reporterঅনলাইন ডেস্ক
  ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গুমের ভয়াবহতার বর্ণনা দিলেন আমান আযমী

ছবি : সংগৃহীত

আয়নাঘরে আট বছর গুম থাকার ভায়নক বর্ণনা দিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী। তিনি জানান, ক্রসফায়ার আতঙ্কে সর্বদা কেটেছে। তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে তার লাশ যেন কুকুরের খাদ্যে পরিণত না হয় সেই দোয়া করতাম।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আমান আযমী বলেন, বারবার মনে হতো তারা আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করবে। আমি রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে আল্লাহর কাছে শুধু কান্না করে বলতাম- আল্লাহ আমার লাশটা যেন কুকুরের খাদ্যে পরিণত না হয়। আমার লাশটা যেন আমার পরিবারের কাছে যায়।

আটক হওয়া প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, তারা যখন আমার বাসায় এসেছিল তখন তাদের কাছে আমি পরিচয় জানতে চাই। তাদের পরিচয়পত্র দেখাতে বলি। তারা আমার কথার জবাব দেননি। আমি বেশ কিছু প্রশ্ন করেছি, তারা কোনো কথার জবাব দেননি। এক অফিসার আমাকে তুই করে সম্বোধন করে। আমার সঙ্গে খুবই খারাপ ব্যবহার করে। এক পর্যায়ে আমাকে গ্রেফতার করে গাড়িতে নিয়ে চোখ বেঁধে দেয়। সে সময় আমাকে ও সেনাবাহিনীকে নিয়ে খুবই খারাপ কথা বলে।

তিনি বলেন, তারা প্রথমে আমার চোখ-মুখ বাঁধা অবস্থায় একটা জায়গায় নিয়ে গেলো। তারা আমাকে পোশাক দিলো। রাতে আমাকে খাবার দেয়, কিন্তু খাওয়ার মতো অবস্থায় ছিলাম না। টয়লেট যেতে চাইলে তারা আমার চোখ-হাত বেঁধে নিয়ে যেতো। প্রায় ৫০ কদম হাঁটার পর টয়লেটে যেতাম।

পরিবারের ওপর নির্যাতনের কাথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আমি ফিরে এসে জানতে পারলাম আমার পরিবারের ওপর তারা নির্যাতন চালিয়েছে। আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলতে চেয়েছিল তারা। এক পর্যায়ে আমার স্ত্রীকে তুলে নিতে চাইলে, মাকে সঙ্গে নিতে বলে, তখন তারা তাকে নেয়নি। এ সময় আমার বাড়ির যুবতী কাজের মেয়ের ওপর হাত চালিয়েছে। বাসার ম্যানেজার ও দারোয়ানসহ সবাই হামলার শিকার হয়েছে।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয় সংগীত নিয়েও কথা বলেন গুমের শিকার সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান কোনো রকম জরিপ ছাড়াই মুক্তিযুদ্ধের শহীদের সংখ্যা প্রকাশ করেন। একটা যুদ্ধে কত মানুষ মারা গেলেন তার কোনো সঠিক সংখ্যা জাতি এখনও জানে না। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত যেন নতুন করে লেখা হয়। বর্তমানে যে জাতীয় সংগীত চলছে তা করেছিল ভারত। দুই বাংলাকে একত্রিত করার জন্য করা হয়েছিল এই জাতীয় সংগীত। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে তাই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত নতুনভাবে হওয়া উচিত।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আমান আযমী,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল,জাতীয় সংগীত
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close