অভিযুক্ত বিচারকদের ব্যবস্থা উচ্চ আদালতই নেবে, বললেন আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বললেন, অভিযুক্ত বিচারকদের বিষয়ে এখন থেকে উচ্চ আদালত ব্যবস্থা নেবে।
ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
আইন উপদেষ্টা বলেন, হাইকোর্টে কিছু বিচারকের নামে অভিযোগ রয়েছে। তারা জুলাই বিপ্লবের নিপিড়ক ছিল। সেই সঙ্গে অনেকে দুর্নীতিগ্রস্ত। তাদের অপসারণের বিষয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল অভিযোগ পেলেই অপসারণ উদ্যোগ নিতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় বহাল থাকার মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার ফোরাম পুনরুজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে, এটা ইতিবাচক।
এর আগে, এদিন সকালে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন নিষ্পত্তি করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে এখন থেকে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে।
বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী আনা হয়। তবে এর বৈধতা নিয়ে রিট করলে ২০১৬ সালের ৫ মে হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। পরে ওই বছরের ৩ জুলাই আপিলটি খারিজ করে রায় দেন আপিল বিভাগ।
এরপর ২০১৭ সালের ১ আগস্ট আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। পরে ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর রায় রিভিউ চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওই রিভিউ পিটিশন গত আট বছরেও শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কিন্তু অন্তর্বতী সরকার আসার পর গত ১৫ আগস্ট প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ আবেদন শুনানির জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালে মূল সংবিধানে বিচারপতি অপসারণ সংক্রান্ত ক্ষমতা জাতীয় সংসদের হাতে ছিল। ৭৫ সালে এই ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সরিয়ে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতির কাছে। এরপর ১৯৭৭ সালে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপরাসণের ক্ষমতা দেওয়া হয় জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে। কিন্তু ২০১৪ সালে আওয়ামী সরকার ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আবারও সংসদের হাতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।