চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৩ ডিসেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম যাচ্ছেন রবিবার

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে আসছেন। তার জনসভার জন্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পলোগ্রাউন্ড মাঠ সাবির্কভাবে প্রস্তুত রয়েছে। চট্টগ্রামে এসেই তিনি ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে সামরিক বাহিনীর এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। সেখান থেকে দুপুরে হেলিকপ্টারে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামে যাবেন। স্টেডিয়াম থেকে গাড়িতে করে প্রধানমন্ত্রী পলোগ্রাউন্ডে জনসভায় যোগ দেবেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে সর্বশেষ জনসভায় গিয়েছিলেন ২০১২ সালের ২৮ মার্চ। সেদিন তিনি পলোগ্রাউন্ডে ১৪ দলের মহাসমাবেশে যোগ দেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে জানান, এটিই হবে চট্টগ্রামে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড অনেক বড় মাঠ, এখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জনসভা করেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাও জনসভা করেছেন। কানায় কানায় পূর্ণ জনসভা হয়েছে। অতীতেও মাঠ ছাড়িয়ে মানুষ বাইরে দাঁড়িয়েছে। আমরা যেভাবে সাড়া দেখতে পাচ্ছি, এবার কিন্তু মাঠের তুলনায় আট-দশ গুণ বেশি মানুষ মাঠের বাইরে থাকতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে পুরো চট্টগ্রাম প্রস্তুত। শুধু জনসভাস্থলেই জনসমুদ্র হবে তা নয়, পুরো চট্টগ্রাম হবে লোকে লোকারণ্য। এ জনসভার মধ্যে দিয়ে বিজয়ের মাসে চট্টগ্রাম আরো একটি ইতিহাস সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে চট্টগ্রামে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে। তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, উত্তর জেলা সভাপতি ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীসহ নেতারা এরই মধ্যে জনসভার মাঠ পরিদর্শন করেছেন, দিয়েছেন প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা।

প্রধানমন্ত্রী জনসভার আগে বেশ কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। চট্টগ্রামে যে চারটি প্রকল্পের ভিত্তির স্থাপন করা হবে সেগুলো হচ্ছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সন্দ্বীপ অংশে জেটিসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনা নির্মাণ, আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন অ্যাকাডেমির আধুনিকীকরণ, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন জাতিসংঘ সবুজ উদ্যান স্থাপন এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অধীনে চট্টগ্রামের বিপিসি ভবন নির্মাণকাজ।

যে ৩০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী তার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলায় হালদা নদী ও ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প, সন্দ্বীপ উপজেলার ৭২নং পোল্ডারের ভাঙনপ্রবণ এলাকায় সেøাপ প্রতিরক্ষা কাজের মাধ্যমে পুনর্বাসন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প এবং বাঁশখালী উপজেলার ৬৪/১এ, ৬৪/১বি এবং ৬৪/১সি পোল্ডারের সমন্বয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশের স্থায়ী পুনর্বাসন প্রকল্প (দ্বিতীয় সংশোধিত)। তার মধ্যে রয়েছে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের অধীনে সীতাকুন্ড টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ফটিকছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং রাউজান টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের উদ্বোধন। এ ছাড়া কোতোয়ালী থানাধীন দারুল উলুম আলিয়া মাদরাসার একটি ছয়তলা ভবন এবং সীতাকুন্ড টেকনিক্যাল স্কুলের একটি পাঁচতলা ভবন ও একটি চারতলা প্রশাসনিক ভবন, ওয়ার্কশপ, একতলা সার্ভিস এরিয়া ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণসহ ভবন নির্মাণের কাজও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের তালিকায় রয়েছে ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নবনির্মিত ভবনও। এগুলো হচ্ছে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে ১০ তলা অ্যাকাডেমিক ভবন, নগরীর গুল-এ-জার বেগম সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন, কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন, কুসুমকুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন, পূর্ব বাকলিয়া সিটি করপোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন, মিরসরাই উপজেলার করেরহাট কে এম উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা ভবন, পাঁচলাইশ থানাধীন বন গবেষণাগার উচ্চবিদ্যালয়ের ছয়তলা ভবন, বোয়ালমারী উপজেলাধীন হাজী মোহাম্মদ জানে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা ভবন, পটিয়া আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়ের চারতলা ভবন, সন্দীপের সন্তোষপুর উচ্চবিদ্যালয়ের চারতলা ভবন এবং ডবলমুরিং থানাধীন সরকারি সিটি কলেজে ১০তলা অ্যাকাডেমিক ভবনের নির্মাণকাজ, পলোগ্রাউন্ড বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি ভবন সম্প্রসারণ, সরকারি মুসলিম উচ্চবিদ্যালয়ের লালদিঘি মাঠের ছয় দফা মঞ্চ নির্মাণসহ সংস্কার কাজ এবং খুলশী থানাধীন সিএমপি উচ্চবিদ্যালয়ের একটি ভবনের সম্প্রসারণ কাজ।

শেখ হাসিনা এছাড়া উদ্বোধন করবেন মিরসরাইয়ের হিংগুলির ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্র এবং লোহাগাড়ার চুনতির ১০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের নির্মাণকাজ। শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিটাক চট্টগ্রাম কেন্দ্রের নারী হোস্টেল নির্মাণকাজ এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীনে নাসিরাবাদ শিক্ষানবিস প্রশিক্ষণ দপ্তর সংস্কার ও আধুনিকায়ন কাজের উদ্বোধনও করবেন তিনি।

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
শেখ হাসিনা,প্রধানমন্ত্রী
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close