চাকরিচ্যুত বিডিআর সদসদের পুনর্বহালের দাবি
পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে চাকরিচ্যুত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছেন ৬৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর ঐক্য-২০০৯।
শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে।
এ সময় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পূর্বপরিকল্পনার সঙ্গে জড়িতদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং বিস্ফোরক আইনের মামলায় যারা ১৫ বছর ধরে জেলখানায় আটক আছেন, দ্রুত তাদের জামিনের ব্যবস্থা করার দাবিও জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য সাঈদ আহমেদ খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, যারা হত্যাকাণ্ড ও পূর্বপরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত, সবাইকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। অন্য সব নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের সরকারি সব ধরনের সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক। বিস্ফোরক আইনের মামলায় যারা ১৫ বছর ধরে জেলখানায় আটক আছে অতি দ্রুত পিপি নিয়োগ করে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করা হোক।
তিনি আরও বলেন, অল্প কিছুদিন আগে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নতুন সরকারকে আরও কিছুদিন সময় দেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি। ইতোমধ্যেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনর্তদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বাইরে কোনও ঘটনা না ঘটলেও ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাইরের বিভিন্ন ইউনিটে গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয় যে সেনাবাহিনী কর্তৃক বিডিআরের ইউনিটগুলো আক্রমণ করা হবে। এতে ২৬ ফেব্রুয়ারির বাইরের ইউনিটের বিডিআর সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। পরে তাদের গণহারে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রমাণ করতে না পারায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে বিডিআর বিদ্রোহ আখ্যা দিয়ে বিশেষ আদালত ১ থেকে ১৮-এর মাধ্যমে গণহারে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করা হয়। এভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি ঐতিহ্যবাহী ও সুশৃঙ্খল বাহিনীকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
আমরা আশা করি বর্তমান সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সব ধরনের অপরাধী ও চক্রান্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করবে। জেলখানায় আটক নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের জেলমুক্তিসহ সব ধরনের সদস্যদের সরকারি সব সুযোগ-সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করবেন।
সাঈদ আহমেদ খান আরও বলেন, আমরা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে দেখছি যে গত ৯ আগস্ট তথাকথিত বিডিআর কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে একটি সংগঠন মানববন্ধনের আয়োজন করে। তারা সাংবাদিকদের সামনে চাকরিচ্যুত ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে নির্দোষ দাবি করে ও অসংলগ্ন বক্তব্য দেয়। স্মারকলিপির মাধ্যমে কারাবন্দীদের ব্যাপারে সরকারকে ৩০ দিনের আলটিমেটাম দেয়। কিন্তু আমরা তাদের এসব দাবিকে নৈতিকভাবে সমর্থন করি না।