধ্যেই। আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘এখন একটি রীতি চালু হয়ে গেছে, এমপি অথবা উপজেলা চেয়ারম্যান কিংবা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক তার আত্মীয়স্বজনকে ইউপি চেয়ারম্যান বানাতে চান। অনেকের পরিস্থিতি এমন যে, বাড়ির কাজের লোকটিকেও চেয়ারম্যান বানাতে পারলে, তাই করছেন। গণতন্ত্রের জন্য এটি একটি অশনিসংকেত। তবে ইউপি চেয়ারম্যানের জন্য সৎ, যোগ্য ও দক্ষ নেতাদের মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ।’

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার পর অনেক প্রার্থীকে নিয়ে কেন্দ্রে অভিযোগ আসে। অনেকের বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা ধরনের অভিযোগ শোনা যায়। এ ছাড়া কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন কি না, অতীতে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন কি না এসব বিতর্ক এড়ানোর জন্য ও প্রার্থীদের বিষয়ে ভালোভাবে খোঁজখবর নেওয়ার জন্য এখন থেকে বিভাগীয় টিমগুলোকে দায়িত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

কিছু জায়গায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতির অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ। তিনি প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, “আমরা এমন অভিযোগ পাচ্ছি। তবে তার সংখ্যা খুব বেশি নয়। মাঝেমধ্যে দেখা যায়, আমাদের সাবেক কিছু ছাত্রনেতা নিজের এলাকার বাইরে কলেজে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করেছেন, পরে নিজের এলাকায় গিয়ে ইউপি নির্বাচন করতে চান। এখন তাদের তো আর বহিরাগত বলা যাবে না। তবে কিছু কিছু জায়গায় ব্যক্তিকেন্দ্রিক রাজনীতি চলে। তারা নির্বাচনের সময়ে ‘মাইম্যান’কে প্রায়োরিটি দেন। তবে আমরা মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে দলীয় যোগ্য প্রার্থীকে মনোনয়ন দেব।”

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রার্থীদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় টিমের যাচাই-বাছাই শেষে তালিকা যাবে মনোনয়ন বোর্ডের কাছে। বোর্ড যাকে যোগ্য মনে করবে, তার হাতেই যাবে নৌকার প্রতীক। স্থানীয় কোনো এমপি বা দলীয় নেতা নৌকার প্রার্থীকে সমর্থন না করলে সেখানেও সমন্বয় করবে বিভাগীয় ওই টিম। অর্থাৎ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনো নেতা নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড় করালে, সেখানে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে বিভাগীয় টিম। টিমের তদারকির দায়িত্বে থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্যরা। গত ১৫ মার্চ গণভবনে স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের মুলতবি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের এ ধরনের ইস্যু নিয়ে কথা হয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী হতে ইচ্ছুকদের সঙ্গে।

পিডিএসও/ জিজাক

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
ইউপি নির্বাচন,প্রার্থী,নির্বাচন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close