নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২১ মার্চ, ২০২৩

অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তারা

কার্যকর তামাক কর ব্যবস্থার জন্য ‘তামাক করনীতি’ প্রণয়ন জরুরি

ছবি : প্রতিদিনের সংবাদ

বাংলাদেশে সুনির্দিষ্ট তামাক কর নীতি নেই। এর সুযোগ নিয়ে তামাক কোম্পানিগুলো নানাভাবে কর ফাঁকি দিচ্ছে। এতে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে, অন্যদিকে ত্রুটিপূর্ণ কর ব্যবস্থার কারণে তামাকের ব্যবহার যথেষ্ট কমিয়ে আনা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকাল ১১টায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপ এবং প্যাকেটে মুদ্রিত মূল্যে তামাকজাত দ্রব্যের খুচরা বিক্রয় নিশ্চিত করার দাবিতে’ অবস্থান কর্মসূচি থেকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা), বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট সম্মিলিতভাবে এ অবস্থান কর্মসূচির আয়োজন করে।

কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, তামাক কোম্পানির কারসাজিতে সারাদেশে প্যাকেটে লেখা দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে সিগারেট বিক্রি হচ্ছে। এই অতিরিক্ত দামের ওপর রাজস্ব না পাওয়ায় সরকার প্রতিদিন প্রায় ২০ কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষা ও সরকারের রাজস্ব ফাঁকি বন্ধে যে দামে সিগারেট বিক্রি হচ্ছে সেই দামটি প্যাকেটের গায়ে লিখতে তামাক কোম্পানিকে বাধ্য করতে হবে। এটি নিশ্চিত হলে সিগারেট খাত থেকে সরকার বছরে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আয় করতে পারবে।

বক্তারা আরও বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর লক্ষ্য পূরণে সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তার পাশাপাশি তামাক দ্রব্যের উপর কার্যকর ও সুনির্দিষ্ট করারোপের মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য জনসাধারণের ক্রয়সক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে করারোপ করা হয়। এতে একই সঙ্গে সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ে এবং তামাক কোম্পানির অযাচিত লাভ এবং কর ফাঁকি নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

তারা বলেন, বর্তমান কর ব্যবস্থার বিভিন্ন ত্রুটিপূর্ণ দিক বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান জটিল তামাক কর পদ্ধতি সংস্কার করতে হবে। সকল মূল্যস্তরের সিগারেটের ক্ষেত্রে অভিন্ন সম্পূরক শুল্ক ৬৫% করতে হবে। পাশাপাশি সবধরনের তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট তামাক কর আরোপ করতে হবে। এতে একদিকে সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি জনস্বাস্থ্যের পরিস্থিতিও উন্নতি হবে এবং এসব বিষয়কে নিয়মিত ব্যবস্থার মধ্যে আনতে দেশে অতি দ্রুত একটি শক্তিশালী তামাক কর নীতি প্রণয়ন করতে হবে।

তারা আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি তামাকমুক্ত দেশ গড়তে বিদ্যমান তামাক কর ব্যবস্থার সংস্কার করে একটি শক্তিশালি তামাক কর নীতি প্রণয়নে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন। সরকারের দায়িত্বশীলদের এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রত্যশা মাদক বিরোধী সংগঠনের জেনারেল সেক্রেটারি হেলাল আহমেদ এর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন স্কোপ-এর নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন, বিএনটিটিপি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, প্রকল্প কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, ডাস্ এর প্রকল্প কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা নাজমুন নাহার প্রমূখ। অবস্থান কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য।

এছাড়া নাটাব, আর্ক ফাউন্ডেশন, ডর্পসহ বিভিন্ন তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধি কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।

পিডিএস/এমএইউ

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
তামাক,কর,শেখ হাসিনা,প্রত্যশা মাদক বিরোধী সংগঠন,অবস্থান কর্মসূচি
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close