হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের টিকা দিয়ে জরায়ুমুখের ক্যানসারের নকল টিকা বানিয়ে বিক্রি করার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)।

আটককৃতরা হলেন, সাইফুল ইসলাম শিপন, ফয়সাল আহম্মেদ, আল-আমিন, নুরুজ্জামান সাগর ও আতিকুল ইসলাম। এরা সবাই একটি চক্রের সদস্য। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার প্রধান হারুন অর রশীদ এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, নকল টিকা প্রস্তুত ও বাজারজাতকারী চক্রটির সদস্যদের আটক ছাড়াও নকল টিকা তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে হেপাটাইটিস-বি টিকা, নকল টিকা তৈরির মেশিন এবং কয়েকটি মোটরযান।

তিনি বলেন, জরায়ুমুখের ক্যানসারের টিকা হিসেবে পরিচিত সারভারিক্স তিন বছর ধরে বাংলাদেশে আমদানি নিষিদ্ধ। যে টিকাটি জরায়ুমুখ ক্যানসারের টিকা বলে বিক্রি করা হচ্ছিলো সেটি আসলে এই ক্যানসারের টিকা নয়। আটক ব্যক্তিরা প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তবে চক্রের সঙ্গে আরও কারা জড়িত তা তদন্ত শেষে বলা যাবে।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চক্রের একজন ভারত থেকে ৩৫০ টাকা করে অবৈধভাবে হেপাটাইটিস-বি টিকা বাংলাদেশে এনে নিজ বাড়িতে মজুত করতেন। পরে এই টিকা নেয়া হতো কেরানীগঞ্জের একটি কারখানায়। সেখানে হেপাটাইটিস-বি টিকার শিশি ভেঙে সেটি দিয়ে জরায়ু মুখের ক্যানসারের নকল টিকা তৈরি করা হতো।

হেপাটাইটিস-বি এর একটি টিকা থেকে ১০টি জরায়ু মুখের ক্যানসারের নকল টিকা তৈরি করা হতো। যার প্রত্যেকটি বিক্রি করা হতো ২৫০০ টাকা করে। কেরানীগঞ্জের কারখানা নকল টিকা তৈরির পর সেটি এই চক্রের বাকি চার সদস্য বাজারজাত করতো।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই চক্রটি ঢাকা ও গাজীপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রচারণার মাধ্যমে নকল টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করতো। গত দুই বছর ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ ধরণের প্রচারণা করেছে তারা। যার মাধ্যমে প্রায় ছয় হাজার মেয়ে শিক্ষার্থীকে এই নকল টিকা দিয়েছে তারা, জানান ডিবি প্রধান।

এ ছাড়া বিভিন্ন ওষুধ ব্যবসায়ীর কাছেও নকল এই সারভারিক্স টিকা বিক্রি করতো চক্রটি। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত আরো কয়েকজনের নাম জানতে পারার কথা জানিয়েছে পুলিশ। নকল টিকা বাজারজাতকরণের সঙ্গে কমপক্ষে তিনটি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।

পিডিএস/এএমকে